প্রত্যাশা ডেস্ক: লিবিয়া থেকে সাগরপথে গ্রিসের উদ্দেশে যাত্রা করা একদল বাংলাদেশি ‘পেট্রোল পান’ করার পর দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, প্রায় দুই দিন খাবার না পেয়ে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত অবস্থায় ‘পানি ভেবে’ বোতলে থাকা ‘পেট্রোল পান’ করেন তারা। তাতে দুজনের প্রাণহানির ছাড়াও চারজন গুরুতর অসুস্থ হন। তাদের মধ্যে একজনের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৮ নভেম্বর গ্রিসের ক্রিত আইল্যান্ডের একটি হাসপাতালের ফোন কলে ওই বাংলাদেশিদের বিষয়ে জানতে পারে দূতাবাস। ফোনে জানানো হয়, ২৬ নভেম্বর ছোট নৌকায় লিবিয়া থেকে গ্রিসের উদ্দেশে রওনা হন ৪০ বাংলাদেশি। মাঝ সাগরে তাদের বহনকারী প্লাস্টিকের নৌকা ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে। পথে তাদের কাছে কোনো খাবার ছিল না। প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তারা ‘পানি ভেবে’ পেট্রোল পান করেন।
এরপর তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্রিত আইল্যান্ডের ভেনিজেলিও ও পেপাগিনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়। বাকিদের মালাকাসা ক্যাম্পে পাঠানোর কথা দূতাবাসকে বলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দূতাবাস বলছে, গত ২ ডিসেম্বর ভেনিজেলো হাসপাতাল গিয়ে দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগম অসুস্থ বাংলাদেশিদের খোঁজখবর নেন। এ সময় অসুস্থ বাংলাদেশিরা জানান, তাদের কাছে কোনো অর্থকড়ি নেই, নেই পরার পোশাকও। পরে তাদের কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এরপর দূতাবাসের তরফে পেপাগিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করে মৃত দুজনের ছবি প্রবাসীদের কমিউনিটিতে পাঠানো হয়। এরপর একজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে দূতাবাস জানালেও তার নাম-পরিচয় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
মৃতদের লাশ দেশে পাঠানোর বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর ইরাপেত্রা বন্দরের সঙ্গে দূতাবাস বৈঠক করেছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বন্দর কর্তৃপক্ষ গ্রিক আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরে মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে।
গ্রিসে সাগরপথে আসা ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ মন্তব্য করে দূতাবাস বলছে, নতুন অভিবাসন আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে গ্রিসে এসে অবস্থানের কোনো সুযোগ নেই। সেই সঙ্গে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধানও রয়েছে।
এসি/আপ্র/১৩/১২/২০২৫




















