ঢাকা ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

গাজীপুরের মেয়র জায়েদা খাতুন

  • আপডেট সময় : ১০:৩৬:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মে ২০২৩
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত করায় নগরের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জায়েদা খাতুন। নির্বাচনে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও শুভেচ্ছা। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই। ভোটটা আমার সুষ্ঠু হয়েছে। আমি আমার ভোটের হিসাব পেয়েছি। এই জন্য আমি আরও ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।’
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর গতকাল শুক্রবার ভোর ৪টার সময় নিজ বাড়িতে জায়েদা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। বিজয়টা কাকে উপহার দেবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘এই বিজয় আমি গাজীপুরবাসীকে দেব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও দেব।’
গাজীপুরবাসীর জন্য কী করবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জয় লাভ করা জায়েদা খাতুন বলেন, ‘গাজীপুরবাসীর ঋণ আমি শোধ করার চেষ্টা করব। সাংবাদিকেরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাই আপনাদের ঋণও আমি শোধ করব। আপনারা যখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তখন আমার সঙ্গে বা আশপাশে কেউ ছিল না। আমি গাজীপুরের কাজ করেই ঋণ শোধ করব।’
জায়েদা খাতুন বলেন, ‘কাজটা যেহেতু আমি একা করতে পারব না। তাই আমার ছেলেকে নিয়ে করব, যে আগে থেকেই আমার পাশে ছিল। আমার ছেলের যে কাজগুলো বাকি ছিল, সেগুলো আমি শেষ করে দেব ইনশা আল্লাহ।’
জায়েদা খাতুন আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে সত্য প্রমাণের জন্যই আমার ভোটে আসা। কিছু কিছু লোক আছে, যারা যা করেছে, তাদের দিলেই (মনে) আছে। আমি গাজীপুরবাসীর জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টাই করব। আমার কাজ সবাইকে দেখিয়ে দেব। আমি আজমত উল্লা খানকে জিজ্ঞেস করে ও মতামত নিয়েই কাজ করব। একজনের জায়গা দিয়ে রাস্তা যাবে, একজনের জায়গা দিয়ে ড্রেন যাবে, কিন্তু দিতে চাইব না। তাই সবাইকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করব। এলাকার মানুষকে নিয়েই কাজ করব।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে ও আমার মিথ্যা কেউ পায় নাই। মিথ্যা অভিযোগ তোলার দুঃখেই, মিথ্যার প্রতিবাদে এইখানে আমার ভোটে আসা। গাজীপুরের মানুষকে এত ভালোবাসছি, এবার দেখি তারা আমারে কেমন ভালোবাসে? এই ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্যই ভোটে আসা। আমি গাজীপুরবাসীর ভালোবাসা পেয়েছি।’
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার মা আমার শিক্ষকের মতো। আমার সব কাজ সে দেখভাল করেছে। এখন আমি মেয়র নেই, কিন্তু আমার মা মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। আমি মায়ের সঙ্গে থেকে যতগুলো কাজ আছে এবং প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় কাজগুলো করব। আজমত উল্লা খান আমার বড় ভাই। তাঁর পরামর্শ এবং এখানে বড় যারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে, পরামর্শ নিয়ে আধুনিক শহর গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাই। আমি এবং মা তাঁর কাছে যাব। আমাদের শহর সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তা করার জন্য আমরা মা–ছেলে প্রস্তুত আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এবং সরকার বলেছে সুন্দর একটি ভোট উপহার দিবে। সেটি আমরা তাদের কর্মের মধ্যে পেয়েছি। এ জন্য সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
বিরোধ নয়, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের ছেলে ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের জয় হয়েছে, আর যারা অপরাধী তারা অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। কেউ আঘাত করলে তাকে আঘাত করতে হয় না। শহরের মালিক যে জনগণ এটা আপনাদের ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।’
গতকাল শুক্রবার দুপুরে শহরের ছয়দানা (হারিকেন) এলাকার নিজ বাসভবনে উৎসুক জনতা ও কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাহাঙ্গীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো সবার পারিবারিক একটা মর্যাদা আছে। সবাই যেন সবাইকে সহযোগিতা করে। এ শহরের মানুষ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। আপনারা (কর্মী-সমর্থক) দুঃসময়ে আমার পাশে ছিলেন। আমি আমার এবং মায়ের কাজ দিয়ে এই শহরকে আপনাদের সহযোগিতায় চালাবো। অনেকে আপনাদের ক্ষতি করতে চাইবে। আপানারা খেয়াল রাখবেন, কোনোভাবে যেন নিজেদের কোনো ক্ষতি না হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা মানে আপনাদের মা। আমার বাড়িঘর সবার জন্য উম্মুক্ত। যেকোনো সময়, যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আসবেন। আমার মা এবং আমি আপনাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবো। সবার জন্য এ শহর। আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আছেন ওনার কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়া শুরু হয়েছে। অনেকে বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করেছিল, মিথ্যা বলেছিল এ শহর ধ্বংস করার জন্য।’
সকাল থেকেই মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছয়দানা (হারিকেন) এলাকার জায়েদা খাতুনের বাসভবনে কর্মী, সমর্থক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুলের তোড়া, মালা হাতে নিয়ে মিছিল সহকারে অভিনন্দন জানাতে আসেন। এসময় জাহাঙ্গীর আলম সবার উদ্দেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি আমাদের অভিভাবক, ওনাকে সহযোগিতা করবো। আমাদের নেতাকর্মীদের যারা হয়রানি করছে অবিলম্বে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে দেখা যাবে না। কারণ যারা শহরের মেয়র বানাতে পারে তারা এই সমাজে সবকিছু প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। পেশীশক্তি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ড, থানা এবং মহানগরের সবাইকে নিয়ে পঞ্চায়েত সিস্টেম করে শাসন ব্যবস্থা এবং সিটি করপোরেশনের কাজগুলো যেন মানুষ সহজে করতে পারে মার সঙ্গে থেকে সে কাজটা করে দেব। আপানার দেখেছেন, আমাকে কোন পরিস্থিতিতে কোথায় নিয়ে গেছে, অনেক বড় বড় মালিকেরা তাদের টেলিভিশনে আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে কথা প্রচার করেছেন। আপনাদের শক্তি দিয়ে আমি দেখিয়েছি যতদিন থাকবো আমার জীবন এবং আমার বাড়িঘর সব আপনাদের। আমার মালিকানা কিছু লাগবে না। এগুলো সবকিছুর মালিক আপানারা। আপনাদের জন্য আমার দরজা খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা।’
বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শেষে গভীর রাতে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাতে দেখা যায়, জায়েদা খাতুন ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করেছেন। মোট ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে টেবিলঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ভোটের ফলাফলে তৃতীয় হওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গাজীপুরের মেয়র জায়েদা খাতুন

আপডেট সময় : ১০:৩৬:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ মে ২০২৩

গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত করায় নগরের বাসিন্দাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জায়েদা খাতুন। নির্বাচনে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও শুভেচ্ছা। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানাই। ভোটটা আমার সুষ্ঠু হয়েছে। আমি আমার ভোটের হিসাব পেয়েছি। এই জন্য আমি আরও ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।’
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর গতকাল শুক্রবার ভোর ৪টার সময় নিজ বাড়িতে জায়েদা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। বিজয়টা কাকে উপহার দেবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘এই বিজয় আমি গাজীপুরবাসীকে দেব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও দেব।’
গাজীপুরবাসীর জন্য কী করবেন-এমন প্রশ্নের জবাবে টেবিলঘড়ি প্রতীকে জয় লাভ করা জায়েদা খাতুন বলেন, ‘গাজীপুরবাসীর ঋণ আমি শোধ করার চেষ্টা করব। সাংবাদিকেরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাই আপনাদের ঋণও আমি শোধ করব। আপনারা যখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, তখন আমার সঙ্গে বা আশপাশে কেউ ছিল না। আমি গাজীপুরের কাজ করেই ঋণ শোধ করব।’
জায়েদা খাতুন বলেন, ‘কাজটা যেহেতু আমি একা করতে পারব না। তাই আমার ছেলেকে নিয়ে করব, যে আগে থেকেই আমার পাশে ছিল। আমার ছেলের যে কাজগুলো বাকি ছিল, সেগুলো আমি শেষ করে দেব ইনশা আল্লাহ।’
জায়েদা খাতুন আরও বলেন, ‘আমার ছেলেকে সত্য প্রমাণের জন্যই আমার ভোটে আসা। কিছু কিছু লোক আছে, যারা যা করেছে, তাদের দিলেই (মনে) আছে। আমি গাজীপুরবাসীর জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টাই করব। আমার কাজ সবাইকে দেখিয়ে দেব। আমি আজমত উল্লা খানকে জিজ্ঞেস করে ও মতামত নিয়েই কাজ করব। একজনের জায়গা দিয়ে রাস্তা যাবে, একজনের জায়গা দিয়ে ড্রেন যাবে, কিন্তু দিতে চাইব না। তাই সবাইকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করব। এলাকার মানুষকে নিয়েই কাজ করব।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে ও আমার মিথ্যা কেউ পায় নাই। মিথ্যা অভিযোগ তোলার দুঃখেই, মিথ্যার প্রতিবাদে এইখানে আমার ভোটে আসা। গাজীপুরের মানুষকে এত ভালোবাসছি, এবার দেখি তারা আমারে কেমন ভালোবাসে? এই ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্যই ভোটে আসা। আমি গাজীপুরবাসীর ভালোবাসা পেয়েছি।’
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার মা আমার শিক্ষকের মতো। আমার সব কাজ সে দেখভাল করেছে। এখন আমি মেয়র নেই, কিন্তু আমার মা মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। আমি মায়ের সঙ্গে থেকে যতগুলো কাজ আছে এবং প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় কাজগুলো করব। আজমত উল্লা খান আমার বড় ভাই। তাঁর পরামর্শ এবং এখানে বড় যারা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আছেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে, পরামর্শ নিয়ে আধুনিক শহর গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাই। আমি এবং মা তাঁর কাছে যাব। আমাদের শহর সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তা করার জন্য আমরা মা–ছেলে প্রস্তুত আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এবং সরকার বলেছে সুন্দর একটি ভোট উপহার দিবে। সেটি আমরা তাদের কর্মের মধ্যে পেয়েছি। এ জন্য সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।’
বিরোধ নয়, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের ছেলে ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের জয় হয়েছে, আর যারা অপরাধী তারা অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে। কেউ আঘাত করলে তাকে আঘাত করতে হয় না। শহরের মালিক যে জনগণ এটা আপনাদের ভোটে বিজয়ের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।’
গতকাল শুক্রবার দুপুরে শহরের ছয়দানা (হারিকেন) এলাকার নিজ বাসভবনে উৎসুক জনতা ও কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাহাঙ্গীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো সবার পারিবারিক একটা মর্যাদা আছে। সবাই যেন সবাইকে সহযোগিতা করে। এ শহরের মানুষ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবে। আপনারা (কর্মী-সমর্থক) দুঃসময়ে আমার পাশে ছিলেন। আমি আমার এবং মায়ের কাজ দিয়ে এই শহরকে আপনাদের সহযোগিতায় চালাবো। অনেকে আপনাদের ক্ষতি করতে চাইবে। আপানারা খেয়াল রাখবেন, কোনোভাবে যেন নিজেদের কোনো ক্ষতি না হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা মানে আপনাদের মা। আমার বাড়িঘর সবার জন্য উম্মুক্ত। যেকোনো সময়, যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আসবেন। আমার মা এবং আমি আপনাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবো। সবার জন্য এ শহর। আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আছেন ওনার কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়া শুরু হয়েছে। অনেকে বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করেছিল, মিথ্যা বলেছিল এ শহর ধ্বংস করার জন্য।’
সকাল থেকেই মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছয়দানা (হারিকেন) এলাকার জায়েদা খাতুনের বাসভবনে কর্মী, সমর্থক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুলের তোড়া, মালা হাতে নিয়ে মিছিল সহকারে অভিনন্দন জানাতে আসেন। এসময় জাহাঙ্গীর আলম সবার উদ্দেশে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি আমাদের অভিভাবক, ওনাকে সহযোগিতা করবো। আমাদের নেতাকর্মীদের যারা হয়রানি করছে অবিলম্বে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে দেখা যাবে না। কারণ যারা শহরের মেয়র বানাতে পারে তারা এই সমাজে সবকিছু প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। পেশীশক্তি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ড, থানা এবং মহানগরের সবাইকে নিয়ে পঞ্চায়েত সিস্টেম করে শাসন ব্যবস্থা এবং সিটি করপোরেশনের কাজগুলো যেন মানুষ সহজে করতে পারে মার সঙ্গে থেকে সে কাজটা করে দেব। আপানার দেখেছেন, আমাকে কোন পরিস্থিতিতে কোথায় নিয়ে গেছে, অনেক বড় বড় মালিকেরা তাদের টেলিভিশনে আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে কথা প্রচার করেছেন। আপনাদের শক্তি দিয়ে আমি দেখিয়েছি যতদিন থাকবো আমার জীবন এবং আমার বাড়িঘর সব আপনাদের। আমার মালিকানা কিছু লাগবে না। এগুলো সবকিছুর মালিক আপানারা। আপনাদের জন্য আমার দরজা খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা।’
বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শেষে গভীর রাতে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তাতে দেখা যায়, জায়েদা খাতুন ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করেছেন। মোট ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে টেবিলঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ভোটের ফলাফলে তৃতীয় হওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট।