ঢাকা ০৩:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫

গায়ক নোবেল কারাগারে

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে

কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে গ্রেফতার করে ডেমরা থানা পুলিশ। এরপর তাকে আদালতে নেওয়া হয় -ছবি ডিএমপির সৌজন্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ডেমরা থানা-পুলিশ নোবেলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিল আদালতে। মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত দুইটায় অভিযান চালিয়ে নোবেলকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গত সোমবার (১৯ মে) জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে ডেমরার সারুলিয়ার আমতলায় নোবেলের বাসা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই নারী রাতেই থানায় মামলা করেন।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, সোমবার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে ডেমরার সারুলিয়ার আমতলায় নোবেলের বাসা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। ওই নারী রাতেই থানায় মামলা করেন। এরপর রাত দুইটায় অভিযান চালিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে নোবেলকে গ্রেফতার করা হয়।

ভারতীয় টিভি চ্যানেল জি বাংলার সংগীতবিষয়ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ‘সারেগামাপা’য় অংশ নিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান নোবেল। তবে এরপর নানা ঘটনায় বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আটক হয়েছেন।

৬ মাস ধরে বাসায় আটকে রেখেছিলেন নোবেল, অভিযোগ তরুণীর: ভাইরাল ভিডিওতে যে তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নামাতে দেখা গিয়েছিল গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে, সেই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে এক তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নামাতে দেখা যায় নোবেলকে। গতরাতে ওই তরুণী ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি ও মারধরের অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

এরপরই নোবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়।

গত বছরের ১২ নভেম্বর নোবেল মোহাম্মদপুরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন এবং ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে তাকে বাসায় নিয়ে যান। এরপর আরো ২/৩ জন অজ্ঞাত সহযোগীর সহায়তায় ওই তরুণীকে নোবেলের বাসায় আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, ‘নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর ও ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে’ সোমবার পর্যন্ত নোবেলের বাসায় আটক রাখা হয় তাকে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই সিসিটিভি ভিডিওতে এক তরুণীকে মারধর করে হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নিতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকজন বাধা দিতে দেখা গেলেও নোবেলকে থামানো যায়নি।

ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, নোবেল দাবি করেছেন, ওই তরুণী তার স্ত্রী, মৌখিকভাবে কলমা পড়ে তাকে বিয়ে করেছেন। কিন্তু বিয়ে সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

পরিদর্শক মুরাদ হোসেন মঙ্গলবার নোবেলকে আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে নোবেলের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী জসিম উদ্দিন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়া উদ্দিন আহমেদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আইনজীবী বলছেন অভিযোগকারী নারী নোবেলের স্ত্রী, চার মাসের গর্ভবতী: মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা ২টা ৫০ মিনিটে এজলাসে তোলা হয় নোবেলকে। নোবেলের পক্ষে তার আইনজীবী জসিম উদ্দিন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, মামলার ঘটনা গত বছরের ১২ নভেম্বর। আর বাদী আসামির স্ত্রী।

গতকাল (সোমবার) রাত পর্যন্ত তারা একই বাসায় ছিলেন। ভুল বোঝাবুঝিতে মামলা করেছে। মীমাংসার জন্য নোবেলকে থানায় ডেকে নেওয়ার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মেয়ে লিগ্যালি তার ওয়াইফ, চার মাসের প্রেগন্যান্ট। নোবেল তার সাথে সংসার করতে চায়। আমরা যেকোনো শর্তে আপস করতে ইচ্ছুক। এ সময় বিচারক কাবিননামা আছে কি না জানতে চান। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, তাড়াহুড়োর কারণে কাবিননামা আনা হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি এই আসামি সাংসারিক, ব্যক্তিজীবন নিয়ে ভালো অবস্থায় নেই।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গায়ক নোবেল কারাগারে

আপডেট সময় : ০৮:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ডেমরা থানা-পুলিশ নোবেলকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিল আদালতে। মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত সোমবার দিবাগত রাত দুইটায় অভিযান চালিয়ে নোবেলকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গত সোমবার (১৯ মে) জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে ডেমরার সারুলিয়ার আমতলায় নোবেলের বাসা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে ওই নারী রাতেই থানায় মামলা করেন।

ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, সোমবার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে ডেমরার সারুলিয়ার আমতলায় নোবেলের বাসা থেকে এক নারীকে উদ্ধার করা হয়। ওই নারী রাতেই থানায় মামলা করেন। এরপর রাত দুইটায় অভিযান চালিয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে নোবেলকে গ্রেফতার করা হয়।

ভারতীয় টিভি চ্যানেল জি বাংলার সংগীতবিষয়ক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ‘সারেগামাপা’য় অংশ নিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান নোবেল। তবে এরপর নানা ঘটনায় বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আটক হয়েছেন।

৬ মাস ধরে বাসায় আটকে রেখেছিলেন নোবেল, অভিযোগ তরুণীর: ভাইরাল ভিডিওতে যে তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নামাতে দেখা গিয়েছিল গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলকে, সেই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে এক তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নামাতে দেখা যায় নোবেলকে। গতরাতে ওই তরুণী ধর্ষণ, পর্নোগ্রাফি ও মারধরের অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

এরপরই নোবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়।

গত বছরের ১২ নভেম্বর নোবেল মোহাম্মদপুরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন এবং ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে তাকে বাসায় নিয়ে যান। এরপর আরো ২/৩ জন অজ্ঞাত সহযোগীর সহায়তায় ওই তরুণীকে নোবেলের বাসায় আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, ‘নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর ও ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে’ সোমবার পর্যন্ত নোবেলের বাসায় আটক রাখা হয় তাকে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই সিসিটিভি ভিডিওতে এক তরুণীকে মারধর করে হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নিতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকজন বাধা দিতে দেখা গেলেও নোবেলকে থামানো যায়নি।

ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, নোবেল দাবি করেছেন, ওই তরুণী তার স্ত্রী, মৌখিকভাবে কলমা পড়ে তাকে বিয়ে করেছেন। কিন্তু বিয়ে সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

পরিদর্শক মুরাদ হোসেন মঙ্গলবার নোবেলকে আদালতে হাজির করে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে নোবেলের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী জসিম উদ্দিন।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক জামিনের বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়া উদ্দিন আহমেদ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে নোবেলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আইনজীবী বলছেন অভিযোগকারী নারী নোবেলের স্ত্রী, চার মাসের গর্ভবতী: মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা ২টা ৫০ মিনিটে এজলাসে তোলা হয় নোবেলকে। নোবেলের পক্ষে তার আইনজীবী জসিম উদ্দিন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, মামলার ঘটনা গত বছরের ১২ নভেম্বর। আর বাদী আসামির স্ত্রী।

গতকাল (সোমবার) রাত পর্যন্ত তারা একই বাসায় ছিলেন। ভুল বোঝাবুঝিতে মামলা করেছে। মীমাংসার জন্য নোবেলকে থানায় ডেকে নেওয়ার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। মেয়ে লিগ্যালি তার ওয়াইফ, চার মাসের প্রেগন্যান্ট। নোবেল তার সাথে সংসার করতে চায়। আমরা যেকোনো শর্তে আপস করতে ইচ্ছুক। এ সময় বিচারক কাবিননামা আছে কি না জানতে চান। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, তাড়াহুড়োর কারণে কাবিননামা আনা হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি এই আসামি সাংসারিক, ব্যক্তিজীবন নিয়ে ভালো অবস্থায় নেই।