ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

ঘন ঘন লোডশেডিং শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়ছেই

  • আপডেট সময় : ০১:০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক : বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। প্রতিদিন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ছোট-বড় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গত বুধবার পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। প্রতিদিন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ছোট-বড় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গাজীপুরের টঙ্গীর মাজুখানে এক্সক্লুসিভ ক্যান নামের কারখানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রঙের ছোট-বড় ক্যান, আইসক্রিমের বক্স, মবিলের ক্যান, ওষুধের বোতল তৈরি হয়। চলতি মাসের প্রথম আট কর্মদিবসে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে কারখানাটিতে। এ কারণে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে প্রতিষ্ঠানটিকে চালাতে হয় তিনটি জেনারেটর। তাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার কিলোওয়াট। আর তিনটি জেনারেটর চালাতে প্রতি ঘণ্টায় প্রয়োজন হয় প্রায় ১২৭ লিটার ডিজেল। জানতে চাইলে এক্সক্লুসিভ ক্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির প্রথম আলোকে বলেন, গত আগস্ট মাসে জেনারেটরের তেল কিনতে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। চলতি মাসে বিদ্যুতের পরিস্থিতি আরও খারাপ। কারখানা চলাকালে দিনে সর্বনি¤œ দুবার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাতবার লোডশেডিং হচ্ছে। তাতে চলতি মাসে ডিজেল খরচ আরও বাড়বে। সৈয়দ নাসির আরও বলেন, একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। তাতে কর্মঘণ্টার অপচয় হয়। বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। অন্যদিকে ডিজেল কিনতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হচ্ছে। তাই ব্যবসায় মুনাফা করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।এক্সক্লুসিভ ক্যানের মতো দেশের অধিকাংশ শিল্পকারখানা বিদ্যুৎ-সংকটে ধুঁকছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের পর জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। তারপর শুরু হয়েছে লোডশেডিং। পাশাপাশি রয়েছে গ্যাসের সংকটও। দুই সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাতে বেড়ে গেছে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়। এতে লোকসানের আতঙ্ক চোখ রাঙাচ্ছে।
কয়েক মাস আগে থেকেই গ্যাস-সংকটে ভুগছে দেশের গ্যাসনির্ভর সিরামিক, বস্ত্রসহ কয়েকটি শিল্প খাত। তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের সমস্যা। সংকট মোকাবিলায় ১৯ জুলাই থেকে দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ৫ আগস্ট দিবাগত রাতে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। পরে আবার ৫ টাকা কমানো হয়। তারপরও ডিজেলের দাম ৩৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। তাতে লোডশেডিংয়ের মধ্যে উৎপাদন চালাতে ডিজেলের পেছনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।
কাঁচা পাট, পাটের সুতা ও কাপড়ের হোগলা, চামড়া, কলাগাছের বাকল, কচুরিপানাসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে প্রায় ১২ হাজার হস্তজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানি করে ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড। গাজীপুরের পুবাইল ও নরসিংদীর বিসিক শিল্পাঞ্চলে তাদের দুটি কারখানা রয়েছে। লোডশেডিংয়ের মধ্যে উৎপাদন চালাতে গিয়ে কারখানা দুটির জেনারেটরের জন্য গত আগস্টে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত মাসে তার চেয়েও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
এ বিষয়ে ক্রিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি জেনারেটর নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি মেরামত করতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি করতে সরকার একেক এলাকার শিল্পাঞ্চলের জন্য একেক দিন সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করে। আমরাও সেটি মেনে নিয়েছিলাম। তারপরও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কোনো উন্নতির হয়নি।’
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় ফতুল্লা অ্যাপারেলস নামের একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কাজ করেন ৫০০ কর্মী। লোডশেডিংয়ের কারণে ছোট এ কারখানার দৈনিক খরচ দিনে এক লাখ টাকা বেড়ে গেছে। যার পুরোটাই জেনারেটরের তেলের পেছনে খরচ হচ্ছে।
ফতুল্লা অ্যাপারেলসের স্বত্বাধিকারী ফজলে শামীম এহসান বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়েছে। দিনের বেলায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ের সময় ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন সচল রাখতে হচ্ছে। বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস-সংকটে বয়লার চালু রাখতেও বাড়তি খরচ হচ্ছে।
কারখানায় জেনারেটর ব্যবহারের জন্য কম দামে ডিজেল পেতে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। চিঠিতে বলা হয়, লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে তাঁরা জেনারেটর ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ডিজেল বেশি লাগছে। বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম কমেছে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয়ভাবে ডিজেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হলে সবাই উপকৃত হবেন।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। জেনারেটরের তেল কিনতে কিনতে কারখানার মালিকেরা ফতুর হয়ে যাচ্ছেন। তৈরি পোশাকের যা ক্রয়াদেশ আছে, তা-ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ঠিকঠাক উৎপাদন করা যাচ্ছে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটে কারখানাভেদে উৎপাদন কমেছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ।
জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান প্রথম আলোকে বলেন, ডলার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসার খরচ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে করোনাকালের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন করে প্রণোদনা দরকার। সেটি না হলে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার হবে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘন ঘন লোডশেডিং শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়ছেই

আপডেট সময় : ০১:০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২

অর্থনৈতিক ডেস্ক : বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। প্রতিদিন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ছোট-বড় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গত বুধবার পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। প্রতিদিন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ছোট-বড় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গাজীপুরের টঙ্গীর মাজুখানে এক্সক্লুসিভ ক্যান নামের কারখানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রঙের ছোট-বড় ক্যান, আইসক্রিমের বক্স, মবিলের ক্যান, ওষুধের বোতল তৈরি হয়। চলতি মাসের প্রথম আট কর্মদিবসে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে কারখানাটিতে। এ কারণে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে প্রতিষ্ঠানটিকে চালাতে হয় তিনটি জেনারেটর। তাদের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার কিলোওয়াট। আর তিনটি জেনারেটর চালাতে প্রতি ঘণ্টায় প্রয়োজন হয় প্রায় ১২৭ লিটার ডিজেল। জানতে চাইলে এক্সক্লুসিভ ক্যানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির প্রথম আলোকে বলেন, গত আগস্ট মাসে জেনারেটরের তেল কিনতে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। চলতি মাসে বিদ্যুতের পরিস্থিতি আরও খারাপ। কারখানা চলাকালে দিনে সর্বনি¤œ দুবার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাতবার লোডশেডিং হচ্ছে। তাতে চলতি মাসে ডিজেল খরচ আরও বাড়বে। সৈয়দ নাসির আরও বলেন, একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে পুনরায় উৎপাদন শুরু করতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। তাতে কর্মঘণ্টার অপচয় হয়। বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। অন্যদিকে ডিজেল কিনতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হচ্ছে। তাই ব্যবসায় মুনাফা করাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।এক্সক্লুসিভ ক্যানের মতো দেশের অধিকাংশ শিল্পকারখানা বিদ্যুৎ-সংকটে ধুঁকছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, ডলারের পর জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। তারপর শুরু হয়েছে লোডশেডিং। পাশাপাশি রয়েছে গ্যাসের সংকটও। দুই সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং প্রকট আকার ধারণ করেছে। তাতে বেড়ে গেছে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়। এতে লোকসানের আতঙ্ক চোখ রাঙাচ্ছে।
কয়েক মাস আগে থেকেই গ্যাস-সংকটে ভুগছে দেশের গ্যাসনির্ভর সিরামিক, বস্ত্রসহ কয়েকটি শিল্প খাত। তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের সমস্যা। সংকট মোকাবিলায় ১৯ জুলাই থেকে দেশজুড়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ৫ আগস্ট দিবাগত রাতে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। পরে আবার ৫ টাকা কমানো হয়। তারপরও ডিজেলের দাম ৩৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। তাতে লোডশেডিংয়ের মধ্যে উৎপাদন চালাতে ডিজেলের পেছনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।
কাঁচা পাট, পাটের সুতা ও কাপড়ের হোগলা, চামড়া, কলাগাছের বাকল, কচুরিপানাসহ বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করে প্রায় ১২ হাজার হস্তজাত পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানি করে ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড। গাজীপুরের পুবাইল ও নরসিংদীর বিসিক শিল্পাঞ্চলে তাদের দুটি কারখানা রয়েছে। লোডশেডিংয়ের মধ্যে উৎপাদন চালাতে গিয়ে কারখানা দুটির জেনারেটরের জন্য গত আগস্টে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত মাসে তার চেয়েও ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
এ বিষয়ে ক্রিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে। দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি জেনারেটর নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি মেরামত করতে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি করতে সরকার একেক এলাকার শিল্পাঞ্চলের জন্য একেক দিন সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করে। আমরাও সেটি মেনে নিয়েছিলাম। তারপরও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির কোনো উন্নতির হয়নি।’
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় ফতুল্লা অ্যাপারেলস নামের একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় কাজ করেন ৫০০ কর্মী। লোডশেডিংয়ের কারণে ছোট এ কারখানার দৈনিক খরচ দিনে এক লাখ টাকা বেড়ে গেছে। যার পুরোটাই জেনারেটরের তেলের পেছনে খরচ হচ্ছে।
ফতুল্লা অ্যাপারেলসের স্বত্বাধিকারী ফজলে শামীম এহসান বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়েছে। দিনের বেলায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ের সময় ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন সচল রাখতে হচ্ছে। বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস-সংকটে বয়লার চালু রাখতেও বাড়তি খরচ হচ্ছে।
কারখানায় জেনারেটর ব্যবহারের জন্য কম দামে ডিজেল পেতে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। চিঠিতে বলা হয়, লোডশেডিংয়ের কারণে কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে তাঁরা জেনারেটর ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ডিজেল বেশি লাগছে। বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম কমেছে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয়ভাবে ডিজেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হলে সবাই উপকৃত হবেন।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। জেনারেটরের তেল কিনতে কিনতে কারখানার মালিকেরা ফতুর হয়ে যাচ্ছেন। তৈরি পোশাকের যা ক্রয়াদেশ আছে, তা-ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ঠিকঠাক উৎপাদন করা যাচ্ছে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকটে কারখানাভেদে উৎপাদন কমেছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ।
জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান প্রথম আলোকে বলেন, ডলার ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটের কারণে ব্যবসার খরচ ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে করোনাকালের মতো ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন করে প্রণোদনা দরকার। সেটি না হলে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার হবে না।