ঢাকা ১২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত
২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২ মামলা নিস্পতির রেকর্ড

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২ মামলা নিস্পতি করে নজির স্থাপন করেছেন। এখনো ওই আদালতে ৫০ হাজার ৯শ’ ২৩ মামলা বিচারাধীন। এই পাহাড়সম মামলা পরিচালনার জন্য মাত্র ৮ জন ম্যাজিস্ট্রট রয়েছেন। চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন আদালতের বিচারকগণ কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন বলে একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিএমএম আদালতে ৭৬ জন সহায়ক কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিটি আদালতে একজন সহকারী, একজন স্টোনো টাইপিস্ট ও একজন অফিস সহায়ক রযেছেন। প্রতিটি আদালতে গড়ে ৬ হাজার ৩শ’ ৬৫টি মামলা রয়েছে। একজন বিচারকের পক্ষে এতগুলো মামলা পরিচালনা কঠিন। অধিকসংখ্যক মামলা থাকায় বছরের পর বছর তদন্ত প্রতিবেদন সময়মত না আসলেও বিচারকগণের পক্ষে খোঁজ নেয়া খুবই কঠিন হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম জেলা জজ আদলতের এক আইনজীবী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৬টি থানায় ৮ জন বিচারক রয়েছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সিএমএম আদালতে ৫০ হাজার ৯ শ’ ২৩ মামলার মধ্যে আমলি ফাইলে ২০ হাজার ২শ’ ৬৭ এবং বিচার ফাইলে ৩০ হাজার ৭শ’ ৫৬টি মামলা রয়েছে। প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেট গড়ে ৬ হাজার ৩শ’ ৬৫ মামলার মধ্যে আমলি ফাইলে গড়ে ২ হাজার ৫শ’ ২১টি, বিচার ফাইলে প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেট ৩ হাজার ৮শ’ ৪৪টি। আমলি মামলাগুলো নিয়ে কাজ করতে ম্যাজিস্ট্রেটদের দীর্র্ঘ সময় কাজ করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে এক একটি মামলার ৮/৯ মাস তারিখ পরে। ২০২২ সলে ৩৮ হাজার ৪শ’ ৬৫ মামলা দায়ের হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যার মামলার অভিযোগকারীর জবানবন্দি গ্রহণ, তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই ও নারাজি দরখাস্ত নিস্পত্তি, জামিন শুনানি, রিমান্ড শুনানি, জিম্মা দরখান্ত শুনানি ১৬৪ ধারা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধকরণ এসব কাজে অনেক সময় ব্যয় হয়। এছাড়া টিআই প্যারেড, মদক ধ্বংসকরণ ও এফিটডেবিট এর কাজেও বিচারকগণকে কাজ করতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৯ সালে। সেখানে বর্তমানে ৮ জন বিচারক, ৭৬ জন সহায়ক কর্মচারী, ১৬ থানা এবং ৫০ হাজার ৯শ’ ২৩টি মামলা রয়েছে।
আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটগণকে প্রতিদিন হাইকোর্ট বিভাগের বেইলবন্ড সম্পাদনে কিছু সময় ব্যয় এবং প্রশাসনিক কাজেও আলাদা সময় দিতে হয়। প্রতি বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি নিয়োজিত থেকে তদারকি করার কারণে ২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২টি মামলা নিস্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে। এই আদালতের ২০২২ সালে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৩১ লক্ষ ৩৭ হাজার ১শ’ ৭৮ টাকা। ২০১৯ সালে যেখানে ৭ হাজার ২শ’ ৯১ জন সাক্ষীগ্রহণ হয়েছে, সেখানে ২০২২ সালে ২২ হাজার ১শ’ ৮৪ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কানু রাম শর্মা বলেন, সিএমএম আদালতে অধিকসংখ্যক মামলা থাকায় আরো অন্তত ৮/১০ জন বিচারকের প্রয়োজন। এফিডেভিট করতে আসা একজন ভুক্তভোগী জানান, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুধুমাত্র এফিডেভিটের জন্য আলাদা করে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রয়োজন। কারণ এফিডেভিট করতে আসা লোকজনদের শুনানি শুরু হয় ২-৩টার দিকে। যার কারণে আমাদের খুবই কষ্ট হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত
২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২ মামলা নিস্পতির রেকর্ড

আপডেট সময় : ১২:৫২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২ মামলা নিস্পতি করে নজির স্থাপন করেছেন। এখনো ওই আদালতে ৫০ হাজার ৯শ’ ২৩ মামলা বিচারাধীন। এই পাহাড়সম মামলা পরিচালনার জন্য মাত্র ৮ জন ম্যাজিস্ট্রট রয়েছেন। চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন আদালতের বিচারকগণ কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন বলে একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিএমএম আদালতে ৭৬ জন সহায়ক কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিটি আদালতে একজন সহকারী, একজন স্টোনো টাইপিস্ট ও একজন অফিস সহায়ক রযেছেন। প্রতিটি আদালতে গড়ে ৬ হাজার ৩শ’ ৬৫টি মামলা রয়েছে। একজন বিচারকের পক্ষে এতগুলো মামলা পরিচালনা কঠিন। অধিকসংখ্যক মামলা থাকায় বছরের পর বছর তদন্ত প্রতিবেদন সময়মত না আসলেও বিচারকগণের পক্ষে খোঁজ নেয়া খুবই কঠিন হয়ে যায়।
চট্টগ্রাম জেলা জজ আদলতের এক আইনজীবী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৬টি থানায় ৮ জন বিচারক রয়েছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। সিএমএম আদালতে ৫০ হাজার ৯ শ’ ২৩ মামলার মধ্যে আমলি ফাইলে ২০ হাজার ২শ’ ৬৭ এবং বিচার ফাইলে ৩০ হাজার ৭শ’ ৫৬টি মামলা রয়েছে। প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেট গড়ে ৬ হাজার ৩শ’ ৬৫ মামলার মধ্যে আমলি ফাইলে গড়ে ২ হাজার ৫শ’ ২১টি, বিচার ফাইলে প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেট ৩ হাজার ৮শ’ ৪৪টি। আমলি মামলাগুলো নিয়ে কাজ করতে ম্যাজিস্ট্রেটদের দীর্র্ঘ সময় কাজ করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে এক একটি মামলার ৮/৯ মাস তারিখ পরে। ২০২২ সলে ৩৮ হাজার ৪শ’ ৬৫ মামলা দায়ের হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যার মামলার অভিযোগকারীর জবানবন্দি গ্রহণ, তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই ও নারাজি দরখাস্ত নিস্পত্তি, জামিন শুনানি, রিমান্ড শুনানি, জিম্মা দরখান্ত শুনানি ১৬৪ ধারা ও ২২ ধারায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধকরণ এসব কাজে অনেক সময় ব্যয় হয়। এছাড়া টিআই প্যারেড, মদক ধ্বংসকরণ ও এফিটডেবিট এর কাজেও বিচারকগণকে কাজ করতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৭৯ সালে। সেখানে বর্তমানে ৮ জন বিচারক, ৭৬ জন সহায়ক কর্মচারী, ১৬ থানা এবং ৫০ হাজার ৯শ’ ২৩টি মামলা রয়েছে।
আদালত সূত্রে আরো জানা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটগণকে প্রতিদিন হাইকোর্ট বিভাগের বেইলবন্ড সম্পাদনে কিছু সময় ব্যয় এবং প্রশাসনিক কাজেও আলাদা সময় দিতে হয়। প্রতি বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি নিয়োজিত থেকে তদারকি করার কারণে ২০২২ সালে ৩৫ হাজার ৯শ’ ৫২টি মামলা নিস্পত্তি করতে সক্ষম হয়েছে। এই আদালতের ২০২২ সালে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৩১ লক্ষ ৩৭ হাজার ১শ’ ৭৮ টাকা। ২০১৯ সালে যেখানে ৭ হাজার ২শ’ ৯১ জন সাক্ষীগ্রহণ হয়েছে, সেখানে ২০২২ সালে ২২ হাজার ১শ’ ৮৪ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কানু রাম শর্মা বলেন, সিএমএম আদালতে অধিকসংখ্যক মামলা থাকায় আরো অন্তত ৮/১০ জন বিচারকের প্রয়োজন। এফিডেভিট করতে আসা একজন ভুক্তভোগী জানান, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুধুমাত্র এফিডেভিটের জন্য আলাদা করে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রয়োজন। কারণ এফিডেভিট করতে আসা লোকজনদের শুনানি শুরু হয় ২-৩টার দিকে। যার কারণে আমাদের খুবই কষ্ট হয়।