কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, গণ-অভ্যুত্থান নতুন করে বেঁচে থাকার পথ দেখাচ্ছে। এই গণ-অভ্যুত্থানের মূলমন্ত্র হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকতে হবে। তরুণদের বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা ও চিন্তাজগতের পরিবর্তন আনতে হবে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন তিনি। ফরহাদ মজহার বলেন, আমাদের চিন্তা করতে শিখতে হবে। পুকুরে না নামলে যেমন সাঁতার শেখা যায় না, তেমনি চিন্তা শুরু না করলে চিন্তাভিত্তিক বিকাশ হবে না। মত আর চিন্তা কিন্তু এক নয়। চিন্তা করাটাও একটা ক্রিয়া।
তিনি আরো বলেন, একটা গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করি নাই গণ-অভ্যুত্থান কী? একটি সরকার পালিয়ে গেলেই কি গণ-অভ্যুত্থান হয়? জেলা, উপজালার কোথাও কি বদল হয়েছে? গণ-অভ্যুত্থান করেছি যেন শহর গ্রাম সব জায়গায় একটা পরিবর্তন হয়। কিন্তু এই চিলমারীর পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোনো পরিবর্তন হয়েছে? কোনো চিন্তা করেছেন? কী পরিবর্তন হল এই গণ-অভ্যুত্থানে?
ফরহাদ মজহার বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া ছিল জনগণ আগের শাসন চায় না। এই এলাকায় জনগণ চায় এমন একটা প্রশাসন। যারা এই এলাকার মানুষের চাওয়া-পাওয়া ও সিদ্ধান্ত স্থানীয়ভাবে নেবে। এটাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল মন্তব্য। আমাদের জীবন আমরা স্থানীয়ভাবে যাপনের সিদ্ধান্তের অধিকার চেয়েছি। কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার রাষ্ট্র দেয় না। রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ঢাকায় বসে। আমার করের টাকায় রাষ্ট্র চলে, কিন্তু আমার কোনো উপকারে আসে না। তিনি বলেন, ক্ষমতা বিক্রেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ঢাকা থেকে যে শাসন সেই শাসন ব্যবস্থা ভাঙতে হবে। যে আইন জনগণের বিপক্ষে যায়, সেই আইন আমরা চাই না। এর আগে চিলমারীতে নতুন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পণ্ডিত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ এর উদ্বোধন করেন ফরহাদ মজহার। পরে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পণ্ডিত বইমেলা আয়োজক কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম রাজা। এ সময় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী, মাহমুদুল হাসান বাবু, আনোয়ারুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।