ঢাকা ০৮:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গ্রন্থমেলাজুড়ে জুলাই আন্দোলন এনেছে ভিন্নমাত্রা

  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

সাহিত্য ডেস্ক: ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘হামার বেটাকে মারলু ক্যানে?’, ‘বুকের ভেতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’- জুলাই বিপ্লব নিয়ে এমন অসংখ্য সেøাগান সংবলিত পোস্টার দেখা যাবে মেলার প্রবেশপথেই। শুধু প্রবেশ পথ নয়, জুলাই আন্দোলনের এমন হাওয়া পুরো গ্রন্থমেলাজুড়ে। স্টলে স্টলে জুলাই অভ্যুত্থান সম্পর্কিত বই মেলায় ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। ক্রেতারা দেখছেন, কিনছেন আবার ছবি তুলছেন।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা মানেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ভাষার জন্য শহিদের আত্মত্যাগ।

তবে সেসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জুলাই আন্দোলন। ব্যানার, ফেস্টুন, গ্রাফিতিসহ নানা আয়োজনে তুলে ধরা হয়েছে জুলাই আন্দোলনকে। শুধু তা-ই নয়, স্টলগুলোর থিম এবং ‘জুলাই চত্বর’ স্থাপন করে অভ্যুত্থানের চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে নান্দনিকভাবে। আর এসব সজ্জায় রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। সেøাগানের পোস্টার, শহিদদের ছবি, দাবি ও অধিকার আদায়ের ফেস্টুন এবং স্বৈরাচারবিরোধী গ্রাফিতি সহজেই দর্শনার্থীর নজর কাড়ে।

শুধু ব্যানার, ফেস্টুনেই আটকে নেই জুলাই অভ্যুত্থান। ২৪ অভ্যুত্থান স্থান পেয়েছে বইয়ের পাতায় পাতায়। অন্নি ইসলামের সম্পাদনায় এবারের গ্রন্থমেলায় এসেছে বই ‘আমার দেখা গণঅভ্যুত্থান ২০২৪’। মেহেদী হাসান ডালিম লিখেছেন ‘হাইকোর্টের বিতর্কিত রায় ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান’, ফারজানা মাহবুবার লেখা ‘হ্যাশট্যাগ জুলাই’ এবং সাব্বির জাদিদের লেখা ‘একটি গোলাপের জন্য’। এমন অনেক লেখকর বই প্রকাশ হয়েছে এবারের গ্রন্থমেলায়। ভিন্ন ভিন্ন স্টলে জুলাই অভ্যুত্থান-কেন্দ্রিক বই। ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে এমন তিনটি বই। ‘জুলাই’, ‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান’ ও আসিফ নজরুলের লেখা ‘শেখ হাসিনার পতনকাল’। এই স্টলে অন্য বইয়ের চেয়ে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে লেখা বই বেশি বিক্রি হয়েছে।
বই, পোস্টারের পাশাপাশি জুলাইয়ের স্মৃতিকে আরও একবার স্মরণ করার জন্য একুশের গ্রন্থমেলায় আছে একটি ফটোবুথ। রঙিন সেøাগান অঙ্কিত ফটোবুথটির নাম ‘৩৬ জুলাই’। ফটোবুথের ভেতরে আঁকা হয়েছে দুই হাত প্রসারিত আবু সাঈদের ছবি। সামনে ও দুই পাশে আন্দোলনের সময়কার নানান ঘটনা আঁকা রয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি, পুলিশি নির্যাতন, ছাত্রলীগের হাতে নিগ্রহের মতো ঘটনাও আঁকা হয়েছে সেখানে।
গ্রন্থমেলায় আসা দর্শনার্থীরা ফটোবুথে এসে ছবি তুলছেন। সন্তানকে ছবি দেখিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা।
মেলায় অংশ নিয়েছে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।

সেখানে রক্তাক্ত জুলাই নামে একটি ফটোবুক বের করা হয়েছে। বুকটি বিক্রি করে যে অর্থ আয় হবে তা দিয়ে জুলাইয়ে শহিদ পরিবার ও আহতদের সহযোগিতা করা হবে। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সামনেই রাখা হয়েছে বড় বড় ফেস্টুন। সেখানে জুলাই আগস্টে শহিদ মো. ওয়াসিম আকরুম, আবু সাঈদ, গোলাম নাফিস, মাহামুদুর রহমান সৈকত, শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের ছবি রয়েছে। সেই সঙ্গে শহিদ মুগ্ধর পানির গ্লাস হাতে স্ট্যাচু। তার সামনেই জুলাই চত্বর। সেখানে নানা সেøাগান সংবলিত পোস্টার মানুষ দেখছেন, ছবি তুলছেন। এছাড়া আন্দোলনের সময় গুলি ছুড়তে থাকা সন্ত্রাসীর মুখ আঁকা হয়েছে নেকড়ের মতো করে। যেন বীভৎস হত্যাযজ্ঞ আর হিংস্রতার প্রতিরূপ। মেলা ঘুরে মনে হয় জুলাই যেন এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রাণ।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গ্রন্থমেলাজুড়ে জুলাই আন্দোলন এনেছে ভিন্নমাত্রা

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সাহিত্য ডেস্ক: ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘হামার বেটাকে মারলু ক্যানে?’, ‘বুকের ভেতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’- জুলাই বিপ্লব নিয়ে এমন অসংখ্য সেøাগান সংবলিত পোস্টার দেখা যাবে মেলার প্রবেশপথেই। শুধু প্রবেশ পথ নয়, জুলাই আন্দোলনের এমন হাওয়া পুরো গ্রন্থমেলাজুড়ে। স্টলে স্টলে জুলাই অভ্যুত্থান সম্পর্কিত বই মেলায় ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছে। ক্রেতারা দেখছেন, কিনছেন আবার ছবি তুলছেন।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা মানেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ভাষার জন্য শহিদের আত্মত্যাগ।

তবে সেসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জুলাই আন্দোলন। ব্যানার, ফেস্টুন, গ্রাফিতিসহ নানা আয়োজনে তুলে ধরা হয়েছে জুলাই আন্দোলনকে। শুধু তা-ই নয়, স্টলগুলোর থিম এবং ‘জুলাই চত্বর’ স্থাপন করে অভ্যুত্থানের চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে নান্দনিকভাবে। আর এসব সজ্জায় রঙ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে লাল, কালো ও সাদা। সেøাগানের পোস্টার, শহিদদের ছবি, দাবি ও অধিকার আদায়ের ফেস্টুন এবং স্বৈরাচারবিরোধী গ্রাফিতি সহজেই দর্শনার্থীর নজর কাড়ে।

শুধু ব্যানার, ফেস্টুনেই আটকে নেই জুলাই অভ্যুত্থান। ২৪ অভ্যুত্থান স্থান পেয়েছে বইয়ের পাতায় পাতায়। অন্নি ইসলামের সম্পাদনায় এবারের গ্রন্থমেলায় এসেছে বই ‘আমার দেখা গণঅভ্যুত্থান ২০২৪’। মেহেদী হাসান ডালিম লিখেছেন ‘হাইকোর্টের বিতর্কিত রায় ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান’, ফারজানা মাহবুবার লেখা ‘হ্যাশট্যাগ জুলাই’ এবং সাব্বির জাদিদের লেখা ‘একটি গোলাপের জন্য’। এমন অনেক লেখকর বই প্রকাশ হয়েছে এবারের গ্রন্থমেলায়। ভিন্ন ভিন্ন স্টলে জুলাই অভ্যুত্থান-কেন্দ্রিক বই। ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে এমন তিনটি বই। ‘জুলাই’, ‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান’ ও আসিফ নজরুলের লেখা ‘শেখ হাসিনার পতনকাল’। এই স্টলে অন্য বইয়ের চেয়ে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে লেখা বই বেশি বিক্রি হয়েছে।
বই, পোস্টারের পাশাপাশি জুলাইয়ের স্মৃতিকে আরও একবার স্মরণ করার জন্য একুশের গ্রন্থমেলায় আছে একটি ফটোবুথ। রঙিন সেøাগান অঙ্কিত ফটোবুথটির নাম ‘৩৬ জুলাই’। ফটোবুথের ভেতরে আঁকা হয়েছে দুই হাত প্রসারিত আবু সাঈদের ছবি। সামনে ও দুই পাশে আন্দোলনের সময়কার নানান ঘটনা আঁকা রয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি, পুলিশি নির্যাতন, ছাত্রলীগের হাতে নিগ্রহের মতো ঘটনাও আঁকা হয়েছে সেখানে।
গ্রন্থমেলায় আসা দর্শনার্থীরা ফটোবুথে এসে ছবি তুলছেন। সন্তানকে ছবি দেখিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন অভিভাবকরা।
মেলায় অংশ নিয়েছে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।

সেখানে রক্তাক্ত জুলাই নামে একটি ফটোবুক বের করা হয়েছে। বুকটি বিক্রি করে যে অর্থ আয় হবে তা দিয়ে জুলাইয়ে শহিদ পরিবার ও আহতদের সহযোগিতা করা হবে। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সামনেই রাখা হয়েছে বড় বড় ফেস্টুন। সেখানে জুলাই আগস্টে শহিদ মো. ওয়াসিম আকরুম, আবু সাঈদ, গোলাম নাফিস, মাহামুদুর রহমান সৈকত, শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের ছবি রয়েছে। সেই সঙ্গে শহিদ মুগ্ধর পানির গ্লাস হাতে স্ট্যাচু। তার সামনেই জুলাই চত্বর। সেখানে নানা সেøাগান সংবলিত পোস্টার মানুষ দেখছেন, ছবি তুলছেন। এছাড়া আন্দোলনের সময় গুলি ছুড়তে থাকা সন্ত্রাসীর মুখ আঁকা হয়েছে নেকড়ের মতো করে। যেন বীভৎস হত্যাযজ্ঞ আর হিংস্রতার প্রতিরূপ। মেলা ঘুরে মনে হয় জুলাই যেন এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রাণ।