ঢাকা ১০:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

গরমে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা

  • আপডেট সময় : ১০:৫৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৫৮ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন১’ বিশ্বের ৪৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও আছে এই তালিকায়। গত মাসে ৫ জনের নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়, আর এখন পর্যন্ত অন্তত ৩২ জনের নমুনায় মিলেছে এর অস্তিত্ব। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শীত শেষে গরম বাড়লে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। এজন্য এখন থেকে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। দেশে করোনা পরিস্থিতি বেশ সময় ধরে স্থিতিশীল থাকলেও গত জানুয়ারি থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শুধু জানুয়ারি মাসেই রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩৮ জন, আর মারা গেছেন ৫ জন। আর ফেব্রুয়ারির ছয়দিনে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৫৪ জন।
দেশে গত ১৮ জানুয়ারি ৪ জন রোগীর নমুনায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন১ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর এখন পর্যন্ত আরও ২৭ জনের তথ্য করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএআইডি) প্রকাশ করেছে আইইডিসিআর এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ (আইদেশি)। ডাটাবেজের তথ্য বলছে, গাজীপুরে ২ জন, ঢাকায় ৯ জন, কিশোরগঞ্জে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, যশোরে ১ জন, সিলেটে ৩ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, দিনাজপুরে ১ জন, গোপালগঞ্জে ২ জন এবং চাঁদপুরে ১ জনের নমুনায় জেএন ১ ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা নাজমুল ইসলাম জানান, সব বন্দরে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলমান আছে। এর পাশাপাশি যারা উপসর্গ নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া সবাইকে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনা রোগী একটু বেশি আছে বর্তমানে। আমাদের এখানে ফেব্রুয়ারি- মার্চ, জুন-জুলাই থেকে রোগী বেড়ে যাওয়া শুরু হয়। এখন শীতের মধ্যে একটু বাড়লো। আমাদের এখানে করোনা মৌসুমি রোগের মতো হয়ে গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বলা যায় না, বাড়ার আশঙ্কা তো আছেই। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে হাসপাতালে যাওয়ার মতো তেমন রোগী নেই। আমাদের এখন অসুস্থ হলে পরীক্ষা করাতে হবে। অসুস্থ হলে বাইরে বের হওয়া যাবে না। যদি বের হতে হয় একান্ত প্রয়োজনে তাহলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি যেগুলো আছে তা মেনে চলতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আমাদের দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। সুতরাং সামনের দিনে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা আছে। আমরা হয়তো দেখবো ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। তারপর হয়তো অনেক হারে বাড়ছে এরকম দেখতে পারবো গরমের দিনে। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক সংক্রমণ হয়তো ঘটাতে পারবে না। কিন্তু সেটি এখনই পুরো নিশ্চিত হওয়া যাবে না। কারণ আরও মিউটেশন হয়ে তার আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। মিউটেশনের কারণে তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। তখন মৃত্যু বাড়বে। তাই আমাদের এখন থেকে সারভেইল্যান্স বাড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইন হালনাগাদ করতে হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে সব জায়গায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা যেন পর্যাপ্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গরমে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা

আপডেট সময় : ১০:৫৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন১’ বিশ্বের ৪৫টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশও আছে এই তালিকায়। গত মাসে ৫ জনের নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়, আর এখন পর্যন্ত অন্তত ৩২ জনের নমুনায় মিলেছে এর অস্তিত্ব। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শীত শেষে গরম বাড়লে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। এজন্য এখন থেকে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। দেশে করোনা পরিস্থিতি বেশ সময় ধরে স্থিতিশীল থাকলেও গত জানুয়ারি থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। শুধু জানুয়ারি মাসেই রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩৮ জন, আর মারা গেছেন ৫ জন। আর ফেব্রুয়ারির ছয়দিনে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২৫৪ জন।
দেশে গত ১৮ জানুয়ারি ৪ জন রোগীর নমুনায় নতুন ভ্যারিয়েন্ট জেএন১ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর এখন পর্যন্ত আরও ২৭ জনের তথ্য করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএআইডি) প্রকাশ করেছে আইইডিসিআর এবং ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভ (আইদেশি)। ডাটাবেজের তথ্য বলছে, গাজীপুরে ২ জন, ঢাকায় ৯ জন, কিশোরগঞ্জে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, যশোরে ১ জন, সিলেটে ৩ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, দিনাজপুরে ১ জন, গোপালগঞ্জে ২ জন এবং চাঁদপুরে ১ জনের নমুনায় জেএন ১ ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা নাজমুল ইসলাম জানান, সব বন্দরে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চলমান আছে। এর পাশাপাশি যারা উপসর্গ নিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া সবাইকে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অন্যান্য সময়ের চেয়ে করোনা রোগী একটু বেশি আছে বর্তমানে। আমাদের এখানে ফেব্রুয়ারি- মার্চ, জুন-জুলাই থেকে রোগী বেড়ে যাওয়া শুরু হয়। এখন শীতের মধ্যে একটু বাড়লো। আমাদের এখানে করোনা মৌসুমি রোগের মতো হয়ে গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বলা যায় না, বাড়ার আশঙ্কা তো আছেই। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে হাসপাতালে যাওয়ার মতো তেমন রোগী নেই। আমাদের এখন অসুস্থ হলে পরীক্ষা করাতে হবে। অসুস্থ হলে বাইরে বের হওয়া যাবে না। যদি বের হতে হয় একান্ত প্রয়োজনে তাহলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি যেগুলো আছে তা মেনে চলতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আমাদের দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। সুতরাং সামনের দিনে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা আছে। আমরা হয়তো দেখবো ধীরে ধীরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। তারপর হয়তো অনেক হারে বাড়ছে এরকম দেখতে পারবো গরমের দিনে। তিনি আরও বলেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক সংক্রমণ হয়তো ঘটাতে পারবে না। কিন্তু সেটি এখনই পুরো নিশ্চিত হওয়া যাবে না। কারণ আরও মিউটেশন হয়ে তার আচরণ পরিবর্তন করতে পারে। মিউটেশনের কারণে তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। তখন মৃত্যু বাড়বে। তাই আমাদের এখন থেকে সারভেইল্যান্স বাড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গাইডলাইন হালনাগাদ করতে হবে। চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে সব জায়গায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা যেন পর্যাপ্ত থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।