ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলে গেলেন প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ড. মনিরুজ্জামান

  • আপডেট সময় : ০৩:১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ৫৬ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : চলে গেলেন প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয় ৮৪ বছর।
মঙ্গলবার বাদে এশা ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে এবং আজ বুধবার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর আদিয়াবাদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়। ১৯৪০ সালের ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রখ্যাত ধ্বনিবিজ্ঞানী মুহম্মদ আবদুল হাই-এর বড় জামাতা। জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর আকদ পড়িয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স এবং মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতাকালে তিনি বিভাগীয় সভাপতি, কলা অনুষদের ডিন ছিলেন। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নজরুল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও দেশ-বিদেশে ভাষা ও সাহিত্য সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি নজরুল ও রবীন্দ্রনাথে সমান আগ্রহী ছিলেন।
গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর আদিয়াবাদে শান্তি নিকেতন আদলে “আদিয়াবাদ ভাষা ও সাহিত্য কেন্দ্র” গড়ে তুলেন। সেখানে তার নামে বিগত কয়েক বছর থেকে “মনিমেলা” আয়োজন করে এলাকাবাসী। ২০১৬ সালে ভাষা ও সাহিত্যের জন্যে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০২২ সালে ভাষা গবেষণায় তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি গবেষণা কর্মে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিয়েছেন। কবিতা লোকসাহিত্য, গান রচনা, গল্প ও উপন্যাসও রচনা করেন। তিনি নিভৃতচারী মানুষ ছিলেন। বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর দরদ ছিল অপরিসীম। তাঁর মানবিক কর্মও গোপনে রয়ে গেছে। নবীন লেখকদের তিনি উৎসাহই দেননি, রচনা শোধনও করে দিতেন।
দেশ-নিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাঁর অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। যারা এ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি যথার্থ দেশপ্রেমিক, ভাষাপ্রেমিক ছিলেন। স্ত্রী-পুত্র, পুত্রবধূ নাতি-নাতনি আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন এ কীর্তিমান পুরুষ।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চলে গেলেন প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ড. মনিরুজ্জামান

আপডেট সময় : ০৩:১২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : চলে গেলেন প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয় ৮৪ বছর।
মঙ্গলবার বাদে এশা ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে এবং আজ বুধবার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর আদিয়াবাদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়। ১৯৪০ সালের ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রখ্যাত ধ্বনিবিজ্ঞানী মুহম্মদ আবদুল হাই-এর বড় জামাতা। জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর আকদ পড়িয়েছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স এবং মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতাকালে তিনি বিভাগীয় সভাপতি, কলা অনুষদের ডিন ছিলেন। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। নজরুল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও দেশ-বিদেশে ভাষা ও সাহিত্য সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি নজরুল ও রবীন্দ্রনাথে সমান আগ্রহী ছিলেন।
গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর আদিয়াবাদে শান্তি নিকেতন আদলে “আদিয়াবাদ ভাষা ও সাহিত্য কেন্দ্র” গড়ে তুলেন। সেখানে তার নামে বিগত কয়েক বছর থেকে “মনিমেলা” আয়োজন করে এলাকাবাসী। ২০১৬ সালে ভাষা ও সাহিত্যের জন্যে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০২২ সালে ভাষা গবেষণায় তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি গবেষণা কর্মে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিয়েছেন। কবিতা লোকসাহিত্য, গান রচনা, গল্প ও উপন্যাসও রচনা করেন। তিনি নিভৃতচারী মানুষ ছিলেন। বাংলা ভাষার প্রতি তাঁর দরদ ছিল অপরিসীম। তাঁর মানবিক কর্মও গোপনে রয়ে গেছে। নবীন লেখকদের তিনি উৎসাহই দেননি, রচনা শোধনও করে দিতেন।
দেশ-নিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাঁর অসংখ্য ছাত্রছাত্রী। যারা এ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি যথার্থ দেশপ্রেমিক, ভাষাপ্রেমিক ছিলেন। স্ত্রী-পুত্র, পুত্রবধূ নাতি-নাতনি আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন এ কীর্তিমান পুরুষ।