ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

গণতন্ত্রের জন্য আর কত অপেক্ষা, প্রশ্ন নজরুল ইসলাম খানের

  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নজরুল ইসলাম খান - ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার ও গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী না। এটা পরিপূরক। একটার জন্য আরেকটাকে আটকে রাখার সুযোগ নাই। সেজন্য আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের জনগণ আর কতদিন অপেক্ষা করবে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গর্বিত জনগণ আমরা, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছি, যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি এবং এখনো আমরা গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বসে আছি। সেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলছি, শ্লোগান দিচ্ছি, সভা-সমাবেশ করছি। কত দিন? কতবার আমাদেরকে এই কাজ করতে হবে?

ইতিহাসের রঙ্গমঞ্চে এ দেশের মানুষের বার বার গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এবং উল্টো যাত্রাকে সাপলুডু খেলার সঙ্গে তুলনা করেন নজরুল। তিনি বলেন, আমাদেরকে, এই বাংলাদেশের জনগণকে বার বার সেই সাপ-লুড়ু খেলার মত ৯৩ থেকে ৩ এ চলে আসতে হইতেছে কেন? আমরা ৯৩ থেকে ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭ কইরা ১০০ তে পৌঁছেতে চাই। এই পথে যারাই বাধা সৃষ্টি করবে, আমরা তাদের ওই সাপ খেলা লুডুর সাপ বলে মনে করি।

যারা সংস্কারের আগে নির্বাচনে রাজি নয়, তাদের সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, তারা আমাদেরকে বার বার ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। নানা রকমের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টির জন্য। এটা করতে হবে আগে, ওটা করতে হবে আগে! আগে-পরে করার প্রশ্ন তো নাই। যা যা করা দরকার সবই করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের অন্যায়, অপরাধের বিচার করার ওপর জোর দিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ছিল, যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা তাদের সাথে ছিল, তাদের সবার বিচার অবশ্যই করতে হবে। কারণ তারা আমার বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার বন্ধুর বিরুদ্ধে, আমার সহকর্মীর বিরুদ্ধে, আমার দেশবাসীর বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। অবশ্যই বিচার চাই। কিন্তু সেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না– এই প্রশ্ন যারা তোলে, তারা আসলে এই কথা বলে জনপ্রিয় কথার আড়ালে নির্বাচনটাকে বিলম্বিত করতে চায়। তিনি বলেন, আপনি জুলুম করতে পারেন যে, তিন দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে, সাত দিন বা দশ দিন বা এক মাসের মধ্যে বিচার করতে হবে। এটা করা উচিত? সুবিচারের জন্য এই শব্দটা কি ভালো? আমরা বলেছি যে, দ্রুত বিচার অবশ্যই করতে হবে। কয়েক দিন আগে আমরা লিখিতভাবে সরকারকেও বলেছি। আমরা বলেছি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল করেন আপনারা, একটা ট্রাইব্যুনালে হবে না, এত বেশি লোকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছেৃ। করে না করে না, করতে করতে কয়েকদিন আগে করল। এখন পর্যন্ত সেটা কার্যকর হয় নাই। দোষটা কার? আমাদের? ইনভেস্টিগেশন অফিসার নাই বেশি, আরো দিতে হবে, সেটা করা হচ্ছে না, বিলম্ব করা হচ্ছে। আসল উদ্দেশ্যটা কী?
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভা হয়।

সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা অপরাধ: নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই যে সংস্কার এবং নির্বাচনকে সামনা সামনি করে দেওয়া, এটা আরেকটা অপরাধ, এটা ভুল। আরে ডেমোক্রেসি ইটসেলফ ইজ এ রিফর্ম। এর আগে রাজতন্ত্র ছিল, সামন্তবাদ ছিল। গণতন্ত্র যে এসেছে, এটাও তো একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে এসেছে, একটা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এসেছে। আর সেই গণতন্ত্র সারা দুনিয়ায় অনেকভাবে কার্যকর। আমেরিকায় যেভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয়, ইংল্যান্ডে সেভাবে হয় না। ফ্রান্সে যেরকম কার্যকর হয়, ভারতে সেভাবে হয় না। নেপালে যেরকম হয় বাংলাদেশে সেরকম হয় না। একেক দেশে একেকভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয়। কাজেই সংস্কার আর গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী না, এটা পরিপূরক। সেজন্যই আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে।
জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গণতন্ত্রের জন্য আর কত অপেক্ষা, প্রশ্ন নজরুল ইসলাম খানের

আপডেট সময় : ০৯:০৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার ও গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী না। এটা পরিপূরক। একটার জন্য আরেকটাকে আটকে রাখার সুযোগ নাই। সেজন্য আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের জনগণ আর কতদিন অপেক্ষা করবে, সেই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গর্বিত জনগণ আমরা, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছি, যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি এবং এখনো আমরা গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বসে আছি। সেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলছি, শ্লোগান দিচ্ছি, সভা-সমাবেশ করছি। কত দিন? কতবার আমাদেরকে এই কাজ করতে হবে?

ইতিহাসের রঙ্গমঞ্চে এ দেশের মানুষের বার বার গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এবং উল্টো যাত্রাকে সাপলুডু খেলার সঙ্গে তুলনা করেন নজরুল। তিনি বলেন, আমাদেরকে, এই বাংলাদেশের জনগণকে বার বার সেই সাপ-লুড়ু খেলার মত ৯৩ থেকে ৩ এ চলে আসতে হইতেছে কেন? আমরা ৯৩ থেকে ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭ কইরা ১০০ তে পৌঁছেতে চাই। এই পথে যারাই বাধা সৃষ্টি করবে, আমরা তাদের ওই সাপ খেলা লুডুর সাপ বলে মনে করি।

যারা সংস্কারের আগে নির্বাচনে রাজি নয়, তাদের সমালোচনা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, তারা আমাদেরকে বার বার ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। নানা রকমের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টির জন্য। এটা করতে হবে আগে, ওটা করতে হবে আগে! আগে-পরে করার প্রশ্ন তো নাই। যা যা করা দরকার সবই করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের অন্যায়, অপরাধের বিচার করার ওপর জোর দিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ছিল, যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা তাদের সাথে ছিল, তাদের সবার বিচার অবশ্যই করতে হবে। কারণ তারা আমার বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার বন্ধুর বিরুদ্ধে, আমার সহকর্মীর বিরুদ্ধে, আমার দেশবাসীর বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। অবশ্যই বিচার চাই। কিন্তু সেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না– এই প্রশ্ন যারা তোলে, তারা আসলে এই কথা বলে জনপ্রিয় কথার আড়ালে নির্বাচনটাকে বিলম্বিত করতে চায়। তিনি বলেন, আপনি জুলুম করতে পারেন যে, তিন দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে, সাত দিন বা দশ দিন বা এক মাসের মধ্যে বিচার করতে হবে। এটা করা উচিত? সুবিচারের জন্য এই শব্দটা কি ভালো? আমরা বলেছি যে, দ্রুত বিচার অবশ্যই করতে হবে। কয়েক দিন আগে আমরা লিখিতভাবে সরকারকেও বলেছি। আমরা বলেছি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল করেন আপনারা, একটা ট্রাইব্যুনালে হবে না, এত বেশি লোকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছেৃ। করে না করে না, করতে করতে কয়েকদিন আগে করল। এখন পর্যন্ত সেটা কার্যকর হয় নাই। দোষটা কার? আমাদের? ইনভেস্টিগেশন অফিসার নাই বেশি, আরো দিতে হবে, সেটা করা হচ্ছে না, বিলম্ব করা হচ্ছে। আসল উদ্দেশ্যটা কী?
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই আলোচনা সভা হয়।

সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করা অপরাধ: নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই যে সংস্কার এবং নির্বাচনকে সামনা সামনি করে দেওয়া, এটা আরেকটা অপরাধ, এটা ভুল। আরে ডেমোক্রেসি ইটসেলফ ইজ এ রিফর্ম। এর আগে রাজতন্ত্র ছিল, সামন্তবাদ ছিল। গণতন্ত্র যে এসেছে, এটাও তো একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে এসেছে, একটা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এসেছে। আর সেই গণতন্ত্র সারা দুনিয়ায় অনেকভাবে কার্যকর। আমেরিকায় যেভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয়, ইংল্যান্ডে সেভাবে হয় না। ফ্রান্সে যেরকম কার্যকর হয়, ভারতে সেভাবে হয় না। নেপালে যেরকম হয় বাংলাদেশে সেরকম হয় না। একেক দেশে একেকভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয়। কাজেই সংস্কার আর গণতন্ত্র পরস্পরবিরোধী না, এটা পরিপূরক। সেজন্যই আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে।
জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।