ঢাকা ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গুম কমিশনে ১৬০০ অভিযোগ, বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে

  • আপডেট সময় : ০৮:১৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গুম কমিশনে অভিযোগ জমা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ এর মতো। ঢাকা ও তার আশপাশে আটটি আয়নাঘর বা গোপন বন্দিশালা খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। রাজনৈতিক, জঙ্গি সন্দেহসহ চার কারণে অধিকাংশ গুম করা হয়েছিল বলে জানায় কমিশন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে কমিশনের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, গুমের বন্দিশালা বা আয়নাগুলো পরিদর্শন করার কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে ডিজিএফআই, র‌্যাব-১ (উত্তরা), র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, র‌্যাব-১১ (নারায়ণগঞ্জ), র‌্যাব-২ (বছিলা), র‌্যাব-২ ক্রাইস ডিভিশন সেন্টার (আগারগাঁও) পরিদর্শন করেছি। ডিবি আগে করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গুম কমিশনে অভিযোগ জমা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ এর মতো। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ৪০০ অভিযোগকারীর মধ্যে ১৪০ জনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।
গুম সংক্রান্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩১ অক্টোবর। তবে যে কেউ চাইলে এখনও অভিযোগ দিতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে কমিশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব)। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে। ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদফতরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে। অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে ফেলা হয়েছে বাকি অভিযোগ গুলো। যেগুলোর ক্ষেত্রে পরিচয় দেয়নি। শুধু বলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে।
কমিশনের সভাপতি জানিয়েছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ সদস্যকে ডাকা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত অন্যদেরও ডাকা হবে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের যেসব গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতন করা হতো সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। আলামত নষ্ট করা হয়েছে। তবে যারা আলামত নষ্ট করছেন, তাদের সতর্ক করেছে কমিশন। যারা আলামত ধ্বংস করছেন, তারা গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও সতর্ক করা হয়েছে। আলামত ধ্বংস না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, কতো নিষ্ঠুরভাবে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, বোঝানো যাবে না। কমিশন সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস বলেন, এখন পর্যন্ত গুমের চারটি কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক কারণে বিশাল সংখ্যক মানুষকে নেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত না হলেও জঙ্গি সন্দেহে বড় একটা সংখ্যক নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক কারণেও গুম করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন স্বাধীন। গত ২৭ আগস্ট ওই গুম কমিশন গঠন করে সরকার। এই কমিশনের কাছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের ঘটনার অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ

গুম কমিশনে ১৬০০ অভিযোগ, বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ০৮:১৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গুম কমিশনে অভিযোগ জমা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ এর মতো। ঢাকা ও তার আশপাশে আটটি আয়নাঘর বা গোপন বন্দিশালা খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। রাজনৈতিক, জঙ্গি সন্দেহসহ চার কারণে অধিকাংশ গুম করা হয়েছিল বলে জানায় কমিশন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে কমিশনের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে বক্তব্য রাখেন কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, গুমের বন্দিশালা বা আয়নাগুলো পরিদর্শন করার কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে ডিজিএফআই, র‌্যাব-১ (উত্তরা), র‌্যাব হেডকোয়ার্টার, র‌্যাব-১১ (নারায়ণগঞ্জ), র‌্যাব-২ (বছিলা), র‌্যাব-২ ক্রাইস ডিভিশন সেন্টার (আগারগাঁও) পরিদর্শন করেছি। ডিবি আগে করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত গুম কমিশনে অভিযোগ জমা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ এর মতো। এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ৪০০ অভিযোগকারীর মধ্যে ১৪০ জনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।
গুম সংক্রান্ত কমিশনে অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত ৩১ অক্টোবর। তবে যে কেউ চাইলে এখনও অভিযোগ দিতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে কমিশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। ৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব)। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে। ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদফতরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে। অন্যান্য ক্যাটাগরির মধ্যে ফেলা হয়েছে বাকি অভিযোগ গুলো। যেগুলোর ক্ষেত্রে পরিচয় দেয়নি। শুধু বলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে।
কমিশনের সভাপতি জানিয়েছেন, গুমের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ সদস্যকে ডাকা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত অন্যদেরও ডাকা হবে। গুম হওয়া ব্যক্তিদের যেসব গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতন করা হতো সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। আলামত নষ্ট করা হয়েছে। তবে যারা আলামত নষ্ট করছেন, তাদের সতর্ক করেছে কমিশন। যারা আলামত ধ্বংস করছেন, তারা গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও সতর্ক করা হয়েছে। আলামত ধ্বংস না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, কতো নিষ্ঠুরভাবে মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, বোঝানো যাবে না। কমিশন সদস্য ড. নাবিলা ইদ্রিস বলেন, এখন পর্যন্ত গুমের চারটি কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক কারণে বিশাল সংখ্যক মানুষকে নেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত না হলেও জঙ্গি সন্দেহে বড় একটা সংখ্যক নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক কারণেও গুম করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন স্বাধীন। গত ২৭ আগস্ট ওই গুম কমিশন গঠন করে সরকার। এই কমিশনের কাছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে গুমের ঘটনার অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।