ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫

গণপরিবহনে নৈরাজ্য, দুর্ভোগে মানুষ

  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

ট্টগ্রাম প্রতিনিধি : জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বাড়ানোর ঘোষণার রাত পেরোতেই চট্টগ্রামে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। নগরীতে কার্যত বাস, হিউম্যান হলারসহ গণপরিবহন চলাচল বন্ধ আছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ যেসব গাড়ি চলছে, ভাড়া হাঁকাচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। সকালে কর্মস্থলে যেতে লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ির দেখা না পেয়ে অনেকে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যে। এদিকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে মহানগরীতে বাস চলাচলও অনেক কমে গেছে। অল্পসংখ্যক বাস চলাচল করলেও ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে এসব বাস নগরীতে পৌঁছার পর কিংবা নগরী ছেড়ে যাওয়ার সময় বিভিন্নস্থানে শ্রমিকরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ রাতেই জানিয়েছিল, শনিবার সকাল থেকে মহানগরীতে তারা গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখবে। তবে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। পরিবহন মালিক গ্রুপের এ সিদ্ধান্তের পরও ভোরের দিকে কিছু বাস, টেম্পু নগরীতে বের হতে দেখা যায়। কিন্তু নগরীর ইপিজেড এলাকা, টাইগার পাস, এ কে খান মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয় শ্রমিক নামধারী কিছু লোক। এর ফলে সকাল হতেই গণপরিবহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে অফিস ও কলকারখানাগামী মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। নগরীর টাইগার পাস এলাকায় বাসের জন্য প্রায় তিনঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন সন্তোষ ধর, তিনি হাজারী লেইনের একটি ফার্মেসির কর্মচারী। বিরক্ত সন্তোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাস পাচ্ছি না। টেক্সিতে উঠতে চাইলাম, ভাড়া চাচ্ছে ২০০ টাকা। অন্যসময় ৮০-১০০ টাকা দিয়ে যেতাম। টেক্সি চলে সিএনজিতে। সরকার তো সিএনজির দাম বাড়ায়নি। তেলের দাম বাড়িয়েছে। যেহেতু বাস চলছে না, সুযোগ বুঝে রিকশা, টেক্সি বেশি ভাড়া নিচ্ছে।’ এক ঘন্টারও বেশি সময় অপেক্ষার পর গাড়ি না পেয়ে টাইগার পাস থেকে বারিক বিল্ডিং এলাকায় কর্মস্থল পোশাক কারখানার দিকে হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে এক তরুণকে। শাহাদাত হোসেন নামে এ তরুণ বলেন, ‘গাড়ির মালিকদের কোনো সমস্যা নাই, সরকারেরও কোনো সমস্যা নাই।’ এ কে খান মোড় থেকে সিএনজি অটোরিকশায় প্রতিজন ১০ টাকা ভাড়ায় আসা যেত জিইসি মোড়ে। শনিবার সকালে সেই ১০ টাকার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাড়তি ভাড়া গুনে রওনা দেওয়া কবির নামে এক যাত্রী বলেন, ‘সব কপালের দোষ। ভাড়া বেড়েছে। ইনকাম তো বাড়েনি। মানুষের কথা চিন্তা করার কেউ এদেশে নেই।’ নগরীর ছয় নম্বর রুটের বাস চালক মো. শাকিল বলেন, ‘সরকার কাউকে না জানিয়ে তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাস চালাতে যে বাড়তি খরচ হবে সেটা যাত্রীরা কি আমাদের দেবে? আগে উঠানামা ৮ টাকা নিতাম। এখন যদি বলি দুই টাকা বাড়তি দেন, ঝগড়া হবে। সরকার একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিক, দেখা যায় কি হয়।’ সিএনজি অটোরিকশা চালক রহমত উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ি কম, এজন্য অনেকে ভাড়া বেশি নিচ্ছে। কেউ কারও কথা শুনছে না। যে যেভাবে পারে ফ্রি স্টাইলে চলছে। সরকার এভাবে হুট করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ভালো করেনি।’
মীরসরাই থেকে শুক্রবার প্রতিজন ৫০ টাকা ভাড়ায় নগরীতে এসেছিলেন শিখা রাণী ও তার মেয়ে সুমি দে। শনিবার সকালে মীরসরাই ফেরার জন্য এ কে খান মোড়ে গিয়ে জানতে পারেন, প্রতিজনের ভাড়া ১৫০ টাকা হয়ে গেছে। সুমি দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এভাবে সবকিছুর দাম বাড়লে আমরা চলব কিভাবে ? আমাদের তো বেঁচে থাকার কোনো উপায় নেই।’
একইভাবে নগরীর চান্দগাঁও বাস টার্মিনাল ও শাহ আমানত সেতু থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উদ্দেশে যেতেও বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাঁশখালীর একটি কলেজের শিক্ষিকা পপি দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে ক্লোজ ডোর বাসে শাহ আমানত ব্রিজ থেকে ১২০ টাকায় যেতাম। আজ ১৫০ টাকা নিয়েছে।’ সকাল ১০টার দিকে নগরীর এ কে খান মোড়ে শ্রমিকরা লাঠিসোঠা নিয়ে রাস্তায় নামে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আগের ভাড়াতেই দূরপাল্লার গাড়ি চালাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গাড়ি একে খান মোড়, অলঙ্কার মোড়ে আসার পর শ্রমিক নামধারী কিছু লোকজন বাধা দিচ্ছে। ড্রাইভারকে মারধর করছে। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।’ নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কিছু শ্রমিক নগরীতে যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়ে আমরা স্পটগুলোতে যাই। শ্রমিকদের আমরা বুঝিয়ে বলেছি যে, কেউ যদি গাড়ি চালাতে চায় তাহলে বাধা যেন না দেয়া হয়। চুয়েটের গাড়িগুলো আটকে রেখেছিল। সেগুলো আমরা যাবার পর রওনা দেয়। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত আছে।’ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘উপজেলা ভিত্তিক বাস বন্ধ নেই। তবে সংখ্যায় কম। কারণ মালিকেরাই বাস চালাতে দিচ্ছে না। ১০০ লিটার তেলে বাড়তি খরচ এখন ৩ হাজার ৪০০ টাকা। সেই টাকা লস দিয়ে মালিকরা গাড়ি চালাতে রাজি হচ্ছে না। আর শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে বাধা দিচ্ছে এ অভিযোগ সত্য নয়। কিছু বহিরাগত সুযোগসন্ধানী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে।’ চট্টগ্রামে শহর এলাকার বাস চলাচলকারী দুটি মালিক সমিতি হচ্ছে- চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিহন মালিক গ্রুপ ও চট্টগ্রাম বাস মালিক সমিতি। এর মধ্যে মালিক গ্রুপ শুধু গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে। চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছি। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক আছে। নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়। সরকার যদি ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে তখন আমরা সেই ভাড়া আদায় করব।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোববার থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু, ৮০ টাকায় মিলবে চিনি

গণপরিবহনে নৈরাজ্য, দুর্ভোগে মানুষ

আপডেট সময় : ০১:৪৭:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০২২

ট্টগ্রাম প্রতিনিধি : জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে বাড়ানোর ঘোষণার রাত পেরোতেই চট্টগ্রামে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। নগরীতে কার্যত বাস, হিউম্যান হলারসহ গণপরিবহন চলাচল বন্ধ আছে। সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ যেসব গাড়ি চলছে, ভাড়া হাঁকাচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। সকালে কর্মস্থলে যেতে লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ির দেখা না পেয়ে অনেকে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যে। এদিকে বিভিন্ন উপজেলা থেকে মহানগরীতে বাস চলাচলও অনেক কমে গেছে। অল্পসংখ্যক বাস চলাচল করলেও ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে এসব বাস নগরীতে পৌঁছার পর কিংবা নগরী ছেড়ে যাওয়ার সময় বিভিন্নস্থানে শ্রমিকরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ রাতেই জানিয়েছিল, শনিবার সকাল থেকে মহানগরীতে তারা গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখবে। তবে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। পরিবহন মালিক গ্রুপের এ সিদ্ধান্তের পরও ভোরের দিকে কিছু বাস, টেম্পু নগরীতে বের হতে দেখা যায়। কিন্তু নগরীর ইপিজেড এলাকা, টাইগার পাস, এ কে খান মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয় শ্রমিক নামধারী কিছু লোক। এর ফলে সকাল হতেই গণপরিবহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে অফিস ও কলকারখানাগামী মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। নগরীর টাইগার পাস এলাকায় বাসের জন্য প্রায় তিনঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন সন্তোষ ধর, তিনি হাজারী লেইনের একটি ফার্মেসির কর্মচারী। বিরক্ত সন্তোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাস পাচ্ছি না। টেক্সিতে উঠতে চাইলাম, ভাড়া চাচ্ছে ২০০ টাকা। অন্যসময় ৮০-১০০ টাকা দিয়ে যেতাম। টেক্সি চলে সিএনজিতে। সরকার তো সিএনজির দাম বাড়ায়নি। তেলের দাম বাড়িয়েছে। যেহেতু বাস চলছে না, সুযোগ বুঝে রিকশা, টেক্সি বেশি ভাড়া নিচ্ছে।’ এক ঘন্টারও বেশি সময় অপেক্ষার পর গাড়ি না পেয়ে টাইগার পাস থেকে বারিক বিল্ডিং এলাকায় কর্মস্থল পোশাক কারখানার দিকে হেঁটে রওনা দিতে দেখা গেছে এক তরুণকে। শাহাদাত হোসেন নামে এ তরুণ বলেন, ‘গাড়ির মালিকদের কোনো সমস্যা নাই, সরকারেরও কোনো সমস্যা নাই।’ এ কে খান মোড় থেকে সিএনজি অটোরিকশায় প্রতিজন ১০ টাকা ভাড়ায় আসা যেত জিইসি মোড়ে। শনিবার সকালে সেই ১০ টাকার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা। আধাঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাড়তি ভাড়া গুনে রওনা দেওয়া কবির নামে এক যাত্রী বলেন, ‘সব কপালের দোষ। ভাড়া বেড়েছে। ইনকাম তো বাড়েনি। মানুষের কথা চিন্তা করার কেউ এদেশে নেই।’ নগরীর ছয় নম্বর রুটের বাস চালক মো. শাকিল বলেন, ‘সরকার কাউকে না জানিয়ে তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বাস চালাতে যে বাড়তি খরচ হবে সেটা যাত্রীরা কি আমাদের দেবে? আগে উঠানামা ৮ টাকা নিতাম। এখন যদি বলি দুই টাকা বাড়তি দেন, ঝগড়া হবে। সরকার একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিক, দেখা যায় কি হয়।’ সিএনজি অটোরিকশা চালক রহমত উল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ি কম, এজন্য অনেকে ভাড়া বেশি নিচ্ছে। কেউ কারও কথা শুনছে না। যে যেভাবে পারে ফ্রি স্টাইলে চলছে। সরকার এভাবে হুট করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ভালো করেনি।’
মীরসরাই থেকে শুক্রবার প্রতিজন ৫০ টাকা ভাড়ায় নগরীতে এসেছিলেন শিখা রাণী ও তার মেয়ে সুমি দে। শনিবার সকালে মীরসরাই ফেরার জন্য এ কে খান মোড়ে গিয়ে জানতে পারেন, প্রতিজনের ভাড়া ১৫০ টাকা হয়ে গেছে। সুমি দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘এভাবে সবকিছুর দাম বাড়লে আমরা চলব কিভাবে ? আমাদের তো বেঁচে থাকার কোনো উপায় নেই।’
একইভাবে নগরীর চান্দগাঁও বাস টার্মিনাল ও শাহ আমানত সেতু থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের উদ্দেশে যেতেও বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাঁশখালীর একটি কলেজের শিক্ষিকা পপি দে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগে ক্লোজ ডোর বাসে শাহ আমানত ব্রিজ থেকে ১২০ টাকায় যেতাম। আজ ১৫০ টাকা নিয়েছে।’ সকাল ১০টার দিকে নগরীর এ কে খান মোড়ে শ্রমিকরা লাঠিসোঠা নিয়ে রাস্তায় নামে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আগের ভাড়াতেই দূরপাল্লার গাড়ি চালাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গাড়ি একে খান মোড়, অলঙ্কার মোড়ে আসার পর শ্রমিক নামধারী কিছু লোকজন বাধা দিচ্ছে। ড্রাইভারকে মারধর করছে। বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।’ নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘কিছু শ্রমিক নগরীতে যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পেয়ে আমরা স্পটগুলোতে যাই। শ্রমিকদের আমরা বুঝিয়ে বলেছি যে, কেউ যদি গাড়ি চালাতে চায় তাহলে বাধা যেন না দেয়া হয়। চুয়েটের গাড়িগুলো আটকে রেখেছিল। সেগুলো আমরা যাবার পর রওনা দেয়। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত আছে।’ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘উপজেলা ভিত্তিক বাস বন্ধ নেই। তবে সংখ্যায় কম। কারণ মালিকেরাই বাস চালাতে দিচ্ছে না। ১০০ লিটার তেলে বাড়তি খরচ এখন ৩ হাজার ৪০০ টাকা। সেই টাকা লস দিয়ে মালিকরা গাড়ি চালাতে রাজি হচ্ছে না। আর শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে বাধা দিচ্ছে এ অভিযোগ সত্য নয়। কিছু বহিরাগত সুযোগসন্ধানী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে।’ চট্টগ্রামে শহর এলাকার বাস চলাচলকারী দুটি মালিক সমিতি হচ্ছে- চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিহন মালিক গ্রুপ ও চট্টগ্রাম বাস মালিক সমিতি। এর মধ্যে মালিক গ্রুপ শুধু গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে। চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় গাড়ি চালাচ্ছি। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক আছে। নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়। সরকার যদি ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে তখন আমরা সেই ভাড়া আদায় করব।’