ঢাকা ০৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খ্যাতিমান চিকিৎসক শুভাগত চৌধুরীর জীবনাবসান

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ডা. শুভাগত চৌধুরী- ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্ধযুগেরও বেশি সময় ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেলেন চিকিৎসক শুভাগত চৌধুরী; তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুপরিচিত এই লেখকের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তার ভাই ডাক্তার অরূপ রতন চৌধুরী।

তিনি বলেন, সকালে শুভাগত চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উনার কেমোথেরাপি চলছিল। আজ (বুধবার) সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি, বাসাতেই মারা যান তিনি। আমরা তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তার মরদেহ বারডেমের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে।

অরূপ রতন জানান, শুভাগত চৌধুরীর দুই মেয়ের একজন কানাডায় এবং অপরজন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তারা আসার পর শুক্রবার প্রয়াতের শেষকৃত্য করা হবে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে দেশি-বিদেশি গবেষণা সাময়িকীতে শুভাগত চৌধুরীর ৫০টির বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রাণরসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা-শিক্ষাপদ্ধতি ছিল তার গবেষণার বিষয়। তিনি ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন শেরেবাংলা জাতীয় পুরস্কার।

গত বছরের জুনে ৫ ক্যান্সার সারভাইভারের সম্মানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শুভাগত চৌধুরী বলেছিলেন, আমাকে বলা হয়েছিল চার বছর বাঁচব, এখন ছয় বছর ধরে বেঁচে আছি।

ক্যান্সার মারণ রোগ, এটা ঠিক নয়। ক্যান্সারকে সিনেমা, নাটকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা ঠিক না। ক্যান্সার নিয়ে বাঁচা যায় এবং ক্যান্সার জয় করে বলা যায়, ভয়ের কোনো কারণ নেই।

সাধারণ মানুষের জন্য ক্যান্সারের চিকিৎসায় তহবিল গঠনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে আসবে? এই নিয়ে কি আমরা ভাবছি?

চিকিৎসা খাতে খরচ দারিদ্রের একটি বড় কারণ। ক্যান্সার নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের একটা ফান্ড গঠন করা দরকার। সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসা সুলভ করতে পারলে আমাদের পুণ্য হবে।

১৯৪৭ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া ডা. শুভাগত পড়াশোনা করেছেন দেশে-বিদেশে। চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা করেছেন লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একসময়ের এ অধ্যক্ষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গবেষণা, প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকাসহ নানা দেশে ঘুরেছেন তিনি।

ডা. শুভাগত চৌধুরী অ্যাসোসিয়েশন অব নিউট্রিশনিস্ট অ্যান্ড ডায়াটেশিয়ানস ফর সোশ্যাল সার্ভিসেসের (এএনডিএসএস) উপদেষ্টা ছিলেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খ্যাতিমান চিকিৎসক শুভাগত চৌধুরীর জীবনাবসান

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্ধযুগেরও বেশি সময় ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মারা গেলেন চিকিৎসক শুভাগত চৌধুরী; তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে চিকিৎসাবিজ্ঞানের সুপরিচিত এই লেখকের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন তার ভাই ডাক্তার অরূপ রতন চৌধুরী।

তিনি বলেন, সকালে শুভাগত চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

উনার কেমোথেরাপি চলছিল। আজ (বুধবার) সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি, বাসাতেই মারা যান তিনি। আমরা তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তার মরদেহ বারডেমের মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছে।

অরূপ রতন জানান, শুভাগত চৌধুরীর দুই মেয়ের একজন কানাডায় এবং অপরজন অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। তারা আসার পর শুক্রবার প্রয়াতের শেষকৃত্য করা হবে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে দেশি-বিদেশি গবেষণা সাময়িকীতে শুভাগত চৌধুরীর ৫০টির বেশি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। প্রাণরসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা-শিক্ষাপদ্ধতি ছিল তার গবেষণার বিষয়। তিনি ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন শেরেবাংলা জাতীয় পুরস্কার।

গত বছরের জুনে ৫ ক্যান্সার সারভাইভারের সম্মানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শুভাগত চৌধুরী বলেছিলেন, আমাকে বলা হয়েছিল চার বছর বাঁচব, এখন ছয় বছর ধরে বেঁচে আছি।

ক্যান্সার মারণ রোগ, এটা ঠিক নয়। ক্যান্সারকে সিনেমা, নাটকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা ঠিক না। ক্যান্সার নিয়ে বাঁচা যায় এবং ক্যান্সার জয় করে বলা যায়, ভয়ের কোনো কারণ নেই।

সাধারণ মানুষের জন্য ক্যান্সারের চিকিৎসায় তহবিল গঠনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে আসবে? এই নিয়ে কি আমরা ভাবছি?

চিকিৎসা খাতে খরচ দারিদ্রের একটি বড় কারণ। ক্যান্সার নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের একটা ফান্ড গঠন করা দরকার। সাধারণ মানুষের ক্যান্সারের চিকিৎসা সুলভ করতে পারলে আমাদের পুণ্য হবে।

১৯৪৭ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া ডা. শুভাগত পড়াশোনা করেছেন দেশে-বিদেশে। চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা করেছেন লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একসময়ের এ অধ্যক্ষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গবেষণা, প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকাসহ নানা দেশে ঘুরেছেন তিনি।

ডা. শুভাগত চৌধুরী অ্যাসোসিয়েশন অব নিউট্রিশনিস্ট অ্যান্ড ডায়াটেশিয়ানস ফর সোশ্যাল সার্ভিসেসের (এএনডিএসএস) উপদেষ্টা ছিলেন।