প্রযুক্তি ডেস্ক : ব্যবহারকারীদেরকে জালিয়াতির সতর্কবার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি গুগলের নতুন একটি ফিচার ভীতি ছড়াতে শুরু করেছে প্রাইভেসি সমর্থকদের মধ্যে।
নতুন এ ফিচারে ব্যবহারকারীর ফোন কল শোনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যার মাধ্যমে কলটি ‘স্ক্যাম’ বা জাল ছিল কি না তা শনাক্ত করার চেষ্টা করে ফিচারটি। কলটি সন্দেহজনক মনে হলে একে ‘সম্ভাব্য স্ক্যাম’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ব্যবহারকারীর কাছে একটি ‘পপ-আপ’ চলে যায়।
ফিচারটির ঘোষণা এসেছে এ সপ্তাহে, গুগলের আই/ও আয়োজনে। এ ছাড়া, আয়োজনটিতে বেশ কিছু নতুন এআই টুলও ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। তবে এইসব ফিচার কবে নাগাদ বাজারে আসবে, সে সম্পর্কে কিছু বলেনি গুগল।
এমনকি ফিচারটি আসলে কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়েও খুব কম তথ্য দিয়েছে কোম্পানিটি। উদাহরণ হিসেবে, এআইয়ের কাছে কী ধরনের কথোপকথন স্ক্যাম হিসেবে বিবেচিত হবে, সে প্রশ্নটি।
গুগল বলেছে, ফিচারটি ‘জেমিনাই ন্যানো’ নামের এআই ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে থাকে, যা তাদের মূল এআই ব্যবস্থা জেমিনাইয়ের ছোট সংস্করণ। সম্প্রতি চালু করা এআই ব্যবস্থাটি মূলত তৈরি হয়েছে ফোনের জন্য। সার্চ জায়ান্ট কোম্পানিটির দাবি, বিভিন্ন ফোন কল শোনা ও তা বিশ্লেষণের মতো কাজগুলো ফোনেই ঘটে থাকে যেন বিভিন্ন ব্যক্তিগত কথোপকথন কোম্পানির সার্ভারে না পাঠাতে হয়। “এই নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি ডিভাইসের মধ্যেই থাকে যাতে আপনার কথোপকথনকে প্রাইভেট রাখা যায়,” ফিচারটি ঘোষণার সময় বলেছিল গুগল। অন্যদিকে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন উপায়ে ফোন কল শোনা ‘খুবই বিপজ্জনক’ ও ‘ভীতিকর’। তাদের দাবি, কলের রেকর্ডটি ডিভাইসের মধ্যে থেকে গেলেও এআই পরবর্তীতে সেটা শোনার সুযোগ পায়, যার ফলে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। “এটা খুবই বিপজ্জনক,” বলেছেন মেসেজিং অ্যাপ ‘সিগনাল’-এর প্রেসিডেন্ট মেরেডিথ হুইটেকার। “এতে করে কেন্দ্রীভূত, ‘ডিভাইস-লেভেল’ স্ক্যানিংয়ের পথ প্রশস্থ হয়।”
এর আগে গুগলে ১৩ বছর কাজ করেছেন হুইটেকার, যেখানে কোম্পানিটির বিভিন্ন নীতিমালার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ আন্দোলন গড়ে তোলাতেও সাহায্য করেছেন তিনি। তার মতে, এ প্রযুক্তির ব্যবহার খুব দ্রুতই ছড়িয়ে যেতে পারে। “স্ক্যাম থেকে এটি ধাপে ধাপে ‘বিভিন্ন প্রজনন সেবার তথ্য’ বা ‘এলজিবিটিকিউ বিষয়ক তথ্য’ এমনকি ‘প্রযুক্তি কর্মীর তথ্য ফাঁসের’ মতো ঘটনাও শনাক্ত করতে পারে।”