ঢাকা ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
আক্রমণ ‘মাত্র শুরু’: নেতানিয়াহু

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও ২৭

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৮:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই। মঙ্গলবার রাতভর হামলায় অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আগের রাত থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপকভাবে হামলা শুরু করে। খবর আল জাজিরার। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে বোমা হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাস এখনো আলোচনার দ্বার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করেনি। গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের চালানো হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় বইছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি গাজার ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, নতুন বোমাবর্ষণ কেবল শুরু। হামাসের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার মধ্যেই তা চলবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার ৫৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এক লাখ ১২ হাজার ৪১ জন আহত হয়েছেন। গাজা সরকারের তথ্য অফিস নিহতের সংখ্যা হালনাগাদ করেছে। তারা বলছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। তারা বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৩৯ জনকে হত্যা করে। পাশাপাশি আড়াইশ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে।

আক্রমণ ‘মাত্র শুরু’: নেতানিয়াহু
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের নতুন হামলাকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ‘মাত্র শুরু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভোররাতে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে, যা রমজান মাসে সাহরি চলাকালে ঘটে। একদিনের মধ্যেই কমপক্ষে ৪০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং ৫৬২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হামলায় গাজায় বহু ভবন ধসে পড়েছে, এবং অনেক মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে আছেন। এই হামলা গাজায় ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। হামলায় নিহতদের মধ্যে অনেকেই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।

বাড়ি-বাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে দাবি করেছেন, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ কয়েক সপ্তাহ বাড়িয়েছিল, কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কোন জিম্মি মুক্তি পাননি। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছিল। তবে হামাস সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি আপডেটেড প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব ছিল। হামাস সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল, এবং দ্বিতীয় ধাপে আলোচনা শুরুর জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু দাবি করেন, হামাস যদি তাদের বন্দি মুক্তি না দেয়, তাহলে তারা যুদ্ধ শুরু করবে এবং সেটি তারা করেছে। বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, এরমধ্যে ২৪ জন জীবিত।

বিপরীতে, ৯ হাজার ৫০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি আছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়েছেন। নেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজায় নতুন আক্রমণ কেবল শুরু। তিনি সতর্ক করেন যে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ক্রমবর্ধমান তীব্রতা নিয়ে পদক্ষেপ নেবে, এবং তারা শুধুমাত্র আক্রমণের সময়েই আলোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণ না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনবহুল এলাকায় যুদ্ধবিমানের প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

আক্রমণ ‘মাত্র শুরু’: নেতানিয়াহু

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত আরও ২৭

আপডেট সময় : ০৭:৫৮:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই। মঙ্গলবার রাতভর হামলায় অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। আগের রাত থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপকভাবে হামলা শুরু করে। খবর আল জাজিরার। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের কর্মকর্তা তাহের আল-নোনো বলেন, গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে বোমা হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাস এখনো আলোচনার দ্বার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করেনি। গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের চালানো হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় বইছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি গাজার ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, নতুন বোমাবর্ষণ কেবল শুরু। হামাসের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার মধ্যেই তা চলবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার ৫৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এক লাখ ১২ হাজার ৪১ জন আহত হয়েছেন। গাজা সরকারের তথ্য অফিস নিহতের সংখ্যা হালনাগাদ করেছে। তারা বলছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে। তারা বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ১৩৯ জনকে হত্যা করে। পাশাপাশি আড়াইশ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে।

আক্রমণ ‘মাত্র শুরু’: নেতানিয়াহু
এদিকে গাজায় ইসরায়েলের নতুন হামলাকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু ‘মাত্র শুরু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভোররাতে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করে, যা রমজান মাসে সাহরি চলাকালে ঘটে। একদিনের মধ্যেই কমপক্ষে ৪০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং ৫৬২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হামলায় গাজায় বহু ভবন ধসে পড়েছে, এবং অনেক মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে আছেন। এই হামলা গাজায় ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। হামলায় নিহতদের মধ্যে অনেকেই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।

বাড়ি-বাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে দাবি করেছেন, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ কয়েক সপ্তাহ বাড়িয়েছিল, কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কোন জিম্মি মুক্তি পাননি। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল দোহায় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল এবং মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবও গ্রহণ করেছিল। তবে হামাস সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে একটি আপডেটেড প্রস্তাব পেশ করেছিলেন, যেখানে ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব ছিল। হামাস সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল, এবং দ্বিতীয় ধাপে আলোচনা শুরুর জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু দাবি করেন, হামাস যদি তাদের বন্দি মুক্তি না দেয়, তাহলে তারা যুদ্ধ শুরু করবে এবং সেটি তারা করেছে। বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, এরমধ্যে ২৪ জন জীবিত।

বিপরীতে, ৯ হাজার ৫০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি আছেন, যাদের অনেকেই নির্যাতন ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হয়েছেন। নেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজায় নতুন আক্রমণ কেবল শুরু। তিনি সতর্ক করেন যে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল ক্রমবর্ধমান তীব্রতা নিয়ে পদক্ষেপ নেবে, এবং তারা শুধুমাত্র আক্রমণের সময়েই আলোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণ না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’