ঢাকা ১২:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্বপ্ন বাস্তবায়নে হালিমা টেলিকম 

গ্রামের নারীরা তৈরি করছেন মোবাইল ফোন

  • আপডেট সময় : ০৯:৩৯:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: চারদিকে সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশ। ফসলি জমিতে ধানগাছের প্রাকৃতিক মনোলোভার মাঝেই গড়ে উঠেছে হালিমা টেলিকম নামের একটি মোবাইল ফোন তৈরি কারখানা। এই কারখানায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মোবাইল তৈরি করছেন নারীরা।
হালিমা টেলিকম নামের প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পিয়ারাতলী এলাকায় অবস্থিত। এখানে কর্মরত দুই শতাধিক নারী শ্রমিক। যাদের সিংহভাগই এসএসসির গণ্ডিও পেরোতে পারেননি।
কুমিল্লা শহর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার উত্তরে গোমতী নদীর ওপর দিয়ে ফকির বাজার, মাঝিগাছা পেরিয়ে গেলেই পিয়ারাতলী গ্রাম। আশপাশের এলাকার সম্ভবনাময় নারীদের জন্য হালিমা হাইটেক পার্কের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে মোবাইল ফোন তৈরির এই কারখানা। যেখানে নারীদের হাত দিয়ে প্রতিদিন শতশত মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে।
একটি মোবাইলের প্রায় ৩০টি যন্ত্রণাংশ। যার নামও অনেকের অজানা। গ্রামের নারীরা এই যন্ত্রাংশগুলোকে সমন্বয় করে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিচ্ছেন মোবাইল ফোনে। এসব নারীদের অনেকেই যারা আগে ঘর ঘোচানোর কাজে ব্যস্ত থাকতেন, তাদের হাত দিয়ে তৈরি হচ্ছে মোবাইল ফোন। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এক সম্ভাবনাময় বাজার সৃষ্টি করেছে। কুমিল্লার উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর ২০২২ সালে পিয়ারাতলী এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে হালিমা টেলিকম নামে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০২১ সালে করোনা-পরবর্তী সময়ে মোবাইল ফোন উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর কুমিল্লার মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা। একসময় তিনি হোটেলবয়ের কাজ করেন। দীর্ঘ সংগ্রামের পর এখন তিনি পাঁচ-ছয়টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়েছেন। যাতে শতশত মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্ট জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে হালিমা টেলিকম মোবাইল তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে নারী শ্রমিকদের কর্মচঞ্চলতা।
কোনো কোনো নারী চেক করছেন মাদারবোর্ড, কেউ আবার সেট করছেন মোবাইলের আইএমইআই। কেউ লাগাচ্ছেন ফোনের ডেট লেভেল, এলসিডি, এলসিডি লেন্স, কী প্যাড, আপ হাউজিং, ব্যাক হাউজিং, স্পিকার নেট। অনেককে দেখা গেছে প্যাকিংয়ে। চীন থেকে আমদানি করা এসব মোবাইল পার্টসকে একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ মোবাইলে রূপ দেওয়ায় দারুণ অভিজ্ঞ এখানকার নারীরা।
১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কাজ ও অভিজ্ঞতা ভেদে ৪০-৫০ হাজার টাকাও মাসিক বেতন পাচ্ছেন এসব নারী শ্রমিকরা। হালিমা গ্রুপের হালিমা হাইটেক মোবাইল তৈরির এ কারখানায় কাজ শেখে নারীরা নিজেরাও এখন বাড়িতে বসে বসে মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বানানোর কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। প্রযুক্তি খাতে নারীদের এই অংশগ্রহণ যেমন কর্মসংস্থানের নতুন দুয়ার খুলেছে, তেমনি এগিয়ে নিচ্ছে দেশের শিল্প খাতকে।
সখিনা আক্তার নামের এক নারী শ্রমিক বলেন, আমি গত তিন বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এখানে এসে তিন মাসের মধ্যেই মোবাইল তৈরির কাজ শিখেছি। আমাদের স্যাররা হাতেকলমে এই কাজ শিখিয়েছেন। লুনা আক্তার নামের এক মোবাইল শ্রমিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোবাইল তৈরির কাজ খুবই সহজ। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে কম সময়ের মধ্যে এই কাজ শেখা যায়। সামিয়া নামের এক মোবাইল কারিগর বলেন, দুই বছর ধরে এখানে কাজ করছি। বাড়ির পাশে কর্মসংস্থান পেয়ে আমরা খুশি। এখান থেকে আয় করে সংসার চালাচ্ছি।
স্বল্প শিক্ষিত এসব নারীদের মোবাইল তৈরির কারিগর বানাতে ভূমিকা রয়েছে কয়েকজন টেকনিশিয়ানের। একজন নারীকে মোবাইল ফোন তৈরিতে দক্ষ করে তুলতে দুই থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগে তাদের।
হালিমা হাইটেক পার্কের প্রোডাকশন হেড মিজানুর রহমান বলেন, মোবাইলের যন্ত্রাংশগুলো চায়না থেকে আনা হয়। এসব যন্ত্রাংশ বসানোর জন্য একেক নারীর কাঁধে একেক দায়িত্ব। ধরেন কেউ ডিসপ্লে বসাচ্ছেন। এই কাজটা যখন দিনের পর দিন করেন, তখন এমনিতেই সে দক্ষ হয়ে ওঠে। এমন করে প্রতিটি পার্টসের কাজ আলাদাভাবে করা হয়। যার কারণে সহজেই মোবাইল তৈরিতে অভিজ্ঞ হয়ে উঠছেন নারীরা।
হালিমা টেলিকম মোবাইল কারখানার প্যাকিং এক্সিকিউটিভ মেহেদী হাসান বলেন, নারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগে দক্ষ করে তোলা হয়। তারপর তাদের মোবাইল তৈরির পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া হয়। কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ ওমর হাসান বলেন, আমাদের কোম্পানির চেয়ারম্যান স্যারের স্বপ্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের কর্মসংস্থান করা। তাই তিনি এখানে এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। শুধু প্রতিষ্ঠানই নয়, এই কারখানায় আসা-যাওয়ার যে সড়কটি ছিল, এটি তিনি নিজ অর্থায়নে পাকা করেছেন। এই কারখানার ফলে এখানকার নারীদের জীবনযাত্রার মান বদলে গেছে।
কুমিল্লার নারীদের হাতে তৈরি এসব মোবাইল ইতোমধ্যে দেশীয় বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে হালিমা টেলিকম। এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন একজন মানুষ উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর। তার লক্ষ্য শুধু একটি কারখানা গড়ে তোলা নয়, বরং নারীদের প্রযুক্তি খাতে সম্পৃক্ত করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করা। হালিমা হাইটেক পার্কের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর বলেন, আমি খুব সংগ্রাম করে আজকে কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে শতশত মানুষের কর্মসংস্থান করেছি। এটা এত সহজ ছিল না। অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। আমরা শুধু মোবাইল ফোনই নয়। আমাদের এখন পাঁচটি কোম্পানি। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রিক পণ্য, মোবাইলের ব্যাটারি, চার্জার, হেডফোন, পাওয়ার ব্যাংকও উৎপাদন করছি। আমার লক্ষ্য আমার নিজ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখা। আজকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ১৪০০ লোক আমার এখানে কাজ করছেন। এই লোকগুলো এখানে কাজ করে তাদের সংসার চালাচ্ছেন। অবহেলিত, পরিবারের বোঝা যেসব নারী ছিল, তারা এখন মোবাইল ফোন তৈরি করছেন। এটা অনেক বড় আনন্দের। কুমিল্লার এসব কর্মবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে আমার আরো অনেক স্বপ্ন আছে। আমি সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছি।
সানা/আপ্র/১৭/১০/২০২৫

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্বপ্ন বাস্তবায়নে হালিমা টেলিকম 

গ্রামের নারীরা তৈরি করছেন মোবাইল ফোন

আপডেট সময় : ০৯:৩৯:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
প্রত্যাশা ডেস্ক: চারদিকে সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশ। ফসলি জমিতে ধানগাছের প্রাকৃতিক মনোলোভার মাঝেই গড়ে উঠেছে হালিমা টেলিকম নামের একটি মোবাইল ফোন তৈরি কারখানা। এই কারখানায় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে মোবাইল তৈরি করছেন নারীরা।
হালিমা টেলিকম নামের প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পিয়ারাতলী এলাকায় অবস্থিত। এখানে কর্মরত দুই শতাধিক নারী শ্রমিক। যাদের সিংহভাগই এসএসসির গণ্ডিও পেরোতে পারেননি।
কুমিল্লা শহর থেকে ১০-১২ কিলোমিটার উত্তরে গোমতী নদীর ওপর দিয়ে ফকির বাজার, মাঝিগাছা পেরিয়ে গেলেই পিয়ারাতলী গ্রাম। আশপাশের এলাকার সম্ভবনাময় নারীদের জন্য হালিমা হাইটেক পার্কের মাধ্যমে গড়ে উঠেছে মোবাইল ফোন তৈরির এই কারখানা। যেখানে নারীদের হাত দিয়ে প্রতিদিন শতশত মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে।
একটি মোবাইলের প্রায় ৩০টি যন্ত্রণাংশ। যার নামও অনেকের অজানা। গ্রামের নারীরা এই যন্ত্রাংশগুলোকে সমন্বয় করে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিচ্ছেন মোবাইল ফোনে। এসব নারীদের অনেকেই যারা আগে ঘর ঘোচানোর কাজে ব্যস্ত থাকতেন, তাদের হাত দিয়ে তৈরি হচ্ছে মোবাইল ফোন। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য এক সম্ভাবনাময় বাজার সৃষ্টি করেছে। কুমিল্লার উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর ২০২২ সালে পিয়ারাতলী এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে হালিমা টেলিকম নামে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০২১ সালে করোনা-পরবর্তী সময়ে মোবাইল ফোন উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর কুমিল্লার মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা। একসময় তিনি হোটেলবয়ের কাজ করেন। দীর্ঘ সংগ্রামের পর এখন তিনি পাঁচ-ছয়টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়েছেন। যাতে শতশত মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্ট জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে হালিমা টেলিকম মোবাইল তৈরির কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে নারী শ্রমিকদের কর্মচঞ্চলতা।
কোনো কোনো নারী চেক করছেন মাদারবোর্ড, কেউ আবার সেট করছেন মোবাইলের আইএমইআই। কেউ লাগাচ্ছেন ফোনের ডেট লেভেল, এলসিডি, এলসিডি লেন্স, কী প্যাড, আপ হাউজিং, ব্যাক হাউজিং, স্পিকার নেট। অনেককে দেখা গেছে প্যাকিংয়ে। চীন থেকে আমদানি করা এসব মোবাইল পার্টসকে একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ মোবাইলে রূপ দেওয়ায় দারুণ অভিজ্ঞ এখানকার নারীরা।
১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কাজ ও অভিজ্ঞতা ভেদে ৪০-৫০ হাজার টাকাও মাসিক বেতন পাচ্ছেন এসব নারী শ্রমিকরা। হালিমা গ্রুপের হালিমা হাইটেক মোবাইল তৈরির এ কারখানায় কাজ শেখে নারীরা নিজেরাও এখন বাড়িতে বসে বসে মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বানানোর কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। প্রযুক্তি খাতে নারীদের এই অংশগ্রহণ যেমন কর্মসংস্থানের নতুন দুয়ার খুলেছে, তেমনি এগিয়ে নিচ্ছে দেশের শিল্প খাতকে।
সখিনা আক্তার নামের এক নারী শ্রমিক বলেন, আমি গত তিন বছর ধরে এখানে কাজ করছি। এখানে এসে তিন মাসের মধ্যেই মোবাইল তৈরির কাজ শিখেছি। আমাদের স্যাররা হাতেকলমে এই কাজ শিখিয়েছেন। লুনা আক্তার নামের এক মোবাইল শ্রমিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোবাইল তৈরির কাজ খুবই সহজ। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে কম সময়ের মধ্যে এই কাজ শেখা যায়। সামিয়া নামের এক মোবাইল কারিগর বলেন, দুই বছর ধরে এখানে কাজ করছি। বাড়ির পাশে কর্মসংস্থান পেয়ে আমরা খুশি। এখান থেকে আয় করে সংসার চালাচ্ছি।
স্বল্প শিক্ষিত এসব নারীদের মোবাইল তৈরির কারিগর বানাতে ভূমিকা রয়েছে কয়েকজন টেকনিশিয়ানের। একজন নারীকে মোবাইল ফোন তৈরিতে দক্ষ করে তুলতে দুই থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগে তাদের।
হালিমা হাইটেক পার্কের প্রোডাকশন হেড মিজানুর রহমান বলেন, মোবাইলের যন্ত্রাংশগুলো চায়না থেকে আনা হয়। এসব যন্ত্রাংশ বসানোর জন্য একেক নারীর কাঁধে একেক দায়িত্ব। ধরেন কেউ ডিসপ্লে বসাচ্ছেন। এই কাজটা যখন দিনের পর দিন করেন, তখন এমনিতেই সে দক্ষ হয়ে ওঠে। এমন করে প্রতিটি পার্টসের কাজ আলাদাভাবে করা হয়। যার কারণে সহজেই মোবাইল তৈরিতে অভিজ্ঞ হয়ে উঠছেন নারীরা।
হালিমা টেলিকম মোবাইল কারখানার প্যাকিং এক্সিকিউটিভ মেহেদী হাসান বলেন, নারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগে দক্ষ করে তোলা হয়। তারপর তাদের মোবাইল তৈরির পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া হয়। কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ ওমর হাসান বলেন, আমাদের কোম্পানির চেয়ারম্যান স্যারের স্বপ্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের কর্মসংস্থান করা। তাই তিনি এখানে এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন। শুধু প্রতিষ্ঠানই নয়, এই কারখানায় আসা-যাওয়ার যে সড়কটি ছিল, এটি তিনি নিজ অর্থায়নে পাকা করেছেন। এই কারখানার ফলে এখানকার নারীদের জীবনযাত্রার মান বদলে গেছে।
কুমিল্লার নারীদের হাতে তৈরি এসব মোবাইল ইতোমধ্যে দেশীয় বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে হালিমা টেলিকম। এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন একজন মানুষ উদ্যোক্তা আবুল কালাম হাসান টগর। তার লক্ষ্য শুধু একটি কারখানা গড়ে তোলা নয়, বরং নারীদের প্রযুক্তি খাতে সম্পৃক্ত করে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করা। হালিমা হাইটেক পার্কের চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর বলেন, আমি খুব সংগ্রাম করে আজকে কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে শতশত মানুষের কর্মসংস্থান করেছি। এটা এত সহজ ছিল না। অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। আমরা শুধু মোবাইল ফোনই নয়। আমাদের এখন পাঁচটি কোম্পানি। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রিক পণ্য, মোবাইলের ব্যাটারি, চার্জার, হেডফোন, পাওয়ার ব্যাংকও উৎপাদন করছি। আমার লক্ষ্য আমার নিজ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখা। আজকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ১৪০০ লোক আমার এখানে কাজ করছেন। এই লোকগুলো এখানে কাজ করে তাদের সংসার চালাচ্ছেন। অবহেলিত, পরিবারের বোঝা যেসব নারী ছিল, তারা এখন মোবাইল ফোন তৈরি করছেন। এটা অনেক বড় আনন্দের। কুমিল্লার এসব কর্মবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে আমার আরো অনেক স্বপ্ন আছে। আমি সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছি।
সানা/আপ্র/১৭/১০/২০২৫