মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: মানিকগঞ্জে ঘিওর উপজেলার প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে ধলেশ্বরী নদী থেকে ভাঙনকবলিত এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বালু খেকোরা । স্থানীয় বিএনপির একাধিক বালু খেকোরা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এতে নদী ভাঙনের প্রবণতা বৃদ্ধিসহ সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বাইলজুরী ঠাকুর বাড়ির সামনে নাহিদ, ঘিওর ইউনিয়নেন কুস্তা এলাকায় সাইফ সানোয়ার, মাইলাগিতে জাসদ নেতা ময়না, এজাজ ও কামরুল, বালিয়াখোরা ইউনিয়নে টিটুসহ কয়েকজন, পেঁচারকান্দায় ইউসুফ, বানিয়াজুরী ইউনিয়নের জাবরা এলাকায় জনি ও সুজন, তরা এলাকায় রাজা ও মিলন এবং বড়টিয়া ইউনিয়নের ফুলহারা ইছামতি নদীতে মিনারের নেতৃত্বে ভাঙন কবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের ফলে কোনো কোনো স্থানে ফসলি জমি ভাঙন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলেই ফসলি জমিসহ বাড়িঘর ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে ইতোমধ্যে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার।
সরেজমিন বালু উত্তোলনের খবর সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে ড্রেজারের পাশে থাকা বালু উত্তোলনের এক কর্মচারী জানান, তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করছেন। তার মালিক আটঘাট বেঁধে বালু উত্তোলনে নেমেছেন। এ ব্যাপারে তিনি আর কিছু জানেন না।
উপজেলার কয়েকটি গ্রামের একাধিক গ্রামবাসী বালু উত্তোলনের কারণে দুর্দশার কথা জানিয়ে বলেন, এই অবৈধ বালু উত্তোলন আমাদের সর্বস্বান্ত করে ছাড়বে। আমাদের গ্রাম নদী গ্রাস করে নিচ্ছে। তারা অভিযোগ করে বলেন স্থানীয় বিএনপি ও জাসদ নেতারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের মহ উৎসবে নেমেছে প্রভাবশালী বালু দস্যুরা। বিষয়টি দেখেও প্রশাসন, থানা পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো নীরব ভূমিকা পালণ করেন। অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয়রা। তারা বলেন, ‘আমাদের সব ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শুধু মাত্র অবৈধভাবে ভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে নদী ভাঙছে। এটা প্রতিরোধ না করলে, নদী ভাঙতেই থাকবে আর আমাদের মতো মানুষের সব কিছু হারাতে হবে। তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এটা করে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। আমরা নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ চাই। পাশাপাশি অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা সুলতানা নাসরীনের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লাকে কল করা হলে তিনি বলেন, অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। তবে ইউএনওর টাকা নেয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ