ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

গমের ভূষির এলসিতে এলো বাসমতি চাল ১৫০০ বস্তা আটক

  • আপডেট সময় : ০২:৩৯:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গমের ভূষির এলসি খুলে বাসমতি চাল আমদানিকালে বিজিবি ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ দুই ট্রাক চাল আটক করেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ভোমরা বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ডের তিন নং গেট ও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ভোমরা অফিসের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদরের আলীপুর এলাকা থেকে একটি ট্রাকভর্তি চাল আটক করা হয়েছে। ওই দুই ট্রাকে ১৫০০ বস্তার বেশি চাল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভোমরা বন্দরের প্রশাসনিক শুল্ক কর্মকর্তা দয়াল ম-ল জানান, আমদানিকারক সংস্থা যশোরের চুকনগরের ভাই ভাই স্টোর্সের স্বত্ত্বাধিকারী জয়দেব ম-ল গমের ভূষির এলসি খোলেন। সিএন্ড এফ এজেন্ট সাব্বির এন্টার প্রাইজের লাইন্সেসে বুধবার বিকালে ছাড় করায় সিঅ্যান্ডএফ হারু ঘোষ। এরমধ্যে ভোমরা বন্দরের পার্কিং ওয়ার্ডের তিন নং গেট থেকে বাসমতি চাল ভর্তি একটি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৭৪৩) আটক করে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আলীপুর এলাকা থেকে একটি বাসমতি চাল ভর্তি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৫৮২৯) ও ভূষি ভর্তি ট্রাক (যশোর-ট-১১-১৫৭৩) আটক করে বিজিবি। তাদের আটককৃত ট্রাকে মোটা চাল ও বাসমতি চালের শুল্কসহ জরিমানা আদায় করা হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ ঘটনায় কাস্টমসের কেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাস্টমসে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
ভোমরা সিএ-এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মকছুদ খান জানান, গমের ভুষির এলসি খুলে বাসমতি ও মোটা চাল ভর্তি একটি ট্রাক বুধবার রাতে বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ড থেকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিজিবি পার্কিং ইয়ার্ডের বাইরে থেকে একটি চাল ভর্তি ট্রাক ও ভুষি ভর্তি ট্রাক আটক করেছে। ভোমরা বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার অহিদুল ইসলাম জানান, শুল্ক কর্মকর্তা ও সিঅ্যান্ডএফকে ম্যানেজ করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বুধবার বিকালে গমের ভূষির পরিবর্তে চাল আনা হচ্ছে মর্মে তিনি খবর পান। পার্কি ইয়ার্ডে ভারতীয় ট্রাক তেকে নয়টি ট্রাকে চাল ও ভূষি তোলা হয়। এর মধ্যে আটককৃত ট্রাক দুটির একটিতে ভূষি থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপরটিতে থাকা চাল পরিমাপ করে শুল্ক বিভাগে জমা দেওয়া হবে। ওই ট্রাকে ২৬ কেজি বস্তার ৭৭০ বস্তা বাসমতি চাল আছে বলে ট্রাক চালক তাদেরকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, যেখানে এক কেজি গমের ভুষির শুল্ক এক টাকা ৪০ পয়সা সেক্ষেত্রে মোটা চালের শুল্ক ৮.৮০ টাকা। বাসমতি চালের শুল্ক অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে শুল্ক বিভাগ ও সিএ- এফ এর কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করেই সরকারের এ বিশাল শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছিল বলে তিনি মনে করেন। আটককৃত চাল ৩৩ ব্যাটালিয়নে নিয়ে পরিমাপ নির্ধারণ করার পর শুল্ক গুদামে জমা দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ি জানান, বুধবার সন্ধায় একজন পরিদর্শক শুল্ক কর্মকর্তা ও কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ওই মাল ছাড় করা হয়। সেক্ষেত্রে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সাধু সাজার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া কোনোভাবেই চালের পরিবর্তে ভূষি দেখিয়ে এলসি করানোর সুযোগ নেই। কাস্টমসের কতিপয় কর্মকর্তার অবৈধ সুবিধা নিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গমের ভূষির এলসিতে এলো বাসমতি চাল ১৫০০ বস্তা আটক

আপডেট সময় : ০২:৩৯:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২২

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গমের ভূষির এলসি খুলে বাসমতি চাল আমদানিকালে বিজিবি ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ দুই ট্রাক চাল আটক করেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ভোমরা বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ডের তিন নং গেট ও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ভোমরা অফিসের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদরের আলীপুর এলাকা থেকে একটি ট্রাকভর্তি চাল আটক করা হয়েছে। ওই দুই ট্রাকে ১৫০০ বস্তার বেশি চাল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভোমরা বন্দরের প্রশাসনিক শুল্ক কর্মকর্তা দয়াল ম-ল জানান, আমদানিকারক সংস্থা যশোরের চুকনগরের ভাই ভাই স্টোর্সের স্বত্ত্বাধিকারী জয়দেব ম-ল গমের ভূষির এলসি খোলেন। সিএন্ড এফ এজেন্ট সাব্বির এন্টার প্রাইজের লাইন্সেসে বুধবার বিকালে ছাড় করায় সিঅ্যান্ডএফ হারু ঘোষ। এরমধ্যে ভোমরা বন্দরের পার্কিং ওয়ার্ডের তিন নং গেট থেকে বাসমতি চাল ভর্তি একটি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৭৪৩) আটক করে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আলীপুর এলাকা থেকে একটি বাসমতি চাল ভর্তি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৫৮২৯) ও ভূষি ভর্তি ট্রাক (যশোর-ট-১১-১৫৭৩) আটক করে বিজিবি। তাদের আটককৃত ট্রাকে মোটা চাল ও বাসমতি চালের শুল্কসহ জরিমানা আদায় করা হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ ঘটনায় কাস্টমসের কেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাস্টমসে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
ভোমরা সিএ-এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মকছুদ খান জানান, গমের ভুষির এলসি খুলে বাসমতি ও মোটা চাল ভর্তি একটি ট্রাক বুধবার রাতে বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ড থেকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিজিবি পার্কিং ইয়ার্ডের বাইরে থেকে একটি চাল ভর্তি ট্রাক ও ভুষি ভর্তি ট্রাক আটক করেছে। ভোমরা বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার অহিদুল ইসলাম জানান, শুল্ক কর্মকর্তা ও সিঅ্যান্ডএফকে ম্যানেজ করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বুধবার বিকালে গমের ভূষির পরিবর্তে চাল আনা হচ্ছে মর্মে তিনি খবর পান। পার্কি ইয়ার্ডে ভারতীয় ট্রাক তেকে নয়টি ট্রাকে চাল ও ভূষি তোলা হয়। এর মধ্যে আটককৃত ট্রাক দুটির একটিতে ভূষি থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপরটিতে থাকা চাল পরিমাপ করে শুল্ক বিভাগে জমা দেওয়া হবে। ওই ট্রাকে ২৬ কেজি বস্তার ৭৭০ বস্তা বাসমতি চাল আছে বলে ট্রাক চালক তাদেরকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, যেখানে এক কেজি গমের ভুষির শুল্ক এক টাকা ৪০ পয়সা সেক্ষেত্রে মোটা চালের শুল্ক ৮.৮০ টাকা। বাসমতি চালের শুল্ক অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে শুল্ক বিভাগ ও সিএ- এফ এর কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করেই সরকারের এ বিশাল শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছিল বলে তিনি মনে করেন। আটককৃত চাল ৩৩ ব্যাটালিয়নে নিয়ে পরিমাপ নির্ধারণ করার পর শুল্ক গুদামে জমা দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ি জানান, বুধবার সন্ধায় একজন পরিদর্শক শুল্ক কর্মকর্তা ও কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ওই মাল ছাড় করা হয়। সেক্ষেত্রে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের সাধু সাজার কোনো সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া কোনোভাবেই চালের পরিবর্তে ভূষি দেখিয়ে এলসি করানোর সুযোগ নেই। কাস্টমসের কতিপয় কর্মকর্তার অবৈধ সুবিধা নিয়ে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।