ঢাকা ০৩:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
বগুড়ায় নাহিদ ইসলাম

গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

শনিবার বগুড়ায় পর্যটন মোটেলে এক অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বক্তব্য দেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম -ছবি সংগৃহীত

বগুড়া প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘যারা গণহত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার করবো। এই বাংলার মাটিতেই শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও যেসব পুলিশরা গুলি চালিয়ে আমাদের ভাইদের মেরেছে, আমরা তার বিচার নিশ্চিত করবো। বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন। তারা বলছে বিচার দেরি হবে, কিন্তু বিচার শুরু করতে হবে। বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। এবং যে সরকারই আসুক না কেন, এই বিচারে কেউ হাত দিতে পারবে না।’

শনিবার (৫ জুলাই) বগুড়ায় পর্যটন মোটেলে এক অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি, আপনাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, পৃথিবীর যা কিছুই দেওয়া হোক, সেই ক্ষতি পূরণ হবে না। আপনাদের পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। মানুষের মুক্তির জন্য শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন।

‘ফেরাউন চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। স্বৈরশাসকদের কখনও না কখনও পতন হয়। এবারও সেই ফেরাউনের পতন হয়েছে। আমরা এখন চাই, যে কারণে শহীরা মারা গেলেন, একটা স্বাধীন দেশ যেখানে স্বৈরাচার থাকবে না, সেরকম একটা দেশ গঠন করবো। সেটার জন্য আমাদের আরো সংগ্রাম করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই। গত এক বছর দেশ অনেক কিছু হয়েছে। আমরা হয়তো আপনাদের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি। আরো আগেই আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। আমরা সেটা পারিনি এ জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, আপনাদের সঙ্গে সম্পর্কটা আজীবনের। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো আপনাদের পাশে থাকার।’

জুলাই ঘোষণাপত্র ও সংস্কারের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘এই শহীদ পরিবার যারা আছে, তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। শুধু এই সরকার না, যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এটা করতে হবে। এটার জন্য আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। যে জুলাই ঘোষণাপত্রে এই শহীদদের কথা থাকবে, এই পরিবারগুলোর কথা থাকবে এবং সেটা সংবিধানে যুক্ত করা হবে। এবং জুলাই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের কী কী সংস্কার লাগবে সেই কথা থাকবে। আমরা এই দুটি দাবিতে সারা দেশে পদযাত্রা করছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

নাহিদকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা: বগুড়ায় পদযাত্রা শুরুর আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এসময় শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টায় শহরের পর্যটন মোটেলে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরা জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদের মাধ্যমে শহীদদের মর্যাদা ও আত্মত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের যারা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছেন, তাদের বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে দেশের কাঠামোগত সংস্কারও বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বছর ঘুরে আবারও জুলাই এসেছে। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহীদদের স্মরণের দিনগুলো পালিত হবে। শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্থায়ী। শুধু বর্তমান সরকার নয়, ভবিষ্যতের যে কোনো সরকারকেই শহীদ পরিবারগুলোর আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।’ শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নাহিদ ইসলাম এনসিপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে সাতমাথা পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ নেন। এছাড়া বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলা ও কিচক বন্দরে দলটির পক্ষ থেকে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারাও উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বগুড়ায় নাহিদ ইসলাম

গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন

আপডেট সময় : ০৪:৪৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

বগুড়া প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘যারা গণহত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার করবো। এই বাংলার মাটিতেই শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও যেসব পুলিশরা গুলি চালিয়ে আমাদের ভাইদের মেরেছে, আমরা তার বিচার নিশ্চিত করবো। বিচার ও সংস্কারের পরেই নির্বাচন। তারা বলছে বিচার দেরি হবে, কিন্তু বিচার শুরু করতে হবে। বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। এবং যে সরকারই আসুক না কেন, এই বিচারে কেউ হাত দিতে পারবে না।’

শনিবার (৫ জুলাই) বগুড়ায় পর্যটন মোটেলে এক অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই আন্দোলনের শহীদদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানি, আপনাদের পরিবারের যে ক্ষতি হয়েছে, পৃথিবীর যা কিছুই দেওয়া হোক, সেই ক্ষতি পূরণ হবে না। আপনাদের পরিবারের সদস্যরা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। মানুষের মুক্তির জন্য শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছেন।

‘ফেরাউন চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। স্বৈরশাসকদের কখনও না কখনও পতন হয়। এবারও সেই ফেরাউনের পতন হয়েছে। আমরা এখন চাই, যে কারণে শহীরা মারা গেলেন, একটা স্বাধীন দেশ যেখানে স্বৈরাচার থাকবে না, সেরকম একটা দেশ গঠন করবো। সেটার জন্য আমাদের আরো সংগ্রাম করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে থাকতে চাই। গত এক বছর দেশ অনেক কিছু হয়েছে। আমরা হয়তো আপনাদের প্রতি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারিনি। আরো আগেই আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। আমরা সেটা পারিনি এ জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, আপনাদের সঙ্গে সম্পর্কটা আজীবনের। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো আপনাদের পাশে থাকার।’

জুলাই ঘোষণাপত্র ও সংস্কারের বিষয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘এই শহীদ পরিবার যারা আছে, তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। শুধু এই সরকার না, যেই সরকারই ক্ষমতায় আসুক, এটা করতে হবে। এটার জন্য আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। যে জুলাই ঘোষণাপত্রে এই শহীদদের কথা থাকবে, এই পরিবারগুলোর কথা থাকবে এবং সেটা সংবিধানে যুক্ত করা হবে। এবং জুলাই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের কী কী সংস্কার লাগবে সেই কথা থাকবে। আমরা এই দুটি দাবিতে সারা দেশে পদযাত্রা করছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

নাহিদকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা: বগুড়ায় পদযাত্রা শুরুর আগে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এসময় শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টায় শহরের পর্যটন মোটেলে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরা জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবি করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদের মাধ্যমে শহীদদের মর্যাদা ও আত্মত্যাগ নিশ্চিত করা হবে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের যারা ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছেন, তাদের বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে দেশের কাঠামোগত সংস্কারও বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বছর ঘুরে আবারও জুলাই এসেছে। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহীদদের স্মরণের দিনগুলো পালিত হবে। শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্থায়ী। শুধু বর্তমান সরকার নয়, ভবিষ্যতের যে কোনো সরকারকেই শহীদ পরিবারগুলোর আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।’ শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নাহিদ ইসলাম এনসিপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে সাতমাথা পর্যন্ত পদযাত্রায় অংশ নেন। এছাড়া বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলা ও কিচক বন্দরে দলটির পক্ষ থেকে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারাও উপস্থিত ছিলেন।