ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

গত ৮ বছর পৃথিবী ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২
  • ১২২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : তাপমাত্রা রেকর্ড করা শুরু হওয়ার পর থেকে গত আট বছর পৃথিবী ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম। জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব যে এখন জলবায়ু সংকটে রয়েছে, এতে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়ুম-লে নির্গত রেকর্ড পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বরফও অনেক বেশি গলে যাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে পুয়ের্তো রিকো পর্যন্ত আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হচ্ছে। আলজেরিয়ার এল টার্ফ, সেফিত এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। মিসরে জাতিসংঘের কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের গ্রহ চরম বিপর্যয়ের মুখে।’
ডব্লিউএমওর আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক্-শিল্পযুগের (১৮৫০-১৯০০) গড় তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে। সে হিসাবে ২০১৬ সাল থেকে প্রতিটি বছরই সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হবে।
দুই বছর ধরে প্রাকৃতিক ‘লা নিনা’ বৈশ্বিক তাপমাত্রা যতটা হতো তার চেয়ে কম রেখেছে। তবে জলবায়ু এভাবে বদলাতে থাকলে ‘এল নিনো’ ফিরে আসবে। এতে ভবিষ্যতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরও বেশি বেড়ে যাবে।
ডব্লিউএমওর প্রতিবেদন আরও বলছে, নির্গমন অব্যাহত থাকার ফলে বায়ুম-লে কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের একটি মিথেনের বার্ষিক বৃদ্ধি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এখন ৩০ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে আর মহাসাগরগুলো আগের চেয়ে বেশি উষ্ণ। আল্পসে হিমবাহ গলে যাওয়ার আগের সব রেকর্ড ২০২২ সালে ভেঙে যায়। গড়ে ১৩ ফুট পর্যন্ত হিমবাহ গলেছে। প্রথমবারের মতো গ্রিনল্যান্ডের বরফের স্তরের ৩ হাজার ২০০ মিটার উচ্চ শিখরে তুষার নয়, বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। অ্যান্টার্কটিকার বরফ–সমুদ্র এলাকা তার সর্বনি¤œ স্তরে নেমে গেছে।
ডব্লিউএমওর মহাসচিব অধ্যাপক পেটারি টালাস বলেন, ‘উষ্ণায়ন যত বেশি হবে, প্রভাব তত খারাপ হবে।’ তিনি বলেন, ‘বায়ুম-লে বর্তমানে আমাদের যে বেশি পরিমাণের কার্বন ডাই-অক্সাইড রয়েছে, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখাটা এখন নাগালের মধ্যে নেই বললেই চলে।’
পৃথিবী জলবায়ু বিপর্যয়ের কতটা কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে সাম্প্রতিক বেশ কিছু প্রতিবেদনে তার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্য অর্জনে কোনো নির্ভরযোগ্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বর্তমানে যে মাত্রার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। কারণ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা এখন ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গত ৮ বছর পৃথিবী ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : তাপমাত্রা রেকর্ড করা শুরু হওয়ার পর থেকে গত আট বছর পৃথিবী ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম। জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব যে এখন জলবায়ু সংকটে রয়েছে, এতে সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বায়ুম-লে নির্গত রেকর্ড পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বরফও অনেক বেশি গলে যাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে পুয়ের্তো রিকো পর্যন্ত আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হচ্ছে। আলজেরিয়ার এল টার্ফ, সেফিত এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। মিসরে জাতিসংঘের কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন গতকাল রোববার এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের গ্রহ চরম বিপর্যয়ের মুখে।’
ডব্লিউএমওর আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা প্রাক্-শিল্পযুগের (১৮৫০-১৯০০) গড় তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে। সে হিসাবে ২০১৬ সাল থেকে প্রতিটি বছরই সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হবে।
দুই বছর ধরে প্রাকৃতিক ‘লা নিনা’ বৈশ্বিক তাপমাত্রা যতটা হতো তার চেয়ে কম রেখেছে। তবে জলবায়ু এভাবে বদলাতে থাকলে ‘এল নিনো’ ফিরে আসবে। এতে ভবিষ্যতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা আরও বেশি বেড়ে যাবে।
ডব্লিউএমওর প্রতিবেদন আরও বলছে, নির্গমন অব্যাহত থাকার ফলে বায়ুম-লে কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের একটি মিথেনের বার্ষিক বৃদ্ধি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এখন ৩০ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে বাড়ছে আর মহাসাগরগুলো আগের চেয়ে বেশি উষ্ণ। আল্পসে হিমবাহ গলে যাওয়ার আগের সব রেকর্ড ২০২২ সালে ভেঙে যায়। গড়ে ১৩ ফুট পর্যন্ত হিমবাহ গলেছে। প্রথমবারের মতো গ্রিনল্যান্ডের বরফের স্তরের ৩ হাজার ২০০ মিটার উচ্চ শিখরে তুষার নয়, বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। অ্যান্টার্কটিকার বরফ–সমুদ্র এলাকা তার সর্বনি¤œ স্তরে নেমে গেছে।
ডব্লিউএমওর মহাসচিব অধ্যাপক পেটারি টালাস বলেন, ‘উষ্ণায়ন যত বেশি হবে, প্রভাব তত খারাপ হবে।’ তিনি বলেন, ‘বায়ুম-লে বর্তমানে আমাদের যে বেশি পরিমাণের কার্বন ডাই-অক্সাইড রয়েছে, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখাটা এখন নাগালের মধ্যে নেই বললেই চলে।’
পৃথিবী জলবায়ু বিপর্যয়ের কতটা কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে সাম্প্রতিক বেশ কিছু প্রতিবেদনে তার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্য অর্জনে কোনো নির্ভরযোগ্য কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বর্তমানে যে মাত্রার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। কারণ, বৈশ্বিক তাপমাত্রা এখন ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।