গুগলের এআই নীতিমালার আগের সংস্করণে উল্লেখ ছিল, ‘এমন অস্ত্র; যার মূল উদ্দেশ্য মানুষের ক্ষতি বা সরাসরি আঘাত করা’ এবং ‘এমন প্রযুক্তি; যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম লঙ্ঘন করে নজরদারির জন্য তথ্য সংগ্রহ বা ব্যবহার করে’ তা অনুসরণ করবে না তারা। এসব নির্দেশন এখন আর গুগলের এআই নীতির ওয়েবসাইটে দেখানো হচ্ছে না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।
সম্প্রতি এক ব্লগ পোস্টে গুগলের এআই স্টার্টআপ ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ডেমিস হাসাবিস বলেছেন, ‘ক্রমাগত জটিল ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এআই নেতৃত্বের জন্য বিশ্বজুড়ে প্রতিযোগিতা চলছে। আমরা বিশ্বাস করি স্বাধীনতা, সমতা ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার মতো মূল মূল্যবোধের মাধ্যমে পরিচালিত এআই উন্নয়নে গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।
ব্লগ পোস্টে গুগল বলেছে, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারে স্বীকৃত বিভিন্ন নীতিমালার সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজের পাশাপাশি সবসময় সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য মূল্যায়নের পথ খোলা রাখব আমরা। আমাদের বিভিন্ন কাজের সুবিধা ঝুঁকির চেয়ে বেশি কি না তা সতর্কতার সঙ্গে আমরা মূল্যায়ন করব।
গুগলের চতুর্থ প্রান্তিকের আয়ের ফলাফল প্রকাশের আগে মঙ্গলবার কোম্পানিটির নতুন এই এআই নীতিমালার কথা প্রথম প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।
ওয়াল স্ট্রিটের রাজস্ব প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি কোম্পানিটির চতুর্থ ত্রৈমাসিকের ফলাফল এবং পরবর্তী ঘণ্টার ট্রেডিংয়ে গুগলের শেয়ারের দাম কমেছে ৯ শতাংশ পর্যন্ত।
২০১৮ সালে ‘প্রজেক্ট মাভেন’ নামে গুগল তাদের এআই নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করে; যা সরকারকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ড্রোন ভিডিও বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করেছিল।
চুক্তিটি শেষ করার আগে কয়েক হাজার কর্মী এ চুক্তির বিরুদ্ধে একটি পিটিশনে সই করেন ও গুগলের জড়িত থাকার বিরোধিতা করে পদত্যাগও করেন কয়েক ডজন কর্মী।
ওই সময় কোম্পানিটি বলেছে, পেন্টাগন ক্লাউড চুক্তির জন্য এক হাজার কোটি ডলারের বিডিং থেকেও সরে আসে কোম্পানিটি। কারণ গুগল ‘নিশ্চিত হতে পারেনি’ যে এটি তাদের এআই নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে কি না।
গত বছর ‘প্রজেক্ট নিম্বাস’-এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক বিক্ষোভের পর ৫০ জনেরও বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করে গুগল। ‘প্রজেক্ট নিম্বাস’ হচ্ছে অ্যামাজনের সঙ্গে গুগলের ১২০ কোটি ডলারের একটি যৌথ চুক্তি, যা ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক বাহিনীকে ক্লাউড কম্পিউটিং এবং এআই পরিষেবা সরবরাহ করে। ওই সময় গুগলের নির্বাহীরা বারবার বলেছেন, এ চুক্তিটি কোম্পানির কোনো ‘এআই নীতি’ লঙ্ঘন করেনি।
এদিকে গাজা যুদ্ধের মতো ভূরাজনৈতিক সংঘাত ঘিরে অভ্যন্তরীণ আলোচনায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল মার্কিন টেক জায়ান্টটি। এ নিয়ে সিএনবিসির মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি গুগল।