ঢাকা ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

ঘটনাবহুল ২০২৩ শেষ হলো রাজনৈতিক শঙ্কায়

  • আপডেট সময় : ০১:১০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩, বেশ চ্যালেঞ্জের ছিল আওয়ামী লীগের। বিশেষ করে, কী হবে নির্বাচনকে ঘিরে? এমন শঙ্কা ছিল প্রকট। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ-সমঝোতা, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা করা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ ছিল। এসব মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ তার পথ মসৃণ করলেও থেকে গেছে শঙ্কা। কী হবে নির্বাচনের পরে? অর্থনৈতিক স্যাংশনস (নিষেধাজ্ঞা) বা নাকি অন্য কিছু? এমন শঙ্কার মধ্যে বছর শেষ করছে ক্ষমতাসীন দল।
২০২৩ সালকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছেন। সংকট, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রত্যয় নিয়েই দলটি বছর শুরু করে। ঘটনাবহুল এ বছরটি শঙ্কা নিয়ে শুরু হয়ে শঙ্কার মধ্যদিয়েই শেষ হচ্ছে।
আলোচনায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: বছরের শুরুতে আলোচনায় আসে দেশের সর্বোচ্চ অভিভাবক রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২৩ এপ্রিল তিনি মেয়াদ পূর্ণ করেন। এক মাস আগেই এ পদে নির্বাচন হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ বেশ গোপনীয়তার মধ্যেই মনোনয়ন দেয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. সাহাবুদ্দিনকে। নানা প্রক্রিয়া শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।
প্রথমার্ধে ঝুলেছে ‘সংলাপ-সমঝোতার’ মুলা: নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন— ‘একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার যা কিছু করার, আমি তা করবো।’ এর মধ্যদিয়ে সংলাপ-সমঝোতার আলোচনা উঠে আসে। বিশিষ্টজনেরা মনে করেছিলেন, সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় যাবে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। অবশ্য, দীর্ঘদিন এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চললেও বড় দুই দলের অনাগ্রহে বা নানা শর্তের বেড়াজালে দেখা যায়নি সংলাপের আলো। হয়নি সমঝোতা।
মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়েছে সিটি নির্বাচন: বছরের মাঝামাঝি সময়ে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও উত্তাপ ছাড়িয়েছে। সিলেটে বিএনপির মেয়র আরিফুল হকের অংশ নেওয়া, না নেওয়ার নিয়ে আলোচনা ছিল বেশ তুঙ্গে। বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর ওপর হামলা রাজনীতিতে বেকায়দায় ফেলেছে আওয়ামী লীগকে। গাজীপুরে জাহাঙ্গীরেই পরাস্ত হয়েছে দলটি। এসব মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচনেও এমন পরিস্থিতি হয় কিনা শঙ্কা ছিল দলটির। সেই শঙ্কাই সত্য হলো। সারাদেশের দলের বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশ চাপে ফেলেছে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী আওয়ামী লীগকে।
ভিসানীতি ছড়িয়েছে আতঙ্ক: বছরের শেষার্ধে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন ভিসানীতি রাজনীতিতে এত গুমোটভাব এনে দিয়েছে। এতে বিরোধী শিবিরে ঈদের খুশি নামলেও আওয়ামী লীগ আছে বেশ চাপে। বিশেষ করে যাদের স্ত্রী-সন্তান বিদেশে সেসব নেতা ও কর্মকর্তা পড়েছেন বিপাকে। দুশ্চিন্তায় নানা মহলে যোগাযোগ করতেও দেখা গেছে অনেককে।
তিনমাস মাঠে ছিল ‘ভোগান্তি’র পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: দেশ ও বিভাগের কর্মসূচি শেষ করে আগস্ট থেকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে জোরেশোরে নামে বিএনপি। সেপ্টেম্বর হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত মাঠে ছিল তারা। নানা শঙ্কার মধ্যেও আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বেশ ভীতির পরিবেশ তৈরি করলেও শান্ত ছিল মাঠ। রাজপথে ভোগান্তিতে ছিল জনসাধারণ।
২৮ অক্টোবর ঘিরে উত্তাপ: এরই মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঘিরে কর্মসূচি দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পথ প্রশস্ত করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। নানাজনের শঙ্কাকে সত্য প্রমাণিত করে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ এর মতোই প্রকাশ্যে মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছে। মানবসেবার রাজনীতিকে মানব হত্যার দিকে ধাবিত করলো ফের। সেদিনকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশসহ কয়েকজন নিহত হয়। আহত হয় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। এর মধ্যদিয়ে সমঝোতার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে একমুখী রাজনীতির পথ তৈরি হয়। সে থেকে বিএনপিবিহীন মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে আগ্রহ: কেমন হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার? কী হবে কাঠামো? অনেক চেষ্টা করেও এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়নি গণমাধ্যমগুলো। বস্তুত, অতীতে সব অভিজ্ঞতা বাদ দিয়ে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক সরকার গঠন করেনি ক্ষমতাসীনরা। বর্তমান সরকার নিয়মিত দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে নির্বাচনকালীন সময় পার করছে।
জোট-মহাজোট নিয়ে যত নাটক: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য দলগতভাবে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র উন্মুক্ত করে দিয়ে যেমন নিজেদের ক্ষতি করছে। একইভাবে ১৪ দলীয় জোট শরিক ও মহাজোট শরিকদের আসন বণ্টন নিয়ে নানা নাটকীয়তা করে ভেতরে ক্ষোভের তৈরি করেছে। এবার ১৪ দলীয় জোটকে আসন কমিয়ে মাত্র ৬টি ছেড়েছে। মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টিকে দিয়েছে ২৬টি। এ নিয়ে একতরফা বা একমুখী নির্বাচনের বিষয়টি পরিষ্কারের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এদিকে, শরিকরা নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা চাইলেও স্বতন্ত্রে আটকে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কারা হবে আগামী সংসদে বিরোধী দল? কারণ আওয়ামী লীগের পরে আগামী সংসদে এককভাবে কারো ৩০ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। জাতীয় পার্টি, ১৪ দল শরিক ও অন্যান্যরা ভোটে জয়ের শঙ্কা কম।
কী হবে নির্বাচনের পরে? বা শঙ্কা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার: নানা ঘটনা আর ইস্যুর মধ্যদিয়ে বছর পার করলেও শঙ্কা রয়েছে জনমনে। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেও ভয় রয়েছে, কী হবে নির্বাচনের পর? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না বা গার্মেন্টস সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে কি না এ নিয়ে বেশ শঙ্কা রয়েই গেছে। যদিও প্রকাশ্যে তারা তা দেখাচ্ছেন না। এর বাইরেও নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দ্রব্যমূল্য বেশ ভোগাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটিকে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লাগামহীন অবস্থাও তাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে। বিশেষ করে, একটি বিশেষ গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি ব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বেশ শঙ্কার জন্ম দিয়েছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঘটনাবহুল ২০২৩ শেষ হলো রাজনৈতিক শঙ্কায়

আপডেট সময় : ০১:১০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩, বেশ চ্যালেঞ্জের ছিল আওয়ামী লীগের। বিশেষ করে, কী হবে নির্বাচনকে ঘিরে? এমন শঙ্কা ছিল প্রকট। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ-সমঝোতা, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন, বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলা করা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ ছিল। এসব মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগ তার পথ মসৃণ করলেও থেকে গেছে শঙ্কা। কী হবে নির্বাচনের পরে? অর্থনৈতিক স্যাংশনস (নিষেধাজ্ঞা) বা নাকি অন্য কিছু? এমন শঙ্কার মধ্যে বছর শেষ করছে ক্ষমতাসীন দল।
২০২৩ সালকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছেন। সংকট, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রত্যয় নিয়েই দলটি বছর শুরু করে। ঘটনাবহুল এ বছরটি শঙ্কা নিয়ে শুরু হয়ে শঙ্কার মধ্যদিয়েই শেষ হচ্ছে।
আলোচনায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: বছরের শুরুতে আলোচনায় আসে দেশের সর্বোচ্চ অভিভাবক রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২৩ এপ্রিল তিনি মেয়াদ পূর্ণ করেন। এক মাস আগেই এ পদে নির্বাচন হয়। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ বেশ গোপনীয়তার মধ্যেই মনোনয়ন দেয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. সাহাবুদ্দিনকে। নানা প্রক্রিয়া শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।
প্রথমার্ধে ঝুলেছে ‘সংলাপ-সমঝোতার’ মুলা: নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিয়েই বলেছিলেন— ‘একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমার যা কিছু করার, আমি তা করবো।’ এর মধ্যদিয়ে সংলাপ-সমঝোতার আলোচনা উঠে আসে। বিশিষ্টজনেরা মনে করেছিলেন, সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় যাবে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। অবশ্য, দীর্ঘদিন এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চললেও বড় দুই দলের অনাগ্রহে বা নানা শর্তের বেড়াজালে দেখা যায়নি সংলাপের আলো। হয়নি সমঝোতা।
মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়েছে সিটি নির্বাচন: বছরের মাঝামাঝি সময়ে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও উত্তাপ ছাড়িয়েছে। সিলেটে বিএনপির মেয়র আরিফুল হকের অংশ নেওয়া, না নেওয়ার নিয়ে আলোচনা ছিল বেশ তুঙ্গে। বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর ওপর হামলা রাজনীতিতে বেকায়দায় ফেলেছে আওয়ামী লীগকে। গাজীপুরে জাহাঙ্গীরেই পরাস্ত হয়েছে দলটি। এসব মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচনেও এমন পরিস্থিতি হয় কিনা শঙ্কা ছিল দলটির। সেই শঙ্কাই সত্য হলো। সারাদেশের দলের বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশ চাপে ফেলেছে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী আওয়ামী লীগকে।
ভিসানীতি ছড়িয়েছে আতঙ্ক: বছরের শেষার্ধে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন ভিসানীতি রাজনীতিতে এত গুমোটভাব এনে দিয়েছে। এতে বিরোধী শিবিরে ঈদের খুশি নামলেও আওয়ামী লীগ আছে বেশ চাপে। বিশেষ করে যাদের স্ত্রী-সন্তান বিদেশে সেসব নেতা ও কর্মকর্তা পড়েছেন বিপাকে। দুশ্চিন্তায় নানা মহলে যোগাযোগ করতেও দেখা গেছে অনেককে।
তিনমাস মাঠে ছিল ‘ভোগান্তি’র পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: দেশ ও বিভাগের কর্মসূচি শেষ করে আগস্ট থেকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজধানীতে জোরেশোরে নামে বিএনপি। সেপ্টেম্বর হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত মাঠে ছিল তারা। নানা শঙ্কার মধ্যেও আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল। দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বেশ ভীতির পরিবেশ তৈরি করলেও শান্ত ছিল মাঠ। রাজপথে ভোগান্তিতে ছিল জনসাধারণ।
২৮ অক্টোবর ঘিরে উত্তাপ: এরই মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঘিরে কর্মসূচি দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পথ প্রশস্ত করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। নানাজনের শঙ্কাকে সত্য প্রমাণিত করে ২৮ অক্টোবর ২০০৬ এর মতোই প্রকাশ্যে মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছে। মানবসেবার রাজনীতিকে মানব হত্যার দিকে ধাবিত করলো ফের। সেদিনকার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশসহ কয়েকজন নিহত হয়। আহত হয় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। এর মধ্যদিয়ে সমঝোতার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে একমুখী রাজনীতির পথ তৈরি হয়। সে থেকে বিএনপিবিহীন মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে আগ্রহ: কেমন হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার? কী হবে কাঠামো? অনেক চেষ্টা করেও এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়নি গণমাধ্যমগুলো। বস্তুত, অতীতে সব অভিজ্ঞতা বাদ দিয়ে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক সরকার গঠন করেনি ক্ষমতাসীনরা। বর্তমান সরকার নিয়মিত দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে নির্বাচনকালীন সময় পার করছে।
জোট-মহাজোট নিয়ে যত নাটক: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য দলগতভাবে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র উন্মুক্ত করে দিয়ে যেমন নিজেদের ক্ষতি করছে। একইভাবে ১৪ দলীয় জোট শরিক ও মহাজোট শরিকদের আসন বণ্টন নিয়ে নানা নাটকীয়তা করে ভেতরে ক্ষোভের তৈরি করেছে। এবার ১৪ দলীয় জোটকে আসন কমিয়ে মাত্র ৬টি ছেড়েছে। মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টিকে দিয়েছে ২৬টি। এ নিয়ে একতরফা বা একমুখী নির্বাচনের বিষয়টি পরিষ্কারের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এদিকে, শরিকরা নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা চাইলেও স্বতন্ত্রে আটকে দেওয়া হয়েছে। যার কারণে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কারা হবে আগামী সংসদে বিরোধী দল? কারণ আওয়ামী লীগের পরে আগামী সংসদে এককভাবে কারো ৩০ আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। জাতীয় পার্টি, ১৪ দল শরিক ও অন্যান্যরা ভোটে জয়ের শঙ্কা কম।
কী হবে নির্বাচনের পরে? বা শঙ্কা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার: নানা ঘটনা আর ইস্যুর মধ্যদিয়ে বছর পার করলেও শঙ্কা রয়েছে জনমনে। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যেও ভয় রয়েছে, কী হবে নির্বাচনের পর? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসবে কি না বা গার্মেন্টস সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে কি না এ নিয়ে বেশ শঙ্কা রয়েই গেছে। যদিও প্রকাশ্যে তারা তা দেখাচ্ছেন না। এর বাইরেও নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দ্রব্যমূল্য বেশ ভোগাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটিকে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো লাগামহীন অবস্থাও তাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে। বিশেষ করে, একটি বিশেষ গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন কয়েকটি ব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বেশ শঙ্কার জন্ম দিয়েছে।