ঢাকা ০১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

গরু-ছাগলে উদ্বৃত্ত, তবুও শঙ্কা

  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২
  • ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী সংবাদদাতা : গবাদি পশু পালনে সাফল্যের পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী। গো-খাদ্যের বাজার চড়া থাকায় বেড়েছে গবাদি পশু লালন-পালন করার খরচ। এর সঙ্গে রয়েছে গরম আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জসহ আরও নানান প্রতিকূলতা। এরপরও গবাদি পশু পালনে সফলতা দেখিয়েছে ‘রাজশাহী’। দেশের মধ্যে কোরবানির জন্য এবার সবচেয়ে বেশি ছাগল রয়েছে- বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। এছাড়া চাহিদা ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে- কোরবানির গরুও। সব মিলেয়ে যেই পরিমাণ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে- তা দিয়ে এই ঈদুল আজহায় রাজশাহীর কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভারত থেকে এবারও গরু আমদানি করার প্রয়োজন নেই। টানা দুই বছর করোনা মহামারি কাটিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চান এই অঞ্চলের খামারিরা। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তাই এবার পর্যাপ্ত পশু লালন-পালন করেছেন। ক্ষতিকর কোনো পদ্ধতি ছাড়াই প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে দেশি উপায়ে কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য বলছে- নানান চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী পশু পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে নিরবেই। এই অবস্থা করোনার দুই বছর আগেও ছিল না। এটি রাজশাহীর একটি অনন্য সাফল্য। বর্তমানে দেশের মধ্যে কোরবানির জন্য সবচেয়ে বেশি ছাগল রয়েছে রাজশাহীতে। এছাড়া কোরবানির জন্য চাহিদার চেয়েও গরু উদ্বৃত্ত রয়েছে। বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে রাজশাহীর আট জেলায় এক লাখ ৩০ হাজার ২৬৫ জন খামারি রয়েছেন। জেলাগুলো হচ্ছে- রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট। বর্তমানে এসব জেলার খামারিদের কাছে কোরবানির জন্য ২৮ লাখ ২২ হাজার ৬৩৯টি ছাগল রয়েছে। ভেড়া রয়েছে চার লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৭টি। আর ছাগলের মত ভেড়ার সংখ্যাও বেশি। এছাড়া গরু রয়েছে ১১ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৯টি। মহিষ ২১ হাজার ৫২১টি। আর রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য বলছে- এখানে কোরবানির জন্য মোট পশু প্রস্তুত হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৫২টি। জেলায় এবার সম্ভাব্য চাহিদা ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১৮টি। অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার গরু বেশি রয়েছে। রাজশাহী জেলার নয় উপজেলায় ১৬ হাজার ৭৯ জন খামারি রয়েছেন। তাদের কাছে কোরবানির জন্য ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭২টি গরু, ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫টি ছাগল, ৩৮ হাজার ২৪৫টি ভেড়া আছে। এছাড়া মহিষ রয়েছে ৩ হাজার ২১১টি। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। ধারণা করা হচ্ছে- জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজশাহী জেলার হাটগুলোতে কোরবানির পশু আসতে শুরু করবে। জুলাইয়ের প্রথমেই কোরবানির হাট জমজমাট হয়ে উঠবে। রাজশাহীর মহানগরীর ‘সিটিহাট’ ছাড়াও, উপকণ্ঠে থাকা পবার নওহাটা, দামকুড়া, কাঁটাখালীতে হাট রয়েছে। এছাড়াও জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট, ঝলমলিয়া হাট, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট ও মহিষালবাড়ি হাট, বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর হাট, দুর্গাপুর হাট, মোহনপুরের কেশরহাট ও সাবাইহাট, তানোরের চৌবাড়িয়া ও মু-ুমালা হাট উল্লেখযোগ্য। সিটিহাট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও পবা উপজেলা প্রশাসন। আর উপজেলার হাটগুলো দেখে জেলা প্রশাসন। গেল দু’বছরের মত এবার করোনা সংকট না থাকায় রাজশাহী জেলা ও আশপাশের পশুহাটগুলো একদম দেশি গরুতেই জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজশাহীর পারীলা ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের খামারি গোলাম মোস্তফা বলেন, যতদিন যাচ্ছে গো-খাদ্যের দাম ততই বাড়ছে। আগে মাসে একটি গরুর জন্য ২/৩ হাজার টাকা খরচ করলেই হতো। কিন্তু এখন ৬/৭ হাজার টাকা খরচ পড়ে যাচ্ছে। তাই এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি হবে। এ অবস্থায় হাটে ক্রেতা হলে তারা লাভের মুখ দেখবে। না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন। রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, করোনা অতিমারীর কারণে গেল দুই বছর রাজশাহীর খামারিদের অনেক লোকসান হয়েছে। এরপরও তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন। এ কারণে নানান সংকট মোকাবিলা করে কোরবানির জন্য পশু লালন-পালন করেছেন। এবার মোট চাহিদার চেয়েও প্রায় ১০ হাজার গরু বেশি রয়েছে। ফলে দেশি গরু দিয়েই এবার কোরবানির চাহিদা পূরণ সম্ভব। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়েছে বলে এগুলো অনেক বেশি নিরাপদ।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

২৪ ঘণ্টায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, থাকবে আরও যতদিন

গরু-ছাগলে উদ্বৃত্ত, তবুও শঙ্কা

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

রাজশাহী সংবাদদাতা : গবাদি পশু পালনে সাফল্যের পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী। গো-খাদ্যের বাজার চড়া থাকায় বেড়েছে গবাদি পশু লালন-পালন করার খরচ। এর সঙ্গে রয়েছে গরম আবহাওয়ার চ্যালেঞ্জসহ আরও নানান প্রতিকূলতা। এরপরও গবাদি পশু পালনে সফলতা দেখিয়েছে ‘রাজশাহী’। দেশের মধ্যে কোরবানির জন্য এবার সবচেয়ে বেশি ছাগল রয়েছে- বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। এছাড়া চাহিদা ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উদ্বৃত্ত রয়েছে- কোরবানির গরুও। সব মিলেয়ে যেই পরিমাণ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে- তা দিয়ে এই ঈদুল আজহায় রাজশাহীর কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভারত থেকে এবারও গরু আমদানি করার প্রয়োজন নেই। টানা দুই বছর করোনা মহামারি কাটিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চান এই অঞ্চলের খামারিরা। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে তাই এবার পর্যাপ্ত পশু লালন-পালন করেছেন। ক্ষতিকর কোনো পদ্ধতি ছাড়াই প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে দেশি উপায়ে কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য বলছে- নানান চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী পশু পালনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে নিরবেই। এই অবস্থা করোনার দুই বছর আগেও ছিল না। এটি রাজশাহীর একটি অনন্য সাফল্য। বর্তমানে দেশের মধ্যে কোরবানির জন্য সবচেয়ে বেশি ছাগল রয়েছে রাজশাহীতে। এছাড়া কোরবানির জন্য চাহিদার চেয়েও গরু উদ্বৃত্ত রয়েছে। বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে রাজশাহীর আট জেলায় এক লাখ ৩০ হাজার ২৬৫ জন খামারি রয়েছেন। জেলাগুলো হচ্ছে- রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট। বর্তমানে এসব জেলার খামারিদের কাছে কোরবানির জন্য ২৮ লাখ ২২ হাজার ৬৩৯টি ছাগল রয়েছে। ভেড়া রয়েছে চার লাখ ৮৫ হাজার ৯৮৭টি। আর ছাগলের মত ভেড়ার সংখ্যাও বেশি। এছাড়া গরু রয়েছে ১১ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৯টি। মহিষ ২১ হাজার ৫২১টি। আর রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য বলছে- এখানে কোরবানির জন্য মোট পশু প্রস্তুত হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৫২টি। জেলায় এবার সম্ভাব্য চাহিদা ৩ লাখ ৮২ হাজার ১১৮টি। অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার গরু বেশি রয়েছে। রাজশাহী জেলার নয় উপজেলায় ১৬ হাজার ৭৯ জন খামারি রয়েছেন। তাদের কাছে কোরবানির জন্য ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭২টি গরু, ২ লাখ ৩৩ হাজার ২৩৫টি ছাগল, ৩৮ হাজার ২৪৫টি ভেড়া আছে। এছাড়া মহিষ রয়েছে ৩ হাজার ২১১টি। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। ধারণা করা হচ্ছে- জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে রাজশাহী জেলার হাটগুলোতে কোরবানির পশু আসতে শুরু করবে। জুলাইয়ের প্রথমেই কোরবানির হাট জমজমাট হয়ে উঠবে। রাজশাহীর মহানগরীর ‘সিটিহাট’ ছাড়াও, উপকণ্ঠে থাকা পবার নওহাটা, দামকুড়া, কাঁটাখালীতে হাট রয়েছে। এছাড়াও জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট, ঝলমলিয়া হাট, গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট ও মহিষালবাড়ি হাট, বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর হাট, দুর্গাপুর হাট, মোহনপুরের কেশরহাট ও সাবাইহাট, তানোরের চৌবাড়িয়া ও মু-ুমালা হাট উল্লেখযোগ্য। সিটিহাট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও পবা উপজেলা প্রশাসন। আর উপজেলার হাটগুলো দেখে জেলা প্রশাসন। গেল দু’বছরের মত এবার করোনা সংকট না থাকায় রাজশাহী জেলা ও আশপাশের পশুহাটগুলো একদম দেশি গরুতেই জমজমাট হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজশাহীর পারীলা ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের খামারি গোলাম মোস্তফা বলেন, যতদিন যাচ্ছে গো-খাদ্যের দাম ততই বাড়ছে। আগে মাসে একটি গরুর জন্য ২/৩ হাজার টাকা খরচ করলেই হতো। কিন্তু এখন ৬/৭ হাজার টাকা খরচ পড়ে যাচ্ছে। তাই এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি হবে। এ অবস্থায় হাটে ক্রেতা হলে তারা লাভের মুখ দেখবে। না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন। রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, করোনা অতিমারীর কারণে গেল দুই বছর রাজশাহীর খামারিদের অনেক লোকসান হয়েছে। এরপরও তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন। এ কারণে নানান সংকট মোকাবিলা করে কোরবানির জন্য পশু লালন-পালন করেছেন। এবার মোট চাহিদার চেয়েও প্রায় ১০ হাজার গরু বেশি রয়েছে। ফলে দেশি গরু দিয়েই এবার কোরবানির চাহিদা পূরণ সম্ভব। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা হয়েছে বলে এগুলো অনেক বেশি নিরাপদ।