ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রামে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা

  • আপডেট সময় : ০৮:১৫:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বাম থেকে নিহত নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক- সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে ওই দুইজনের গুলিতে স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা আহত হন।

গত সোমবার (৩ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক। গুলিবিদ্ধ স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা হলেন- ইকবাল, ওবায়দুল হক, আব্বাস উদ্দিন, মামুনুর রশিদ ও নাসির উদ্দিন। তাদের মধ্যে ইকবাল ও ওবায়দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহতদের কাছে বিদেশি অস্ত্র পাওয়া গেছে, যেটি থানা থেকে লুট করা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর এলাকায় প্রভাব বিস্তার বাড়াতে থাকেন কতিপয় সন্ত্রাসী। বিশেষ করে মধ্যম সাতকানিয়া এলাকা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় নেজাম, আবু ছালেক, আবু তাহের আদাইয়া, জাহেদ ও রিফাতরা।

সোমবার দিবাগত রাতে নেজামদের ছনখোলা এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় একটি পক্ষ। পরবর্তীতে মসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় নেজামরাও গুলি ছুড়ে। তবে একপর্যায়ে গণপিটুনিতে তারা নিহত হন।

স্থানীয় এক যুবক জানান, এলাকায় মাটি কাটা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল নেজামরা। এ ছাড়া বিচারের নাম করে লোকজনকে অপহরণ করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, দুজনের মরদেহ আমরা পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করা হচ্ছে।

নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী দাবি জামায়াতের: ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে জামায়াত ইসলামী। সংগঠনটির অভিযোগ, তাদেরকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে।

নিহত নেজাম ও সালেককে নিজেদের কর্মী দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামী সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, দুজনই কাঞ্চনা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী। তাদের পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।

নিহতরা ওই এলাকার পরিচিত দাবি করে জামায়াত নেতা জায়েদ বলেন, তাদের সালিশী বিচারের নামে ‘ফন্দি’ করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাইকে ডাকাত হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ফ্যাসিস্টদের চক্রান্তে জেনেশুনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে সেখানে যেতে দেয়নি। সড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চট্টগ্রামে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা

আপডেট সময় : ০৮:১৫:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মাইকে ‘ডাকাত’ ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে ওই দুইজনের গুলিতে স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা আহত হন।

গত সোমবার (৩ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক। গুলিবিদ্ধ স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা হলেন- ইকবাল, ওবায়দুল হক, আব্বাস উদ্দিন, মামুনুর রশিদ ও নাসির উদ্দিন। তাদের মধ্যে ইকবাল ও ওবায়দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহতদের কাছে বিদেশি অস্ত্র পাওয়া গেছে, যেটি থানা থেকে লুট করা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর এলাকায় প্রভাব বিস্তার বাড়াতে থাকেন কতিপয় সন্ত্রাসী। বিশেষ করে মধ্যম সাতকানিয়া এলাকা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় নেজাম, আবু ছালেক, আবু তাহের আদাইয়া, জাহেদ ও রিফাতরা।

সোমবার দিবাগত রাতে নেজামদের ছনখোলা এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় একটি পক্ষ। পরবর্তীতে মসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় নেজামরাও গুলি ছুড়ে। তবে একপর্যায়ে গণপিটুনিতে তারা নিহত হন।

স্থানীয় এক যুবক জানান, এলাকায় মাটি কাটা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল নেজামরা। এ ছাড়া বিচারের নাম করে লোকজনকে অপহরণ করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, দুজনের মরদেহ আমরা পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করা হচ্ছে।

নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী দাবি জামায়াতের: ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত দুজনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে জামায়াত ইসলামী। সংগঠনটির অভিযোগ, তাদেরকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করা হয়েছে।

নিহত নেজাম ও সালেককে নিজেদের কর্মী দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামী সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, দুজনই কাঞ্চনা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী। তাদের পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।

নিহতরা ওই এলাকার পরিচিত দাবি করে জামায়াত নেতা জায়েদ বলেন, তাদের সালিশী বিচারের নামে ‘ফন্দি’ করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে মারধর করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাইকে ডাকাত হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। ফ্যাসিস্টদের চক্রান্তে জেনেশুনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কাউকে সেখানে যেতে দেয়নি। সড়কে গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছিল।