ঢাকা ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

গণপরিবহনে ৮৭ শতাংশ নারী নিপীড়নের শিকার

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশে গণপরিবহনে যাতায়াতকালে ৮৭ শতাংশ নারী মৌখিক, শারীরিক ও অন্যান্যভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। আর যৌন হয়রানির শিকার হন শতাংশ ৩৬ নারী। সম্প্রতি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ে (ডিটিসিএ) আয়োজিত ‘গণপরিবহনে নারীর সম্মান রাখুন’ ক্যাম্পেইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারীদের বাসে চলাচলের বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক নাটিকায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও ইউএন উইমেন্স এবং সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতায় এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে গণপরিবহনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা এবং আচরণগত পরিবর্তন করতে ১৬১ জন বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের প্রশিক্ষণ এবং সনদ দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণ নেওয়া বিআরটিসির চালক বিক্রম বিশ্বাস বলেন, ‘গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি থেকে রক্ষা করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছি। বাসে নারী যাত্রী যেন হয়রানির শিকার না হন। বাসের কোনো যাত্রী এ ধরনের আচরণ করলে চালকসহ সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা যেন নারীদের হয়রানি বা যৌন নির্যাতন না করি সে বিষয়গুলো শেখানো হয়েছে। আমরা যদি বাসে নারীদের রক্ষা না করতে না পারি, তাহলে অতি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও খবর দিতে বলা হয়েছে।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘নিরাপদে চলা নারীর মৌলিক অধিকার। সে যেখানেই থাকুক, যে কাপড় পরে থাকুক বা যে কোনো অবস্থায় থাকুক তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের দায়িত্ব। সেটা না করতে পারলে সমাজের জন্য লজ্জার বিষয়। গণপরিবহনে নারীরা বিভিন্নভাবে সহিংসতা এবং যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে অবস্থিত সুইডেন রাষ্ট্রদূত এইচ ই নিকোলাস উইকস বলেন, ‘সবার জন্য উন্মুক্ত স্থানগুলোতে নারীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর সুরক্ষা বিঘ্নিত হলে একটা পরিবারই ক্ষতিগ্রস্ত হন না, পুরো সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নারীবান্ধব নীতি প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সুশীল সমাজ রাজনীতি দল সরকারের এবং সব স্তরের সব মানুষের করণীয় আছে। নারীর সুরক্ষা কোনো অপশন নাই এটা তাদের অধিকার।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্য ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘নারী ও মেয়েদের অবাধে, নিরাপদে ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে-যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় চলাফেরা করার অধিকার রয়েছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘গণপরিবহনে যৌন হয়রানি রোধ করা আমাদের দায়িত্ব। অনেক সময়, হয়রানির সাক্ষী হয়েও আমরা নীরব থাকি। কিন্তু নীরবতাই সমাধান নয়। আমাদের কথা বলতে হবে। পুরুষদেরও বুঝতে হবে যে নারীদের সমান অধিকার ও সম্মান প্রাপ্য।’

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার বলেন, ‘গণপরিবহনে নারীদের সম্মান করতে হবে। নারীদের নিজেদেরও এ বিষয়গুলোতে প্রতিবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সমাজের অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। এর পাশাপাশি সরকারের নজরদারি দরকার। গণপরিবহনে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ অনেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালকসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক, সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গণপরিবহনে ৮৭ শতাংশ নারী নিপীড়নের শিকার

আপডেট সময় : ০৬:৫৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

নারী ও শিশু ডেস্ক: বাংলাদেশে গণপরিবহনে যাতায়াতকালে ৮৭ শতাংশ নারী মৌখিক, শারীরিক ও অন্যান্যভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। আর যৌন হয়রানির শিকার হন শতাংশ ৩৬ নারী। সম্প্রতি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ে (ডিটিসিএ) আয়োজিত ‘গণপরিবহনে নারীর সম্মান রাখুন’ ক্যাম্পেইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারীদের বাসে চলাচলের বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক নাটিকায় এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও ইউএন উইমেন্স এবং সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতায় এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে গণপরিবহনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা এবং আচরণগত পরিবর্তন করতে ১৬১ জন বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের প্রশিক্ষণ এবং সনদ দেওয়া হয়।

প্রশিক্ষণ নেওয়া বিআরটিসির চালক বিক্রম বিশ্বাস বলেন, ‘গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি থেকে রক্ষা করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছি। বাসে নারী যাত্রী যেন হয়রানির শিকার না হন। বাসের কোনো যাত্রী এ ধরনের আচরণ করলে চালকসহ সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা যেন নারীদের হয়রানি বা যৌন নির্যাতন না করি সে বিষয়গুলো শেখানো হয়েছে। আমরা যদি বাসে নারীদের রক্ষা না করতে না পারি, তাহলে অতি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও খবর দিতে বলা হয়েছে।’

শুভেচ্ছা বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘নিরাপদে চলা নারীর মৌলিক অধিকার। সে যেখানেই থাকুক, যে কাপড় পরে থাকুক বা যে কোনো অবস্থায় থাকুক তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের দায়িত্ব। সেটা না করতে পারলে সমাজের জন্য লজ্জার বিষয়। গণপরিবহনে নারীরা বিভিন্নভাবে সহিংসতা এবং যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে অবস্থিত সুইডেন রাষ্ট্রদূত এইচ ই নিকোলাস উইকস বলেন, ‘সবার জন্য উন্মুক্ত স্থানগুলোতে নারীদের জন্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। নারীর সুরক্ষা বিঘ্নিত হলে একটা পরিবারই ক্ষতিগ্রস্ত হন না, পুরো সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নারীবান্ধব নীতি প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সুশীল সমাজ রাজনীতি দল সরকারের এবং সব স্তরের সব মানুষের করণীয় আছে। নারীর সুরক্ষা কোনো অপশন নাই এটা তাদের অধিকার।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্য ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘নারী ও মেয়েদের অবাধে, নিরাপদে ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে-যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় চলাফেরা করার অধিকার রয়েছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘গণপরিবহনে যৌন হয়রানি রোধ করা আমাদের দায়িত্ব। অনেক সময়, হয়রানির সাক্ষী হয়েও আমরা নীরব থাকি। কিন্তু নীরবতাই সমাধান নয়। আমাদের কথা বলতে হবে। পুরুষদেরও বুঝতে হবে যে নারীদের সমান অধিকার ও সম্মান প্রাপ্য।’

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার বলেন, ‘গণপরিবহনে নারীদের সম্মান করতে হবে। নারীদের নিজেদেরও এ বিষয়গুলোতে প্রতিবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সমাজের অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। এর পাশাপাশি সরকারের নজরদারি দরকার। গণপরিবহনে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ অনেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালকসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক, সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ