ঢাকা ০৭:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

গ্লাস দোকানের কর্মচারী থেকে ভয়ংকর অপরাধী

  • আপডেট সময় : ০১:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ সুমন। একসময় কেরানীগঞ্জে গ্লাসের দোকানে কাজ করতেন। কারো সঙ্গে বনিবনা না হলেই গ্লাসের টুকরো বা ভাঙা অংশ দিয়ে যাকে তাকে আক্রমণ করতেন। এই থেকে এলাকায় তার নাম হয়ে যায় ‘গ্লাস সুমন’। পরে কেরানীগঞ্জে গড়ে তোলেন মাদক ও সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। যার নাম দেওয়া হয় ‘গ্লাস কোম্পানি’। এই গ্রুপের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন সুমন। সম্প্রতি তার দলের কয়েক সদস্যকে মাদকসহ ধরিয়ে দেওয়ায় পুলিশের সোর্স নুরে আলম সায়মনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সুমন বাহিনী। সায়মন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।
হত্যার ঘটনায় গতকাল সোমবার সুমন গ্রুপের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বাহিনীটির দাবি, পুলিশকে মাদক কারবারিদের তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তার করানোয় কেরানীগঞ্জের নুরে আলম সায়মনকে হত্যা করা হয়। হত্যার শিকার সায়মন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সুমন ওরফে গ্লাস সুমন, তার সহযোগী সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, শরীফ ওরফে গরীব শরীফ, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি ও হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কিছুদিন আগে সায়মনের তথ্যে কয়েকজন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারবারিরা কেরানীগঞ্জের মাদক সিন্ডিকেট গ্লাস কোম্পানি নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপের প্রধান সুমন ওরফে গ্লাস সুমন। তার দলের লোকজন গ্রেপ্তার হওয়ায় সায়মনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন সুমন। ১৫ জানুয়ারি সায়মনকে শিক্ষা দিতে পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী সায়মনকে মোবাইল ফোনে কেরানীগঞ্জের মুক্তিরবাগ এলাকায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যায় সরাসরি গ্লাস সুমন ছাড়াও গ্রেপ্তার বাকি সদস্যরা অংশ নেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নিহত সায়মনের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট। এই ঘটনায় তার ভাই আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১০। পরে পৃথক অভিযানে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
যেভাবে সায়মনকে হত্যা : দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে ডেকে এনেই অতর্কিতভাবে সায়মনের হাত পায়ের রগ কাটাসহ তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সুমনের নেতৃত্বে এই হত্যাকা- চলে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে সায়মনকে হাসপাতালে নেয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গ্রেপ্তার গ্লাস সুমন হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী। সেই হত্যার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হত্যার ঘটনা ঘটানোর সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং নিজে ভিকটিমের রগ কাটেন। এছাড়া লম্বু সোহাগ ও শরীফ রগ কাটায় অংশগ্রহণ করেন এবং জনি ও গ্লাস সুমন ধরে রাখেন।
যেভাবে নাম গ্লাস সুমন : সুমন ওরফে গ্লাস সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। সুমন একটি গ্লাসের দোকানে কাজ করতেন এবং ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করতেন। এই কারণে এলাকায় তার নাম গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পায়। লম্বু সোহাগ, হর্স পাওয়ার জনি এবং হারুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গ্লাস দোকানের কর্মচারী থেকে ভয়ংকর অপরাধী

আপডেট সময় : ০১:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ সুমন। একসময় কেরানীগঞ্জে গ্লাসের দোকানে কাজ করতেন। কারো সঙ্গে বনিবনা না হলেই গ্লাসের টুকরো বা ভাঙা অংশ দিয়ে যাকে তাকে আক্রমণ করতেন। এই থেকে এলাকায় তার নাম হয়ে যায় ‘গ্লাস সুমন’। পরে কেরানীগঞ্জে গড়ে তোলেন মাদক ও সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। যার নাম দেওয়া হয় ‘গ্লাস কোম্পানি’। এই গ্রুপের প্রধান হিসেবে কাজ করতেন সুমন। সম্প্রতি তার দলের কয়েক সদস্যকে মাদকসহ ধরিয়ে দেওয়ায় পুলিশের সোর্স নুরে আলম সায়মনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সুমন বাহিনী। সায়মন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।
হত্যার ঘটনায় গতকাল সোমবার সুমন গ্রুপের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বাহিনীটির দাবি, পুলিশকে মাদক কারবারিদের তথ্য দিয়ে গ্রেপ্তার করানোয় কেরানীগঞ্জের নুরে আলম সায়মনকে হত্যা করা হয়। হত্যার শিকার সায়মন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সুমন ওরফে গ্লাস সুমন, তার সহযোগী সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, শরীফ ওরফে গরীব শরীফ, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি ও হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কিছুদিন আগে সায়মনের তথ্যে কয়েকজন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারবারিরা কেরানীগঞ্জের মাদক সিন্ডিকেট গ্লাস কোম্পানি নামে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপের প্রধান সুমন ওরফে গ্লাস সুমন। তার দলের লোকজন গ্রেপ্তার হওয়ায় সায়মনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন সুমন। ১৫ জানুয়ারি সায়মনকে শিক্ষা দিতে পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী সায়মনকে মোবাইল ফোনে কেরানীগঞ্জের মুক্তিরবাগ এলাকায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যায় সরাসরি গ্লাস সুমন ছাড়াও গ্রেপ্তার বাকি সদস্যরা অংশ নেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নিহত সায়মনের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট। এই ঘটনায় তার ভাই আরস আলম কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১০। পরে পৃথক অভিযানে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
যেভাবে সায়মনকে হত্যা : দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে ডেকে এনেই অতর্কিতভাবে সায়মনের হাত পায়ের রগ কাটাসহ তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে সুমনের নেতৃত্বে এই হত্যাকা- চলে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে সায়মনকে হাসপাতালে নেয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গ্রেপ্তার গ্লাস সুমন হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী। সেই হত্যার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হত্যার ঘটনা ঘটানোর সময় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং নিজে ভিকটিমের রগ কাটেন। এছাড়া লম্বু সোহাগ ও শরীফ রগ কাটায় অংশগ্রহণ করেন এবং জনি ও গ্লাস সুমন ধরে রাখেন।
যেভাবে নাম গ্লাস সুমন : সুমন ওরফে গ্লাস সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। সুমন একটি গ্লাসের দোকানে কাজ করতেন এবং ভাঙা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করতেন। এই কারণে এলাকায় তার নাম গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পায়। লম্বু সোহাগ, হর্স পাওয়ার জনি এবং হারুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।