ঢাকা ০২:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ এ বছরই : আইনমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের মধ্যেই চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ দেখা যাবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন ‘শিগগিরই’ এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। শনিবার চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক ‘মিলনমেলায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বলেন, “সমিতির সদস্যদের প্রাণের দাবি চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। আমরা এ বিষয়ে আপনার সদয় প্রয়াস চাই।” প্রধান অতিথির বক্তব্যের শেষ দিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “আপনারা বলেছেন সার্কিট বেঞ্চের কথা। আমি আপনাদেরকে একটা সুখবর দিই। সেটা হচ্ছে, বর্তমানে নতুন প্রধান বিচারপতি যিনি হয়েছেন, তার সাথে আমার এই সার্কিট বেঞ্চের ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। তিনি শিগগিরই এটা বিবেচনায় নেবেন।
“আমার মনে হয়, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই আমরা হয়ত একটা সার্কিট বেঞ্চ চট্টগ্রামে দেখব। আমার উপর আস্থা রাখতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এটা চান। মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমাকে বলেছেন। এই ব্যাপারে হয়ত কিছু দিনের মধ্যে একটা ঘোষণা আমরা করব।” ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামের আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে দেশের দ্বিতীয় প্রধান এই নগরে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ‘হাই কোর্ট সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ প্রায় ৩৩ বছর ধরে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নতুন আদালত ভবন উদ্বোধন করে এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে যত দ্রুত সম্ভব হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ‘হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছিলেন, চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে ‘কিছু সাংবিধানিক সমস্যা’ আছে। এরপর ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর রাতে সিলেট আইনজীবী সমিতির নৈশভোজে বিচারপতি সিনহা চট্টগ্রাম ও সিলেটে হাই কোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের কথা বলেছিলেন। ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যেও ‘ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের বেঞ্চ হলে তা চট্টগ্রামেই হবে’ বলে আশ্বস্ত করেন বিচারপতি সিনহা।
এরপর বিষয়টি আর এগোয়নি। চার বছর পর শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনজীবীদের আবার আশার কথা শোনালেন। ১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়। ১৯৮৬ সালে সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থাকে। পরে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা পায়। ১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাই কোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সংবিধানে ‘সুপ্রিম কোর্টের আসন’ শিরোনামের ১০০ অনুচ্ছেদে বলা আছে- “রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ এ বছরই : আইনমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের মধ্যেই চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ দেখা যাবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন ‘শিগগিরই’ এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। শনিবার চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক ‘মিলনমেলায়’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। মন্ত্রীর বক্তব্যের আগে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন বলেন, “সমিতির সদস্যদের প্রাণের দাবি চট্টগ্রামে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ। আমরা এ বিষয়ে আপনার সদয় প্রয়াস চাই।” প্রধান অতিথির বক্তব্যের শেষ দিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “আপনারা বলেছেন সার্কিট বেঞ্চের কথা। আমি আপনাদেরকে একটা সুখবর দিই। সেটা হচ্ছে, বর্তমানে নতুন প্রধান বিচারপতি যিনি হয়েছেন, তার সাথে আমার এই সার্কিট বেঞ্চের ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। তিনি শিগগিরই এটা বিবেচনায় নেবেন।
“আমার মনে হয়, এ বছর শেষ হওয়ার আগেই আমরা হয়ত একটা সার্কিট বেঞ্চ চট্টগ্রামে দেখব। আমার উপর আস্থা রাখতে পারেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এটা চান। মাননীয় প্রধান বিচারপতি আমাকে বলেছেন। এই ব্যাপারে হয়ত কিছু দিনের মধ্যে একটা ঘোষণা আমরা করব।” ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামের আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে দেশের দ্বিতীয় প্রধান এই নগরে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ‘হাই কোর্ট সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ প্রায় ৩৩ বছর ধরে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নতুন আদালত ভবন উদ্বোধন করে এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে যত দ্রুত সম্ভব হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ‘হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছিলেন, চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে ‘কিছু সাংবিধানিক সমস্যা’ আছে। এরপর ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর রাতে সিলেট আইনজীবী সমিতির নৈশভোজে বিচারপতি সিনহা চট্টগ্রাম ও সিলেটে হাই কোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের কথা বলেছিলেন। ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যেও ‘ঢাকার বাইরে হাই কোর্টের বেঞ্চ হলে তা চট্টগ্রামেই হবে’ বলে আশ্বস্ত করেন বিচারপতি সিনহা।
এরপর বিষয়টি আর এগোয়নি। চার বছর পর শনিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইনজীবীদের আবার আশার কথা শোনালেন। ১৯৮২ সালের ১১ মে চট্টগ্রামে হাই কোর্টের একটি স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। এইচ এম এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৬ সালের ১৭ জুন সামরিক ফরমানের ৪ (এ) ধারা সংশোধন করে স্থায়ী বেঞ্চকে সার্কিট বেঞ্চ (অস্থায়ী) করা হয়। ১৯৮৬ সালে সংবিধান পুনরুজ্জীবনের পর সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ অনুসারে সার্কিট বেঞ্চের বিধান থাকায় চট্টগ্রামসহ দেশের ছয়টি সার্কিট বেঞ্চ বহাল থাকে। পরে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে, ছয়টি সার্কিট বেঞ্চই আবার স্থায়ী বেঞ্চের মর্যাদা পায়। ১৯৮৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত অষ্টম সংশোধনীর ২(ক) অনুচ্ছেদটি বাতিলের আদেশ দিলে চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেটের হাই কোর্ট বেঞ্চগুলো ঢাকায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সংবিধানে ‘সুপ্রিম কোর্টের আসন’ শিরোনামের ১০০ অনুচ্ছেদে বলা আছে- “রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে।”