বিদেশের খবর ডেস্ক : ইসরায়েল ও হামাসকে গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তির চূড়ান্ত খসড়া দিয়েছে কাতার। রবিবার দিবাগত রাতে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। কাতারের দোহায় এই আলোচনা হচ্ছে। আলোচনায় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও শিন বেটের প্রধান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী এবং ট্রাম্প প্রশাসনের দূত স্টিভ উইটকফ উপস্থিত ছিলেন। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, চুক্তিটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিমুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি ও হামাস প্রতিনিধি দল এই খসড়া পেয়েছে। তবে ইসরায়েল, হামাস বা কাতার এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস সাড়া দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনও চুক্তি চূড়ান্তে জোর দিচ্ছেন। অন্যদিকে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ চালায়। ইসরায়েলি হিসাব অনুযায়ী, ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫০ জনের বেশিকে জিম্মি করা হয়। পাল্টা আক্রমণে গাজায় ৪৬ হাজার জনের বেশি মানুষ হত্যা করেছে ইসরায়েল। উভয় পক্ষ বন্দিমুক্তি ও যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একমত হলেও যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি প্রত্যাহার নিয়ে মতভেদ রয়ে গেছে। ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী এই চুক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য “বিপর্যয়” বলে আখ্যা দিয়েছেন
ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় নিহত আরও ২৮
ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। রবিবার তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও আরও ২৮ ফিলিস্তিনির নিহতের খবর নিশ্চিত করেছে। জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ হাজার ৫৬৫ জনে পৌঁছেছে। আরও অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৬৬০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ২৮ জন নিহত এবং আরও ৮৯ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ধ্বংস করে দিয়েছে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজারো ভবন।