ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রস্তুতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

আশফাক সফল ঃ ‘বিপ্লব’ আসে পরিবর্তনের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। যেকোনও পরিবর্তনের লক্ষ্য থাকে ভালো কিছু করার। ইতিহাস বলে ভালো কিছু করার বাসনা থেকেই শিল্পবিপ্লবের সূচনা। সপ্তদশ শতকে যান্ত্রিকীকরণ (সবপযধহরুধঃরড়হ) দিয়ে যেই বিপ্লবের শুরু; নিত্যনতুন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে সেই বিপ্লবের প্রজন্ম পার হয়েছে কয়েকটি। তবে প্রত্যেকটি পর্যায়ে প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প বিপ্লবের সফলতা নিশ্চিত করতে অন্যতম প্রধান নিয়ামকের ভূমিকায় ছিল নানাবিধ ব্যবসায়িক আর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
বিগত কিছুকাল ধরেই বেশ ব্যাপক পরিসরে বাংলাদেশে আলোচনা হচ্ছে “চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ বা ৪ওজ নিয়ে। সেই আলোচনার উদ্দেশ্য কতটা রাজনৈতিক সেই তর্কে মেতে ওঠার লোভনীয় সুযোগ থাকলেও, বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন প্রযুক্তি ও প্রায়োগিক দিকগুলো নিয়ে। প্রায়োগিক দিকগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপটের বাইরেও আছে আইন ও নিরাপত্তাগত বিষয়াদি। যেহেতু ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ মূলত তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর, তাই প্রযুক্তির সহজলভ্যতা থেকে উপযোগিতা সবই একই মোড়কে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্তা করতে হয়। একই সঙ্গে তথ্যের প্রাপ্যতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা হয়ে ওঠে উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কারণ। আজকের আলোচনার মূল ভাবনায় থাকবে বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায়োগিক দিক থেকে “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব”-জোয়ারের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রস্তুতি কতটুকু।

শুধু তথ্যপ্রযুক্তিরই প্রায় দশ থেকে পনেরটি ক্ষেত্র বা ডোমেইন (ফড়সধরহ) সরাসরি সম্পর্কিত “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব”-এর সঙ্গে। এগুলোর মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (ধৎঃরভরপরধষ রহঃবষষরমবহপব), বিগ ডাটা, ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অব থিংস (ওড়ঞ), ইন্টারনেট অব সিস্টেম, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ডোমেইনগুলোর প্রত্যেকটি একে-অন্যের সঙ্গে জড়িত। খুবই আশার কথা যে প্রায় প্রত্যেকটি ডোমেইনে বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা কমবেশি সংযুক্ত। একই সঙ্গে এটাও দুশ্চিন্তার যে গুণগত দিকে থেকে অনেকের অবদান বিশ্বমানের হলেও একটা বড় অংশের অবদান এখন পর্যন্ত আহামরি নয়। পিছিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের দুর্বলতা যতটুকু দায়ী তার থেকে ঢের বেশি ব্যর্থতা শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পারিপার্শ্বিকতার।

শিক্ষা ব্যবস্থার যে দুর্বলতার কথা বলা হচ্ছে তা আমাদের জন্য ঐতিহাসিক সত্য। বিগত শতাব্দী থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার যে পরিবর্তন (বা তথাকথিত উন্নয়ন) করা হয়েছে তা ছিল পেশাজীবী উৎপাদনের অ্যাকাডেমিক বিনির্মাণ মাত্র। বিভিন্ন জার্নালে বাংলাদেশি গবেষকদের সাইটেশন (অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনও গবেষকের গবেষণাপত্রকে ভিত্তি করে অন্য আরেকজনের গবেষণা করা বা বাংলাদেশি গবেষণাকে রেফার করা)-এর হার প্রমাণ করে গবেষণা ও উদ্ভাবন (ৎবংবধৎপয ধহফ রহহড়াধঃরড়হ)-এর ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু পিছিয়ে আছি। বাংলাদেশি গবেষকদের প্যাটেন্টের হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় মোটেই সন্তোষজনক নয়। অন্যদিকে এটাও মানতে হবে আমাদের অনেক বিজ্ঞানী আর গবেষকরা দেশের বাইরে চমকপ্রদ অনেক কাজ করছেন।

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’-এর জোয়ারের সঙ্গে তাল মিলাতে কর্মী ও নীতিনির্ধারক উভয় পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তিগত শিক্ষা ও দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়। লক্ষণীয় বিষয় যে কর্মী ও নীতিনির্ধারক উভয় পর্যায়ে যে শুধুই প্রযুক্তিকর্মী থাকবে এমন নয়। প্রডাকশন থেকে প্রডাক্ট ডেলিভারি অথবা বিজনেস প্ল্যানিং থেকে ফিন্যান্স অপারেশন- প্রত্যেক পর্যায়ে যারা কাজ করবেন বা করেন তাদের প্রত্যেকেরই প্রযুক্তি সংক্রান্ত দক্ষতা থাকতে হবে। এই দক্ষতার চাহিদা, কাজের ধরন ও প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। ঠিক এখানে এসেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (মূলত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো) চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে হোঁচট খায়।

বিগত কয়েক দশকে ডিজিটালাইজেশনের জোয়ারে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হয়েছে তা আশাব্যঞ্জক। প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠ্যক্রম বা কারিক্যুলাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের বিষয়টিকে বিবেচনা করা হয়েছে, একই সঙ্গে প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স ও ওয়ার্কশপ দেখা যায়, যেগুলো তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। বর্তমানে দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনা চলছে। কিন্তু এখনও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে, অত্যাধুনিক বিষয়াদি এখনও অনেকটাই অবহেলিত। কম্পিউটার বিজ্ঞান বা এই জাতীয় বিভাগগুলোতে বিগ ডাটা বা মেশিন লার্নিং সংক্রান্ত বিষয়গুলো আলোচনা করা হলেও, অন্য বিভাগগুলো এখনও অফিস অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে ইন্টারনেট অব থিংস (অনেক তাত্ত্বিক বর্তমানে ইন্টারনেট অব সিস্টেম বলছেন) ব্যাপক পরিসরে উৎপাদন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। উদাহরণস্বরূপ আধুনিক কলকারখানার প্রায় প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ একে অন্যের সঙ্গে বিভিন্ন ধরেনের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। সেই সঙ্গে রোবট বা রোবটিক্সনির্ভর উৎপাদন ও পরিবহন ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করবে সামগ্রিক সক্ষমতাকে। কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের চেয়ে অনেক বেশি সম্পৃক্ততা (তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেকে) রয়েছে অন্যান্য পেশাজীবী ও প্রযুক্তিবিদদের; সেই প্রেক্ষাপটে প্রকৌশলবিদ্যার কারিক্যুলামের পাশাপাশি অন্যান্য ফ্যাকাল্টিতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়াদি যুক্ত করা এখন আবশ্যক।
যেমন, ব্যবসায় প্রশাসন বা বিজনেস স্কুলে যে পাঠ্যক্রম চলছে, সেখানে ডাটা মাইনিং, ব্লকচেইন ইত্যাদির ব্যবহার ও প্রয়োগ নিয়ে গভীরভাবে আলোচনার দরকার আছে। বর্তমানে ডাটা এনালাইসিস ছাড়া প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য থাকা অসম্ভব। টেক জায়ান্টদের সহযোগিতায় প্রত্যেক কাস্টমারের কাছে এখন আলাদা আলাদ বিজ্ঞাপন সোশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। আইটিভিত্তিক মার্কেটিং ফার্মগুলো কাস্টমারের সোশাল নেটওয়ার্কের আচরণকে ভিত্তি করে আলাদা আলাদা বিজ্ঞাপন প্রোফাইল তৈরি করছে। একইভাবে প্রডাক্ট ডেভেলপাররা আলাদা আলদা প্রডাক্ট তৈরি করছে। যেমন- মুঠোফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত গ্রাহকদের ব্যবহারের ও খরচের প্রবণতাকে ভিত্তি করে তাদের গ্রাহকদের জন্য যে প্যাকেজগুলো তৈরি করে। একইভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ একইভাবে তাদের স্কিম নকশা করতে পারে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য, বাংলাদেশ মার্কেটিং ও সেলস ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সাধারণ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মোটাদাগে দেখলে পিছিয়ে থাকার কারণ অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে না পারা অথবা প্রযুক্তি সম্পর্কে না জানা।
বিজনেস স্কুলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে উদ্ভাবনী দক্ষতা ও উদ্যোক্তা (রহহড়াধঃরড়হ ধহফ বহঃৎবঢ়ৎবহবঁৎ) তৈরি করা। নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. রোকনুজ্জামান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল মঈন “ঊফঁপধঃরড়হ ধহফ ঝশরষষ ভড়ৎ খবাবৎধমরহম ৪ওজ” শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে বলেন, দুর্বল উদ্ভাবনী ক্ষমতার কারণে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশের সফলতা অর্জন কঠিন। গবেষণাপত্রে তারা প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। যেহেতু আগের চেয়ে আরও বেশি গতিশীল হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্যসহ সামগ্রিক ইকোসিস্টেম; দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, জটিল সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে পাঠ্যক্রমে। এই জাতীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন গণিতের পর্যাপ্ত অনুশীলন। দীর্ঘকাল ধরে যে গণিতভীতি কাজ করছে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেটা দূর করা বাঞ্ছনীয়। এজন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত গণিতের পাঠ এবং পাঠদান পদ্ধতি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষকদের যুক্ত করতে হবে। বিগত কোভিডকালে শিক্ষকরা অনলাইন ক্লাসে কিছুটা অভ্যস্ত হলেও শহরাঞ্চলের বাইরে এখনও ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের ফিচারগুলো নিয়ে শিক্ষকদের অভ্যস্ততা অনেক কম। এছাড়াও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে শিক্ষকদের ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচনা করা হয় না। এই অবস্থায় যদি শিক্ষকদের ধারণা আর চিন্তাকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে মিলিয়ে আনা সম্ভব না হয়, তাহলে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন করে বিশেষ কোনও সুবিধা হবে না। সামগ্রিকভাবে বললে, আমাদের প্রত্যেককেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে হবে। মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের যেমন জানা প্রয়োজন কীভাবে সিমুলেশন বা ডাটা সায়েন্স চিকিৎসা গবেষণায় ভূমিকা রাখছে; তেমনি ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কীভাবে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পূরণ করছে ক্রেতার চাহিদা; আর শিক্ষকদের জানতে হবে তিনি কীভাবে যুক্ত হয়েছেন এই বিপ্লবে।
শুধু প্রযুক্তির ওপর নজর রাখলেই চলবে না। নজর রাখতে হবে নিরাপত্তার আইনগত বিষয়াদি নিয়ে। বাংলাদেশের সাইবার আইন ও সংশ্লিষ্ট নীতিমালা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে ব্যাপক পরিসরে। আমাদের দেশে সাইবার পুলিশিং এবং সাইবার লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এখন অনেক দুর্বল। বহুজাতিক প্রযুক্তি ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেঞ্চারের মতে, ২০২০ থেকে ২০২১ সালে সাইবার আক্রমণ ও দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।
৪ওজ বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জোয়ারে পরিবর্তন এসেছে অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, যোগাযোগ, এমনকি চিকিৎসা ক্ষেত্রেও। তীব্র জোয়ারের স্রোত যেমন নদীর কূল ভাঙে, আবার সেই স্রোতকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করাও সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনার। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব থেকে লাভবান হবার জন্য বাংলাদেশ এখনও কম-বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। এই সুবিধা ও সুযোগকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য শুধু প্রযুক্তি শিক্ষার পাঠ্যক্রম উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে।
লেখক: ব্লগার ও আইটি প্রফেশনাল

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রস্তুতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা

আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২

আশফাক সফল ঃ ‘বিপ্লব’ আসে পরিবর্তনের স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। যেকোনও পরিবর্তনের লক্ষ্য থাকে ভালো কিছু করার। ইতিহাস বলে ভালো কিছু করার বাসনা থেকেই শিল্পবিপ্লবের সূচনা। সপ্তদশ শতকে যান্ত্রিকীকরণ (সবপযধহরুধঃরড়হ) দিয়ে যেই বিপ্লবের শুরু; নিত্যনতুন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে সেই বিপ্লবের প্রজন্ম পার হয়েছে কয়েকটি। তবে প্রত্যেকটি পর্যায়ে প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প বিপ্লবের সফলতা নিশ্চিত করতে অন্যতম প্রধান নিয়ামকের ভূমিকায় ছিল নানাবিধ ব্যবসায়িক আর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
বিগত কিছুকাল ধরেই বেশ ব্যাপক পরিসরে বাংলাদেশে আলোচনা হচ্ছে “চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ বা ৪ওজ নিয়ে। সেই আলোচনার উদ্দেশ্য কতটা রাজনৈতিক সেই তর্কে মেতে ওঠার লোভনীয় সুযোগ থাকলেও, বেশি নজর দেওয়ার প্রয়োজন প্রযুক্তি ও প্রায়োগিক দিকগুলো নিয়ে। প্রায়োগিক দিকগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপটের বাইরেও আছে আইন ও নিরাপত্তাগত বিষয়াদি। যেহেতু ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’ মূলত তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর, তাই প্রযুক্তির সহজলভ্যতা থেকে উপযোগিতা সবই একই মোড়কে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্তা করতে হয়। একই সঙ্গে তথ্যের প্রাপ্যতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা হয়ে ওঠে উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কারণ। আজকের আলোচনার মূল ভাবনায় থাকবে বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায়োগিক দিক থেকে “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব”-জোয়ারের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রস্তুতি কতটুকু।

শুধু তথ্যপ্রযুক্তিরই প্রায় দশ থেকে পনেরটি ক্ষেত্র বা ডোমেইন (ফড়সধরহ) সরাসরি সম্পর্কিত “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব”-এর সঙ্গে। এগুলোর মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (ধৎঃরভরপরধষ রহঃবষষরমবহপব), বিগ ডাটা, ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অব থিংস (ওড়ঞ), ইন্টারনেট অব সিস্টেম, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ডোমেইনগুলোর প্রত্যেকটি একে-অন্যের সঙ্গে জড়িত। খুবই আশার কথা যে প্রায় প্রত্যেকটি ডোমেইনে বাংলাদেশের প্রযুক্তিবিদরা কমবেশি সংযুক্ত। একই সঙ্গে এটাও দুশ্চিন্তার যে গুণগত দিকে থেকে অনেকের অবদান বিশ্বমানের হলেও একটা বড় অংশের অবদান এখন পর্যন্ত আহামরি নয়। পিছিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে তাদের নিজেদের দুর্বলতা যতটুকু দায়ী তার থেকে ঢের বেশি ব্যর্থতা শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পারিপার্শ্বিকতার।

শিক্ষা ব্যবস্থার যে দুর্বলতার কথা বলা হচ্ছে তা আমাদের জন্য ঐতিহাসিক সত্য। বিগত শতাব্দী থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার যে পরিবর্তন (বা তথাকথিত উন্নয়ন) করা হয়েছে তা ছিল পেশাজীবী উৎপাদনের অ্যাকাডেমিক বিনির্মাণ মাত্র। বিভিন্ন জার্নালে বাংলাদেশি গবেষকদের সাইটেশন (অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনও গবেষকের গবেষণাপত্রকে ভিত্তি করে অন্য আরেকজনের গবেষণা করা বা বাংলাদেশি গবেষণাকে রেফার করা)-এর হার প্রমাণ করে গবেষণা ও উদ্ভাবন (ৎবংবধৎপয ধহফ রহহড়াধঃরড়হ)-এর ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু পিছিয়ে আছি। বাংলাদেশি গবেষকদের প্যাটেন্টের হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় মোটেই সন্তোষজনক নয়। অন্যদিকে এটাও মানতে হবে আমাদের অনেক বিজ্ঞানী আর গবেষকরা দেশের বাইরে চমকপ্রদ অনেক কাজ করছেন।

‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লব’-এর জোয়ারের সঙ্গে তাল মিলাতে কর্মী ও নীতিনির্ধারক উভয় পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তিগত শিক্ষা ও দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়। লক্ষণীয় বিষয় যে কর্মী ও নীতিনির্ধারক উভয় পর্যায়ে যে শুধুই প্রযুক্তিকর্মী থাকবে এমন নয়। প্রডাকশন থেকে প্রডাক্ট ডেলিভারি অথবা বিজনেস প্ল্যানিং থেকে ফিন্যান্স অপারেশন- প্রত্যেক পর্যায়ে যারা কাজ করবেন বা করেন তাদের প্রত্যেকেরই প্রযুক্তি সংক্রান্ত দক্ষতা থাকতে হবে। এই দক্ষতার চাহিদা, কাজের ধরন ও প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। ঠিক এখানে এসেই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (মূলত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো) চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে হোঁচট খায়।

বিগত কয়েক দশকে ডিজিটালাইজেশনের জোয়ারে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হয়েছে তা আশাব্যঞ্জক। প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠ্যক্রম বা কারিক্যুলাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের বিষয়টিকে বিবেচনা করা হয়েছে, একই সঙ্গে প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স ও ওয়ার্কশপ দেখা যায়, যেগুলো তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। বর্তমানে দেশের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনা চলছে। কিন্তু এখনও তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে, অত্যাধুনিক বিষয়াদি এখনও অনেকটাই অবহেলিত। কম্পিউটার বিজ্ঞান বা এই জাতীয় বিভাগগুলোতে বিগ ডাটা বা মেশিন লার্নিং সংক্রান্ত বিষয়গুলো আলোচনা করা হলেও, অন্য বিভাগগুলো এখনও অফিস অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে ইন্টারনেট অব থিংস (অনেক তাত্ত্বিক বর্তমানে ইন্টারনেট অব সিস্টেম বলছেন) ব্যাপক পরিসরে উৎপাদন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে। উদাহরণস্বরূপ আধুনিক কলকারখানার প্রায় প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ একে অন্যের সঙ্গে বিভিন্ন ধরেনের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। সেই সঙ্গে রোবট বা রোবটিক্সনির্ভর উৎপাদন ও পরিবহন ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করবে সামগ্রিক সক্ষমতাকে। কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থায় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের চেয়ে অনেক বেশি সম্পৃক্ততা (তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ব্যতিরেকে) রয়েছে অন্যান্য পেশাজীবী ও প্রযুক্তিবিদদের; সেই প্রেক্ষাপটে প্রকৌশলবিদ্যার কারিক্যুলামের পাশাপাশি অন্যান্য ফ্যাকাল্টিতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়াদি যুক্ত করা এখন আবশ্যক।
যেমন, ব্যবসায় প্রশাসন বা বিজনেস স্কুলে যে পাঠ্যক্রম চলছে, সেখানে ডাটা মাইনিং, ব্লকচেইন ইত্যাদির ব্যবহার ও প্রয়োগ নিয়ে গভীরভাবে আলোচনার দরকার আছে। বর্তমানে ডাটা এনালাইসিস ছাড়া প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য থাকা অসম্ভব। টেক জায়ান্টদের সহযোগিতায় প্রত্যেক কাস্টমারের কাছে এখন আলাদা আলাদ বিজ্ঞাপন সোশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। আইটিভিত্তিক মার্কেটিং ফার্মগুলো কাস্টমারের সোশাল নেটওয়ার্কের আচরণকে ভিত্তি করে আলাদা আলাদা বিজ্ঞাপন প্রোফাইল তৈরি করছে। একইভাবে প্রডাক্ট ডেভেলপাররা আলাদা আলদা প্রডাক্ট তৈরি করছে। যেমন- মুঠোফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত গ্রাহকদের ব্যবহারের ও খরচের প্রবণতাকে ভিত্তি করে তাদের গ্রাহকদের জন্য যে প্যাকেজগুলো তৈরি করে। একইভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ একইভাবে তাদের স্কিম নকশা করতে পারে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য, বাংলাদেশ মার্কেটিং ও সেলস ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সাধারণ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। মোটাদাগে দেখলে পিছিয়ে থাকার কারণ অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথভাবে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে না পারা অথবা প্রযুক্তি সম্পর্কে না জানা।
বিজনেস স্কুলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে উদ্ভাবনী দক্ষতা ও উদ্যোক্তা (রহহড়াধঃরড়হ ধহফ বহঃৎবঢ়ৎবহবঁৎ) তৈরি করা। নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম. রোকনুজ্জামান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল মঈন “ঊফঁপধঃরড়হ ধহফ ঝশরষষ ভড়ৎ খবাবৎধমরহম ৪ওজ” শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে বলেন, দুর্বল উদ্ভাবনী ক্ষমতার কারণে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশের সফলতা অর্জন কঠিন। গবেষণাপত্রে তারা প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। যেহেতু আগের চেয়ে আরও বেশি গতিশীল হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্যসহ সামগ্রিক ইকোসিস্টেম; দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, জটিল সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে পাঠ্যক্রমে। এই জাতীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন গণিতের পর্যাপ্ত অনুশীলন। দীর্ঘকাল ধরে যে গণিতভীতি কাজ করছে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেটা দূর করা বাঞ্ছনীয়। এজন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত গণিতের পাঠ এবং পাঠদান পদ্ধতি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষকদের যুক্ত করতে হবে। বিগত কোভিডকালে শিক্ষকরা অনলাইন ক্লাসে কিছুটা অভ্যস্ত হলেও শহরাঞ্চলের বাইরে এখনও ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের ফিচারগুলো নিয়ে শিক্ষকদের অভ্যস্ততা অনেক কম। এছাড়াও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে শিক্ষকদের ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচনা করা হয় না। এই অবস্থায় যদি শিক্ষকদের ধারণা আর চিন্তাকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে মিলিয়ে আনা সম্ভব না হয়, তাহলে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন করে বিশেষ কোনও সুবিধা হবে না। সামগ্রিকভাবে বললে, আমাদের প্রত্যেককেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে হবে। মেডিক্যালের শিক্ষার্থীদের যেমন জানা প্রয়োজন কীভাবে সিমুলেশন বা ডাটা সায়েন্স চিকিৎসা গবেষণায় ভূমিকা রাখছে; তেমনি ব্যবসায় প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কীভাবে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পূরণ করছে ক্রেতার চাহিদা; আর শিক্ষকদের জানতে হবে তিনি কীভাবে যুক্ত হয়েছেন এই বিপ্লবে।
শুধু প্রযুক্তির ওপর নজর রাখলেই চলবে না। নজর রাখতে হবে নিরাপত্তার আইনগত বিষয়াদি নিয়ে। বাংলাদেশের সাইবার আইন ও সংশ্লিষ্ট নীতিমালা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে ব্যাপক পরিসরে। আমাদের দেশে সাইবার পুলিশিং এবং সাইবার লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এখন অনেক দুর্বল। বহুজাতিক প্রযুক্তি ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেঞ্চারের মতে, ২০২০ থেকে ২০২১ সালে সাইবার আক্রমণ ও দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তৈরির দিকে নজর দিতে হবে।
৪ওজ বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জোয়ারে পরিবর্তন এসেছে অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, যোগাযোগ, এমনকি চিকিৎসা ক্ষেত্রেও। তীব্র জোয়ারের স্রোত যেমন নদীর কূল ভাঙে, আবার সেই স্রোতকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করাও সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনার। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব থেকে লাভবান হবার জন্য বাংলাদেশ এখনও কম-বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। এই সুবিধা ও সুযোগকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য শুধু প্রযুক্তি শিক্ষার পাঠ্যক্রম উন্নয়নের দিকে নজর না দিয়ে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে।
লেখক: ব্লগার ও আইটি প্রফেশনাল