প্রত্যাশা ডেস্ক : শেখ হাসিনার স্বৈরাচার সরকারের ছাত্র-জনতার ওপর চালানো নৃশংসতা ফুটে উঠেছে যেসব ছবিতে সেগুলোর মধ্যে বেশি আলোচিত হলো রিকশার পাদানিতে এক ছাত্রের নিথর দেহ। গত ৫ আগস্ট দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রথম পাতায় ছবিটি ছাপা হয়। এরপর ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচিত হয় ছবিটি। ফ্যাসিস্টদের নির্মমতার প্রতীক সেই ছবির স্কেচ (আঁকা ছবি) এবার স্থান পেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ওই সময়ের নৃশংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। ছবিটি গত ৪ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকা থেকে তুলেছিলেন ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ। এতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ এক তরুণের দেহ পড়ে আছে রিকশার পাদানিতে। তার মাথা রিকশার বাইরে ঝুলন্ত প্রায়। মুখ আকাশের দিকে। রিকশাচালক ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। ছবিটি নিয়ে গত ১২ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ ওই তরুণের নাম গোলাম নাফিজ। রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
আর ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে ১৭ বছর বয়সী নাফিজের বাবা-মা ছেলের সন্ধান পান। মা–বাবা নাফিজের খোঁজ যখন পান, তখন সে আর বেঁচে ছিল না। নাফিজ রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। পরিবারসহ থাকত মহাখালীতে। দুই ভাই তারা। নাফিজ ছোট। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গুলিবিদ্ধ গোলাম নাফিজকে পুলিশ যখন রিকশার পাদানিতে তুলে দেয়, তখনো সে রিকশার রডটি হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল। রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ তাকে নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হাসপাতালে ঢুকতে গেলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বাধা দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক। পরে ১৭ বছরের গোলাম নাফিজকে নিয়ে রিকশাচালক খামারবাড়ির দিকে চলে যান।