ঢাকা ০৮:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় টিউলিপের নাম, ফের বিতর্ক

  • আপডেট সময় : ০৯:১৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

টিউলিপ সিদ্দিক-ফাইল ছবি

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে একটি বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দা হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকায় অবস্থিত ‘সিদ্দিকস’ নামে ১০ তলা ভবনটি তার পরিবারের নামে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে টিউলিপ লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন, তখন ঢাকার কর্মকর্তারা ভবনটিকে তার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন। আদালতের নথি ও সংবাদ প্রতিবেদনে এর আগে বাংলাদেশে আরও চারটি সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের নাম এসেছে।

যদিও লেবার পার্টির সূত্র দাবি করেছে, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে কোনো সম্পত্তির মালিক নন এবং যেসব ঠিকানার মালিকানা তার নয়। সুতরাং সেসব বিষয়ে তাকে কোনো ব্যাখ্যা দিতে হবে না।

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, টিউলিপ সিদ্দিক ‘জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেছেন’। তিনি আওয়ামী লীগের এক নেতার দেওয়া ঢাকার একটি ফ্ল্যাটের বিষয়ে ভুল তথ্য দেন। এ ঘটনায় শেষ পর্যন্ত সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টিউলিপ।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। তার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী বিক্ষোভ দমনে সহিংস অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, যেখানে অন্তত দেড় হাজার মানুষ নিহত হন। তার শাসনামলে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, নির্বিচার আটক এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডেরও অভিযোগ উঠেছিল।

সম্প্রতি শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের পর বিক্ষোভকারীরা তার ধানমন্ডির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির কাচের দরজার ভাঙা ফ্রেমে টিউলিপ সিদ্দিকের গ্র্যাজুয়েশনের ছবি ঝুলছিল, আর পেছনে আগুন জ্বলছিল।

দুর্নীতির অভিযোগ ও সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন: টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের বাড়িটি ২০১০-এর দশকে নির্মিত হয়। নথি অনুসারে, ২০১৪ সালের মে মাসে এটি তার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল।

১০ তলা এই ভবনে বিলাসবহুল দুই ও তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট, ছাদবাগান ও বারান্দা রয়েছে। তবে এটি তার বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, দাদা বা পুরো পরিবারকে সম্মান জানিয়ে নামকরণ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

একটি সূত্র বলছে, ভবনটি টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন জমির ওপর নির্মিত। তবে লেবার পার্টি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সম্প্রতি গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামে পরিচিত একটি পারিবারিক বাগানবাড়ির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। বাড়ির দেয়ালে ও বাগানে এই নাম লেখা রয়েছে। তবে টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন, তিনি ওই সম্পত্তির মালিক নন।

এছাড়া, তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ এবং ঢাকায় পারিবারিক জমি অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে তার মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিককে এ নিয়ে কোনো তদন্তকারী সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি এসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জয়কে ‘অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা’ মামলায় মাহমুদুর রহমান খালাস

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন

গুলশানে বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দার তালিকায় টিউলিপের নাম, ফের বিতর্ক

আপডেট সময় : ০৯:১৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে একটি বিলাসবহুল ভবনের বাসিন্দা হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকায় অবস্থিত ‘সিদ্দিকস’ নামে ১০ তলা ভবনটি তার পরিবারের নামে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে টিউলিপ লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন, তখন ঢাকার কর্মকর্তারা ভবনটিকে তার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন। আদালতের নথি ও সংবাদ প্রতিবেদনে এর আগে বাংলাদেশে আরও চারটি সম্পত্তির সঙ্গে টিউলিপের নাম এসেছে।

যদিও লেবার পার্টির সূত্র দাবি করেছে, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে কোনো সম্পত্তির মালিক নন এবং যেসব ঠিকানার মালিকানা তার নয়। সুতরাং সেসব বিষয়ে তাকে কোনো ব্যাখ্যা দিতে হবে না।

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, টিউলিপ সিদ্দিক ‘জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেছেন’। তিনি আওয়ামী লীগের এক নেতার দেওয়া ঢাকার একটি ফ্ল্যাটের বিষয়ে ভুল তথ্য দেন। এ ঘটনায় শেষ পর্যন্ত সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টিউলিপ।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। তার সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী বিক্ষোভ দমনে সহিংস অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, যেখানে অন্তত দেড় হাজার মানুষ নিহত হন। তার শাসনামলে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, নির্বিচার আটক এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডেরও অভিযোগ উঠেছিল।

সম্প্রতি শেখ হাসিনার এক বক্তব্যের পর বিক্ষোভকারীরা তার ধানমন্ডির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির কাচের দরজার ভাঙা ফ্রেমে টিউলিপ সিদ্দিকের গ্র্যাজুয়েশনের ছবি ঝুলছিল, আর পেছনে আগুন জ্বলছিল।

দুর্নীতির অভিযোগ ও সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন: টিউলিপ সিদ্দিকের গুলশানের বাড়িটি ২০১০-এর দশকে নির্মিত হয়। নথি অনুসারে, ২০১৪ সালের মে মাসে এটি তার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিল।

১০ তলা এই ভবনে বিলাসবহুল দুই ও তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট, ছাদবাগান ও বারান্দা রয়েছে। তবে এটি তার বাবা শফিক আহমেদ সিদ্দিক, দাদা বা পুরো পরিবারকে সম্মান জানিয়ে নামকরণ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

একটি সূত্র বলছে, ভবনটি টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন জমির ওপর নির্মিত। তবে লেবার পার্টি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

সম্প্রতি গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় ‘টিউলিপস টেরিটরি’ নামে পরিচিত একটি পারিবারিক বাগানবাড়ির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন। বাড়ির দেয়ালে ও বাগানে এই নাম লেখা রয়েছে। তবে টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন, তিনি ওই সম্পত্তির মালিক নন।

এছাড়া, তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ এবং ঢাকায় পারিবারিক জমি অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে তার মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিককে এ নিয়ে কোনো তদন্তকারী সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি এসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেন।