ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

গৃহিণীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ভাঙচুর

  • আপডেট সময় : ১২:১১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় সেলিনা বেগম (৪৭) নামে এক গৃহিণীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা। সেলিনা বেগম পৌর শহরের জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া আওয়ালকান্দা এলাকার আক্তার মিয়ার স্ত্রী। গতকাল শনিবার সকাল আটটার দিকে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর নিউ টাউন এলাকার গ্রামীণ হাসপাতালে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। স্বজনরা জানান, গত ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায় গ্রামীণ হাসপাতালে জরায়ু অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয় সেলিনা বেগমকে। ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর চিকিৎসাধীন দিনব্যাপী বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ জুলাই শুক্রবার বিকাল ৪টায় জরায়ু অপারেশন করেন। রাত ১১টায় সেলিনা বেগমের অবস্থা অবনতি হতে থাকে। রাত ৪টায় সময় রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক সেলিনা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এ বিষয়ে রোগীর মেয়ে জামাতা শাহ আলম জানান, আমার শাশুড়িকে ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৭ জুলাই শুক্রবার অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়। এসময় আমার স্ত্রী ও শ্যালক উনার সঙ্গে ছিলেন। বিকাল ৪টায় অপারেশন করার পর রাত ২টায় আমার শাশুড়ির অবস্থা খারাপ হয়। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা কোনো পাত্তাই দেয়নি। রাত ৪টায় অজ্ঞান অবস্থায় আমার শাশুড়িকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলে। আমরাও বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমার শাশুড়ির কোনো সাড়াশব্দ ছিল না। পথে একটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে তারা বলে আমার শাশুড়ি মারা গেছেন। আমরা তা জেনেও ভোরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ব্যরত চিকিৎসক আমার শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সকালের দিকে আমরা আবারও হাসপাতালে ফিরে আসলে হাসপাতালের স্টাফরা গেট খুলতে চায়নি। পরে আমাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে যায়। রোগীর স্বামী আক্তার মিয়া জানান, তারা আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। সামান্য জরায়ু অপারেশনে একজন নারী কিভাবে মরতে পারে। এর আগেও নাকি তারা আরো দুটি হত্যাকা- ঘটিয়েছে অপচিকিৎসার মাধ্যমে। আমরা আগে জানলে এ হাসপাতালে আসতাম না। গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক বদিউজ্জামান বদি জানান, ডা. ফাহিমা শারমিন হানী ও ডা. দীপঙ্কর রায়ের তত্ত্বাবধানে সেলিনা বেগমের চিকিৎসা হয়েছিল। শুক্রবার বিকালে অপারেশন হয়। সেলিনা বেগমের অবস্থা অবনতি হলে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পথে তিনি মারা যান। সকালের দিকে পৌর ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়ার নেতৃত্বে হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে। থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভৈরব পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়া বলেন, এলাকাবাসী খবর দিলে আমি এসে দেখি উত্তেজিত জনতা হাসপাতাল ভাঙচুর করছে। আমি তাদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করি। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, গ্রামীণ হাসপাতালের দুর্ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি। অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরর্বতী আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গৃহিণীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ভাঙচুর

আপডেট সময় : ১২:১১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় সেলিনা বেগম (৪৭) নামে এক গৃহিণীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা। সেলিনা বেগম পৌর শহরের জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়া আওয়ালকান্দা এলাকার আক্তার মিয়ার স্ত্রী। গতকাল শনিবার সকাল আটটার দিকে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর নিউ টাউন এলাকার গ্রামীণ হাসপাতালে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। স্বজনরা জানান, গত ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের নিউ টাউন এলাকায় গ্রামীণ হাসপাতালে জরায়ু অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয় সেলিনা বেগমকে। ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর চিকিৎসাধীন দিনব্যাপী বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ৭ জুলাই শুক্রবার বিকাল ৪টায় জরায়ু অপারেশন করেন। রাত ১১টায় সেলিনা বেগমের অবস্থা অবনতি হতে থাকে। রাত ৪টায় সময় রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক সেলিনা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এ বিষয়ে রোগীর মেয়ে জামাতা শাহ আলম জানান, আমার শাশুড়িকে ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ৭ জুলাই শুক্রবার অপারেশনের জন্য ভর্তি করা হয়। এসময় আমার স্ত্রী ও শ্যালক উনার সঙ্গে ছিলেন। বিকাল ৪টায় অপারেশন করার পর রাত ২টায় আমার শাশুড়ির অবস্থা খারাপ হয়। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা কোনো পাত্তাই দেয়নি। রাত ৪টায় অজ্ঞান অবস্থায় আমার শাশুড়িকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলে। আমরাও বুঝতে পারছিলাম না কি করবো। আমার শাশুড়ির কোনো সাড়াশব্দ ছিল না। পথে একটি হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে তারা বলে আমার শাশুড়ি মারা গেছেন। আমরা তা জেনেও ভোরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ব্যরত চিকিৎসক আমার শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সকালের দিকে আমরা আবারও হাসপাতালে ফিরে আসলে হাসপাতালের স্টাফরা গেট খুলতে চায়নি। পরে আমাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে যায়। রোগীর স্বামী আক্তার মিয়া জানান, তারা আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। সামান্য জরায়ু অপারেশনে একজন নারী কিভাবে মরতে পারে। এর আগেও নাকি তারা আরো দুটি হত্যাকা- ঘটিয়েছে অপচিকিৎসার মাধ্যমে। আমরা আগে জানলে এ হাসপাতালে আসতাম না। গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক বদিউজ্জামান বদি জানান, ডা. ফাহিমা শারমিন হানী ও ডা. দীপঙ্কর রায়ের তত্ত্বাবধানে সেলিনা বেগমের চিকিৎসা হয়েছিল। শুক্রবার বিকালে অপারেশন হয়। সেলিনা বেগমের অবস্থা অবনতি হলে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পথে তিনি মারা যান। সকালের দিকে পৌর ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়ার নেতৃত্বে হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে। থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভৈরব পৌর শহরের ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলু মিয়া বলেন, এলাকাবাসী খবর দিলে আমি এসে দেখি উত্তেজিত জনতা হাসপাতাল ভাঙচুর করছে। আমি তাদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করি। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডা. ফাহিমা শারমিন হানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, গ্রামীণ হাসপাতালের দুর্ঘটনা আমি লোকমুখে শুনেছি। অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরর্বতী আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে