ঢাকা ১১:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজ ,আয় কম হলেও উৎসাহের অভাব নেই

  • আপডেট সময় : ০৬:২০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

নেত্রকোণা সংবাদদাতা : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনার পূজা মণ্ডপগুলোতে মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজের মাধ্যমে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা। দিন-রাত পর্যন্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উৎসবকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা মন্দাভাব থাকলেও প্রতিমা তৈরিতে উৎসাহ কমেনি। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন না মৃৎশিল্পীরা। ৩০ বছর ধরে কাজ করা প্রতিমা শিল্পী সন্তোষ চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এখন পর্যন্ত আমাদের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রঙের কাজ শুরু করেছি। এ বছর প্রতিমা তৈরির যে বাজেট, তাতে প্রতিমা তৈরি করে লাভ হবে না। তবুও কাজটা করতে হয়। কারণ এটা আমাদের সনাতন ধর্মের বড় উৎসব। এই কাজটা একটা আনন্দ নিয়ে করি এবং এটা আমাদের পারিবারিক পেশা। প্রতি বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। এ বছর আমি তিনটা প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। সন্তোষ চন্দ্র পালের ছেলে ভজন চন্দ্র পাল মাস্টার্সে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তাদের পারিবারিক পেশায় বাবাকে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক পেশায় প্রতিমা তৈরিতে আমার বাবাকে সহযোগিতা করি। আমি আমার এই পারিবারিক পেশাটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তবে প্রতিমা তৈরিতে যে পরিমাণ বাজেট থাকে সেই বাজেটে সুন্দরভাবে প্রতিমা তৈরি করাটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এ জন্য পূজা উদ্যাপন কমিটির কাছে আমার আবেদন থাকবে যেন প্রতিমা তৈরির বরাদ্দ আরেকটু বাড়ানো হয়। এছাড়া পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকানগুলোতে কমেছে বেচাকেনা। দোকানিরা বলছেন সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কাস্টমার তুলনামূলক কম আসছেন। প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকান ‘সর্বমোহন বণিকের দোকানের’ রাজিব বণিক জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার বেচাকেনা কম। দেশে যে কঠিন পরিস্থিতি চলছে এবং পূজা অনেক কম হচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক বেচাকেনা কম এ বছর। পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বেশি যার কারণে সবাই যার যার বাজেট অনুযায়ী অল্প পরিমাণে জিনিসপত্র কিনছেন। নেত্রকোণা জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেশ কমেছে। জেলার ১০ উপজেলায় ৪৬৫টি পূঁজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর ৫৬০ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই হিসেবে গত বছরের থেকে এ বছর ৯৫টি পূজা কম হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ও বাজেট কমেছে। তবে নেত্রকোণা জেলা অনেক আগে থেকেই একটি সম্প্রীতির শহর। এখানে শারদীয় দূর্গাপূজার অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পূজা দেখতে বের হয় এবং পূজা মণ্ডপে সব জাতির লোকজন আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গা পূজা সম্পন্নের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, আশা করছি সুন্দর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা সবাই উদ্যাপন করতে পারবেন।

চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজ ,আয় কম হলেও উৎসাহের অভাব নেই
নেত্রকোণা সংবাদদাতা : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনার পূজা মণ্ডপগুলোতে মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজের মাধ্যমে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা। দিন-রাত পর্যন্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উৎসবকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা মন্দাভাব থাকলেও প্রতিমা তৈরিতে উৎসাহ কমেনি। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন না মৃৎশিল্পীরা। ৩০ বছর ধরে কাজ করা প্রতিমা শিল্পী সন্তোষ চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এখন পর্যন্ত আমাদের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রঙের কাজ শুরু করেছি। এ বছর প্রতিমা তৈরির যে বাজেট, তাতে প্রতিমা তৈরি করে লাভ হবে না। তবুও কাজটা করতে হয়। কারণ এটা আমাদের সনাতন ধর্মের বড় উৎসব। এই কাজটা একটা আনন্দ নিয়ে করি এবং এটা আমাদের পারিবারিক পেশা। প্রতি বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। এ বছর আমি তিনটা প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। সন্তোষ চন্দ্র পালের ছেলে ভজন চন্দ্র পাল মাস্টার্সে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তাদের পারিবারিক পেশায় বাবাকে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক পেশায় প্রতিমা তৈরিতে আমার বাবাকে সহযোগিতা করি। আমি আমার এই পারিবারিক পেশাটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তবে প্রতিমা তৈরিতে যে পরিমাণ বাজেট থাকে সেই বাজেটে সুন্দরভাবে প্রতিমা তৈরি করাটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এ জন্য পূজা উদ্যাপন কমিটির কাছে আমার আবেদন থাকবে যেন প্রতিমা তৈরির বরাদ্দ আরেকটু বাড়ানো হয়। এছাড়া পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকানগুলোতে কমেছে বেচাকেনা। দোকানিরা বলছেন সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কাস্টমার তুলনামূলক কম আসছেন। প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকান ‘সর্বমোহন বণিকের দোকানের’ রাজিব বণিক জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার বেচাকেনা কম। দেশে যে কঠিন পরিস্থিতি চলছে এবং পূজা অনেক কম হচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক বেচাকেনা কম এ বছর। পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বেশি যার কারণে সবাই যার যার বাজেট অনুযায়ী অল্প পরিমাণে জিনিসপত্র কিনছেন। নেত্রকোণা জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেশ কমেছে। জেলার ১০ উপজেলায় ৪৬৫টি পূঁজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর ৫৬০ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই হিসেবে গত বছরের থেকে এ বছর ৯৫টি পূজা কম হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ও বাজেট কমেছে। তবে নেত্রকোণা জেলা অনেক আগে থেকেই একটি সম্প্রীতির শহর। এখানে শারদীয় দূর্গাপূজার অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পূজা দেখতে বের হয় এবং পূজা মণ্ডপে সব জাতির লোকজন আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গা পূজা সম্পন্নের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, আশা করছি সুন্দর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা সবাই উদ্যাপন করতে পারবেন।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজ ,আয় কম হলেও উৎসাহের অভাব নেই

আপডেট সময় : ০৬:২০:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

নেত্রকোণা সংবাদদাতা : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনার পূজা মণ্ডপগুলোতে মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজের মাধ্যমে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা। দিন-রাত পর্যন্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উৎসবকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা মন্দাভাব থাকলেও প্রতিমা তৈরিতে উৎসাহ কমেনি। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন না মৃৎশিল্পীরা। ৩০ বছর ধরে কাজ করা প্রতিমা শিল্পী সন্তোষ চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এখন পর্যন্ত আমাদের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রঙের কাজ শুরু করেছি। এ বছর প্রতিমা তৈরির যে বাজেট, তাতে প্রতিমা তৈরি করে লাভ হবে না। তবুও কাজটা করতে হয়। কারণ এটা আমাদের সনাতন ধর্মের বড় উৎসব। এই কাজটা একটা আনন্দ নিয়ে করি এবং এটা আমাদের পারিবারিক পেশা। প্রতি বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। এ বছর আমি তিনটা প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। সন্তোষ চন্দ্র পালের ছেলে ভজন চন্দ্র পাল মাস্টার্সে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তাদের পারিবারিক পেশায় বাবাকে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক পেশায় প্রতিমা তৈরিতে আমার বাবাকে সহযোগিতা করি। আমি আমার এই পারিবারিক পেশাটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তবে প্রতিমা তৈরিতে যে পরিমাণ বাজেট থাকে সেই বাজেটে সুন্দরভাবে প্রতিমা তৈরি করাটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এ জন্য পূজা উদ্যাপন কমিটির কাছে আমার আবেদন থাকবে যেন প্রতিমা তৈরির বরাদ্দ আরেকটু বাড়ানো হয়। এছাড়া পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকানগুলোতে কমেছে বেচাকেনা। দোকানিরা বলছেন সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কাস্টমার তুলনামূলক কম আসছেন। প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকান ‘সর্বমোহন বণিকের দোকানের’ রাজিব বণিক জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার বেচাকেনা কম। দেশে যে কঠিন পরিস্থিতি চলছে এবং পূজা অনেক কম হচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক বেচাকেনা কম এ বছর। পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বেশি যার কারণে সবাই যার যার বাজেট অনুযায়ী অল্প পরিমাণে জিনিসপত্র কিনছেন। নেত্রকোণা জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেশ কমেছে। জেলার ১০ উপজেলায় ৪৬৫টি পূঁজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর ৫৬০ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই হিসেবে গত বছরের থেকে এ বছর ৯৫টি পূজা কম হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ও বাজেট কমেছে। তবে নেত্রকোণা জেলা অনেক আগে থেকেই একটি সম্প্রীতির শহর। এখানে শারদীয় দূর্গাপূজার অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পূজা দেখতে বের হয় এবং পূজা মণ্ডপে সব জাতির লোকজন আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গা পূজা সম্পন্নের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, আশা করছি সুন্দর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা সবাই উদ্যাপন করতে পারবেন।

চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজ ,আয় কম হলেও উৎসাহের অভাব নেই
নেত্রকোণা সংবাদদাতা : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পূজা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনার পূজা মণ্ডপগুলোতে মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে প্রতিমায় রংতুলির কাজের মাধ্যমে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা। দিন-রাত পর্যন্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উৎসবকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছুটা মন্দাভাব থাকলেও প্রতিমা তৈরিতে উৎসাহ কমেনি। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন না মৃৎশিল্পীরা। ৩০ বছর ধরে কাজ করা প্রতিমা শিল্পী সন্তোষ চন্দ্র পাল বলেন, প্রতিমা তৈরিতে এখন পর্যন্ত আমাদের মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রঙের কাজ শুরু করেছি। এ বছর প্রতিমা তৈরির যে বাজেট, তাতে প্রতিমা তৈরি করে লাভ হবে না। তবুও কাজটা করতে হয়। কারণ এটা আমাদের সনাতন ধর্মের বড় উৎসব। এই কাজটা একটা আনন্দ নিয়ে করি এবং এটা আমাদের পারিবারিক পেশা। প্রতি বছরই প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। এ বছর আমি তিনটা প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছি। সন্তোষ চন্দ্র পালের ছেলে ভজন চন্দ্র পাল মাস্টার্সে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তাদের পারিবারিক পেশায় বাবাকে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক পেশায় প্রতিমা তৈরিতে আমার বাবাকে সহযোগিতা করি। আমি আমার এই পারিবারিক পেশাটা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তবে প্রতিমা তৈরিতে যে পরিমাণ বাজেট থাকে সেই বাজেটে সুন্দরভাবে প্রতিমা তৈরি করাটা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। এ জন্য পূজা উদ্যাপন কমিটির কাছে আমার আবেদন থাকবে যেন প্রতিমা তৈরির বরাদ্দ আরেকটু বাড়ানো হয়। এছাড়া পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়ায় প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকানগুলোতে কমেছে বেচাকেনা। দোকানিরা বলছেন সার্বিক পরিস্থিতির কারণে কাস্টমার তুলনামূলক কম আসছেন। প্রতিমা সাজানোর উপকরণের দোকান ‘সর্বমোহন বণিকের দোকানের’ রাজিব বণিক জানান, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এবার বেচাকেনা কম। দেশে যে কঠিন পরিস্থিতি চলছে এবং পূজা অনেক কম হচ্ছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তুলনামূলক বেচাকেনা কম এ বছর। পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক বেশি যার কারণে সবাই যার যার বাজেট অনুযায়ী অল্প পরিমাণে জিনিসপত্র কিনছেন। নেত্রকোণা জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক লিটন পণ্ডিত বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেশ কমেছে। জেলার ১০ উপজেলায় ৪৬৫টি পূঁজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছর ৫৬০ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই হিসেবে গত বছরের থেকে এ বছর ৯৫টি পূজা কম হচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে এ বছর পূজা মণ্ডপের সংখ্যা ও বাজেট কমেছে। তবে নেত্রকোণা জেলা অনেক আগে থেকেই একটি সম্প্রীতির শহর। এখানে শারদীয় দূর্গাপূজার অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে হিন্দু-মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পূজা দেখতে বের হয় এবং পূজা মণ্ডপে সব জাতির লোকজন আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গা পূজা সম্পন্নের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে নেত্রকোণা জেলার পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, আশা করছি সুন্দর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা সবাই উদ্যাপন করতে পারবেন।