প্রত্যাশা ডেস্ক: সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ গোলাম মাওলা রনির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। সম্প্রতি টেলিভিশন টকশো ও ইউটিউবে অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে প্রেসসচিব এ মন্তব্য করেন। ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, গোলাম মাওলা রনি এখন আমাদের টিভি টকশো ও ইউটিউব ভিডিওগুলোর মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তির অন্যতম প্রধান উৎস হয়ে উঠেছেন। তিনি আরো লেখেন, সম্প্রতি সময় টিভির এক টকশোতে রনি দাবি করেছেন যে, নূর হোসেন-স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি শহীদ নাকি জনতার হাতে নিহত হয়েছেন।
শহীদ নূর হোসেনের ইতিহাস তুলে ধরে শফিকুল আলম লেখেন, আমরা সবাই জানি, ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর জেনারেল এরশাদের নিরাপত্তা বাহিনীই গুলি করে হত্যা করেছিল নূর হোসেনকে। রনি কি এখন ইতিহাস থেকে এরশাদের অপরাধ মুছে ফেলার দায়িত্ব নিয়েছেন? এমন প্রশ্ন তোলেন প্রেসসচিব। টকশোতে গোলাম মাওলা রনির মিথ্যাচারে উপাস্থাপক কোনো প্রতিবাদ করেননি দাবি করে শফিকুল আলম বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো, সময় টিভির সেই অনুষ্ঠানে উপস্থাপক এই নির্লজ্জ মিথ্যাচারের কোনো প্রতিবাদও করেননি। যখন আপনি মিথ্যাবাদী ও বিভ্রান্তিকর কণ্ঠকে প্ল্যাটফর্ম দেন, তখন আপনি নিজেও সেই অপরাধের অংশীদার হয়ে ওঠেন।
টিভি-সংবাদপত্রের কিছু কর্তা সরাসরি সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন: টিভি ও সংবাদপত্রের কিছু কর্তা সরাসরি সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, আমাদের কোনো টিভি চ্যানেল স্বৈরাচারী শাসনামলে তাদের ভূমিকার জন্য আজও ক্ষমা চায়নি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তৎকালীন সরকারের প্রচারযন্ত্র হিসেবে কাজ করেছিল। টিভি ও সংবাদপত্রের কিছু কর্তা সরাসরি সহিংসতা উসকে দিয়েছিলেন। যারা এটা করেছেন, তাদের অবশ্যই পরিণতি ভোগ করতে হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার সবসময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছে। আমরা কোনো ব্যক্তির দোষের কারণে কোনো মিডিয়া আউটলেটের ক্ষতি করতে চাইনি।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে নিজের ফেসবুক এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব লেখেন, জুলাই মাস আমাদের জীবনে ফিরে আসার পর চার দিন কেটে গেছে। সেই সঙ্গে ফিরে এসেছে ভয়াবহ গুলি ও খুনের স্মৃতি এবং পুনরুজ্জীবিত আশা ও স্বপ্ন। আজাদ মজুমদার বলেন, জুলাই আমাদের নতুন করে দেশ গড়ার আশা দেয়, কারণ আমাদের গণমাধ্যম এখন তা নিজেদের করে নিতে শুরু করেছে। গত চার দিনে আমি কিছু ভালো লেখা দেখেছি- ‘কেন জুলাই অনিবার্য ছিল’ সে বিষয়ে বিশ্লেষণ। কেউ কেউ গত কিছু মাসের সাফল্য নিয়ে হতাশাও প্রকাশ করেছেন, তবে সেটাই স্বাভাবিক। যখন প্রত্যাশা বেশি থাকে, তখন হতাশাও গভীর হয়। উপ-প্রেস সচিব আরো লেখেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে, কোনো সরকারি নির্দেশ ছাড়াই। এটিও একটি বড় পরিবর্তন। এটি তাদের নিজেদের দায়মুক্তির একটি সুযোগ। তারা সে সময়ের গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ফুটেজ এবং তথ্য সংরক্ষণ করলেও তখন তা দেখাতে পারেনি। এখন সময় এসেছে জুলাইকে নতুন করে দেখার এবং যা তারা তখন দেখাতে পারেনি, তা সামনে আনার। ভালো ব্যাপার হলো- তারা সেটা শুরু করেছে। তিনি বলেন, আমরা জানতাম, টিভি চ্যানেলগুলোর সীমাবদ্ধতা কী ছিল। অনেক সাংবাদিক আমাদের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন- কীভাবে তারা বাধ্য হতেন তথ্য গোপন করতে বা সরকার-প্রচারমূলক সংবাদ প্রচার করতে। আমরা সতর্ক ছিলাম, যেন আমাদের সময় এমন পরিস্থিতি না হয় এবং সাংবাদিকদের যেন কখনো এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য এবং এই পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান।