নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভ্যাক্সের আওতায় চলতি মাসেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার সর্বোচ্চ ৩৫ লাখ টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাপান সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ১০ থেকে ২৫ লাখের মতো এই টিকা তারা দেবে। এছাড়া কোভ্যাক্স থেকে আগের প্রতিশ্রুত ১০ লাখ টিকা আসার কথা আছে। জাপান ২৫ লাখ টিকা দিলে এবং কোভ্যাক্সের ১০ লাখসহ এ মাসের মধ্যেই ৩৫ লাখ টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরমধ্যে জাপানের টিকা সরাসরি সেদেশ থেকে আসবে। আর কোভ্যাক্সের ১০ লাখ টিকা ইউরোপের কোনও দেশ থেকে আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত মো. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল বুধবার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কোভ্যাক্স থেকে এখন আমরা নিয়মিত টিকা পাবো। প্রথম দিকে তাদের যোগানের যে সমস্যা ছিল, সেটি তারা কাটিয়ে উঠেছে।’
কোভ্যাক্সের আওতায় দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ২০ শতাংশের টিকা বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। সেই হিসাবে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টিকা পাবে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে কোভ্যাক্সের কাছ থেকে আমরা এই টিকা পেতে থাকবো।’
কস্ট শেয়ারিং : কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ২০ শতাংশ জনগণের পাশাপাশি বাকি সবাইকে টিকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা ক্রয়ের চেষ্টা করছে সরকার। ইতোমধ্যে ভারতের সেরাম ও চীনের সিনোফার্মার সঙ্গে মোট সাড়ে চার কোটি টিকা কেনার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এরইমধ্যে সেরাম তাদের প্রতিশ্রুত টিকা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মোট তিন কোটি টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত সেরাম দিয়েছে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ। অপরদিকে চীনের সিনোফার্মা এ পর্যন্ত ২০ লাখ টিকা সরবরাহ করেছে এবং বাকি টিকাও তারা সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোভ্যাক্সের কাছ থেকে বিনামূল্যে যেটি পাবো, তার থেকে আরও বেশি টিকা সুলভমূল্যে কেনার জন্য একটি প্রস্তাব নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
এর অর্থ হলো, সাড়ে ছয় কোটি টিকা বিনামূল্যে পাওয়ার পর বাংলাদেশ টিকা সংগ্রহের জন্য কোভ্যাক্সের সঙ্গে চুক্তি করলে, সেটি অনেক কম দামে হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বাজার মূল্যের থেকে কোভ্যাক্সের টিকার মূল্য অনেক কম প্রস্তাব করা হয়েছে।’ কোন কোন কোম্পানি থেকে টিকা সংগ্রহ করা হতে পারে জানতে চাইলে, রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জনসন, মডার্না, ফাইজার এবং আশা করছি, নভোভ্যাক্স সরকারের অনুমোদন পেলে সেখান থেকেও কম দামে কেনা সম্ভব হতে পারে।’
জাপান থেকে ২৫ লাখ টিকা পাওয়ার প্রত্যাশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর : কোভ্যাক্স উদ্যোগের আওতায় জাপান থেকে ২৫ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসতে পারে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা টিকা আনার জন্য সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জাপান থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে আমরা প্রত্যাশা করছি। কোভ্যাক্সের উদ্যোগের আওতায় জাপান থেকে ২৫ লাখ টিকা আসতে পারে। চীন থেকে প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে তিন মাসে দেড় কোটি সিনোফার্মের কেনা টিকা দেশে আসবে। রাশিয়া থেকে টিকার আনার বিষয়েও লাইন আপ হয়ে গেছে।’ চলতি মাসের শেষের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও আসবে ১০ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, এই তথ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘টিকার জন্য ইউরোপীয়ানদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি, সেটাও আসা শুরু হবে। কোভ্যাক্সের আন্ডারে, তারা এক মিলিয়ন (১০ লাখ) টিকা দেবে। আমাদের জেনেভার রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, ইইউ দেশগুলো থেকে আমরা এক মিলিয়ন টিকা পাবো। এটা চলতি মাসের শেষের দিকে পাওয়া যেতে পারে।’ এসময় বেসরকারি খাত করোনার টিকা আমদানি করতে আগ্রহী হলেও জননিরাপত্তার কারণে সরকার আপাতত নিজেই তা করবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
চলতি মাসেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩৫ লাখ টিকা আসতে পারে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ