ঢাকা ১১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

চবিতে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় আরও ৪ জন বহিষ্কার

  • আপডেট সময় : ০১:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২১ সালে দুই ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চার শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্য দফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বহিষ্কৃতরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জান্নাতুল ইসলাম রুবেল, দর্শন বিভগের মো. ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান রাজু এবং আরবি বিভাগের জুনায়েদ আহমেদ। চারজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, যৌন নিপীড়ন সেলে থাকা তিনটি অভিযোগের সুরাহা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীর অভিযোগে অভিযুক্তদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। অভিযোগটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগীর ভুল তথ্যে দেরি হয় তদন্তে
এদিকে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সেই ছাত্রী প্রথমে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ। এতে দোষীদের শনাক্ত করতে দেরি হয় তদন্ত কমিটির। সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া। ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ভুক্তভোগীর তথ্য অনুযায়ী তদন্ত করতে গিয়ে আমরা কাউকে শনাক্ত করতে পারছিলাম না। কারণ ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ট্রেন থেকে নেমে হলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে বের হওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রীতিলতা হল এলাকায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিনি। তাঁর বর্ণনার প্রেক্ষিতে সাড়ে ৯টার মধ্যে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে আমরা তেমন কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। ভুক্তভোগীর তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সময় ও জায়গা কোনোভাবেই মিলাতে না পেরে পুনরায় তার কাছে সঠিক ঘটনা জানতে চাই। এরপর তিনি আমাদের মূল ঘটনা জানান। এটি ছিলো ১৭ জুলাই রাত ১০টার পরের ঘটনা এবং অভিযোগপত্রে উল্লিখিত জায়গাটি সঠিক ঘটনাস্থল ছিল না। ঘটনাটি ঘটেছিল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পরে পুকুরের পূর্বপাড় থেকে একটু ভেতরে। সেখানে ওই ছাত্রী তার বন্ধুর সঙ্গে বসেছিলেন। এসময় অভিযুক্তরা দুটি বাইক নিয়ে ওই জায়গায় এসে তাদের দেখতে পেয়ে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে উভয়কে মারধর করে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করে সর্বশেষ কিছু আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে সটকে পড়ে। প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় ৫ জন যুবকের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রী। এ ঘটনার বিচার ও চার দফা দাবিতে গত ২০ ও ২১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দাবিগুলো মেনে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে দুই শিক্ষার্থীকে। অভিযুক্তদের আটক করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চবিতে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় আরও ৪ জন বহিষ্কার

আপডেট সময় : ০১:১৬:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২১ সালে দুই ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চার শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় উপাচার্য দফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বহিষ্কৃতরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জান্নাতুল ইসলাম রুবেল, দর্শন বিভগের মো. ইমন আহম্মেদ ও রাকিব হাসান রাজু এবং আরবি বিভাগের জুনায়েদ আহমেদ। চারজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, যৌন নিপীড়ন সেলে থাকা তিনটি অভিযোগের সুরাহা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীর অভিযোগে অভিযুক্তদের সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দুই ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। অভিযোগটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ভুক্তভোগীর ভুল তথ্যে দেরি হয় তদন্তে
এদিকে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সেই ছাত্রী প্রথমে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ। এতে দোষীদের শনাক্ত করতে দেরি হয় তদন্ত কমিটির। সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া। ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ভুক্তভোগীর তথ্য অনুযায়ী তদন্ত করতে গিয়ে আমরা কাউকে শনাক্ত করতে পারছিলাম না। কারণ ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ট্রেন থেকে নেমে হলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে বের হওয়ার পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রীতিলতা হল এলাকায় হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিনি। তাঁর বর্ণনার প্রেক্ষিতে সাড়ে ৯টার মধ্যে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে আমরা তেমন কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। ভুক্তভোগীর তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সময় ও জায়গা কোনোভাবেই মিলাতে না পেরে পুনরায় তার কাছে সঠিক ঘটনা জানতে চাই। এরপর তিনি আমাদের মূল ঘটনা জানান। এটি ছিলো ১৭ জুলাই রাত ১০টার পরের ঘটনা এবং অভিযোগপত্রে উল্লিখিত জায়গাটি সঠিক ঘটনাস্থল ছিল না। ঘটনাটি ঘটেছিল বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পরে পুকুরের পূর্বপাড় থেকে একটু ভেতরে। সেখানে ওই ছাত্রী তার বন্ধুর সঙ্গে বসেছিলেন। এসময় অভিযুক্তরা দুটি বাইক নিয়ে ওই জায়গায় এসে তাদের দেখতে পেয়ে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে উভয়কে মারধর করে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করে সর্বশেষ কিছু আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে সটকে পড়ে। প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় ৫ জন যুবকের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রী। এ ঘটনার বিচার ও চার দফা দাবিতে গত ২০ ও ২১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দাবিগুলো মেনে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে দুই শিক্ষার্থীকে। অভিযুক্তদের আটক করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।