ঢাকা ১০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঘিওরে মিষ্টির পচা রসে তৈরি শিশুদের সন্দেশ

  • আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: মানিকগঞ্জের ঘিওরে পচা মিষ্টির রসের সঙ্গে ক্ষতিকর রঙ ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে শিশুদের প্রিয় খাবার সন্দেশ ও টফি; যা প্যাকেটজাত করে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হয় বিভিন্ন জেলায়। অর্থ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।

উপজেলার নারচি রিকশাস্ট্যান্ডের পাশে এই সন্দেশ তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন মওলা মিয়া ও তার ছেলে মনির হোসেন। গত কয়েক মাস আগে তারা এখানে কারখানাটি চালু করেছেন। এর আগে কুস্তা গ্রামে তাদের কারখানা ছিল।

সরেজমিন দেখা গেছে, রিকশাস্ট্যান্ডের পাশে টিনের একটি লম্বা ছাপরা ঘর ভাড়া নিয়েছেন মওলা মিয়া। ছাপরার পেছনে গড়ে তোলা হয়েছে সন্দেশ ও টফি তৈরির কারখানা। ছাপরার ভেতর দিয়ে ছোট একটি গলি রয়েছে কারখানায় যাওয়ার জন্য। সেটিও আবার টিনের ঝাঁপ দিয়ে আটকানো থাকে। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে ভেতরে কারখানা রয়েছে।

কারখানায় দেখা গেছে, সেখানে একপাশে ছোট-বড় কয়েকটি ড্রামে রাখা হয়েছে পচা গাদ (রস)। কারখানা মালিক মওলা চুলায় রস জ্বাল দিচ্ছেন। পাশে এক শ্রমিক ড্রামে রাখা রস ছাঁকছেন, এক শ্রমিক সন্দেশ তৈরি করছেন এবং আরেকজন সেগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে প্যাকেট করছেন। পাশেই মিষ্টির রস রাখা ড্রামগুলো চেটে খাচ্ছিল একটি কুকুর।

মওলা বলেন, ‘কী করে খাব? শিখছি এই কাজ। পেট তো চালাতে হবে।’ তাদের তৈরি এই শিশুখাদ্য যে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এটা জেনেও কেন এমন ব্যবসা করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নিউজ কইরেন না। পরে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করব।’
মওলার ছেলে মনির জানান, তিনি জেলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকান থেকে পচা রস সংগ্রহ করেন। প্রতি কেজি রসের জন্য খরচ হয় ৩৫ টাকার মতো। এসব সন্দেশ মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, ফরিদপুর ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা এবং খুলনা এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কুরিয়ারের মাধ্যমে সন্দেশগুলো পাঠানো হয়। লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এমন কোনো কারখানার সরকারি অনুমোদন নেই। দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

ইউএনও আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মারাত্মক অপরাধ। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঘিওরে মিষ্টির পচা রসে তৈরি শিশুদের সন্দেশ

আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: মানিকগঞ্জের ঘিওরে পচা মিষ্টির রসের সঙ্গে ক্ষতিকর রঙ ও রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে শিশুদের প্রিয় খাবার সন্দেশ ও টফি; যা প্যাকেটজাত করে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হয় বিভিন্ন জেলায়। অর্থ লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।

উপজেলার নারচি রিকশাস্ট্যান্ডের পাশে এই সন্দেশ তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন মওলা মিয়া ও তার ছেলে মনির হোসেন। গত কয়েক মাস আগে তারা এখানে কারখানাটি চালু করেছেন। এর আগে কুস্তা গ্রামে তাদের কারখানা ছিল।

সরেজমিন দেখা গেছে, রিকশাস্ট্যান্ডের পাশে টিনের একটি লম্বা ছাপরা ঘর ভাড়া নিয়েছেন মওলা মিয়া। ছাপরার পেছনে গড়ে তোলা হয়েছে সন্দেশ ও টফি তৈরির কারখানা। ছাপরার ভেতর দিয়ে ছোট একটি গলি রয়েছে কারখানায় যাওয়ার জন্য। সেটিও আবার টিনের ঝাঁপ দিয়ে আটকানো থাকে। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে ভেতরে কারখানা রয়েছে।

কারখানায় দেখা গেছে, সেখানে একপাশে ছোট-বড় কয়েকটি ড্রামে রাখা হয়েছে পচা গাদ (রস)। কারখানা মালিক মওলা চুলায় রস জ্বাল দিচ্ছেন। পাশে এক শ্রমিক ড্রামে রাখা রস ছাঁকছেন, এক শ্রমিক সন্দেশ তৈরি করছেন এবং আরেকজন সেগুলো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে প্যাকেট করছেন। পাশেই মিষ্টির রস রাখা ড্রামগুলো চেটে খাচ্ছিল একটি কুকুর।

মওলা বলেন, ‘কী করে খাব? শিখছি এই কাজ। পেট তো চালাতে হবে।’ তাদের তৈরি এই শিশুখাদ্য যে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এটা জেনেও কেন এমন ব্যবসা করছেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘নিউজ কইরেন না। পরে আপনার সাথে সাক্ষাৎ করব।’
মওলার ছেলে মনির জানান, তিনি জেলার বিভিন্ন মিষ্টির দোকান থেকে পচা রস সংগ্রহ করেন। প্রতি কেজি রসের জন্য খরচ হয় ৩৫ টাকার মতো। এসব সন্দেশ মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, ফরিদপুর ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা এবং খুলনা এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কুরিয়ারের মাধ্যমে সন্দেশগুলো পাঠানো হয়। লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।
উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এমন কোনো কারখানার সরকারি অনুমোদন নেই। দ্রুত অভিযান পরিচালনা করা হবে।’

ইউএনও আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল মারাত্মক অপরাধ। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’