অর্থনৈতিক ডেস্ক : দেশে খোলাবাজারে ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। মতিঝিল ও পল্টনের মানি এক্সচেঞ্জ গত সোমবার খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১০৮ টাকা ৭০ পয়সায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা। হাউসগুলো ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়। এর আগের দিন শনিবার খোলাবাজারে ১১১ টাকা ৫০ পয়সায় প্রতি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও এক ডলার কিনতে গ্রাহককে খরচ করতে হয়েছে ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা গত সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ডলারের সর্বোচ্চ রেকর্ড বিক্রয়মূল্য ছিল ১২০ টাকা পর্যন্ত। এ সময় ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ পরিদর্শন শুরু করে। তখন অবৈধভাবে ডলার ব্যবসার অভিযোগে ৪৫টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর সনদ না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করেছে। এদিকে সরকারের নানা উদ্যোগের পরও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬.৩৩ বিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৪৬.১২ বিলিয়ন ডলার। গত বৃহস্পতিবার কয়েকটি ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত বিক্রি ছাড়িয়েছে চার বিলিয়ন ডলার। এতে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬.৩৩ বিলিয়ন ডলারে। সূত্র জানায়, গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে সর্বোচ্চ চার হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর নানা সংকটে কমতে থাকে রিজার্ভ। গত বছরের অক্টোবরে রিজার্ভ কমে ৪৬.১২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছিল। এরপর চলতি বছরের জুনে রিজার্ভ আরো কমে দাঁড়ায় ৪১.৮২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে ইউএস ডলারের দাম নিয়ে অস্থিরতা কাটাতে রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের অভিন্ন দর ঘোষণা করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। তারা ব্যাংকগুলোর রপ্তানি বিল নগদায়ন ও সরাসরি প্রবাসীদের থেকে ডলার কেনায় ৯৯ টাকা দর বেঁধে দিয়েছে। এ ছাড়া ডলার কেনার গড় দরের সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানি দায় নিষ্পত্তি ও আন্ত ব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। গতকাল রবিবার আন্ত ব্যাংকে প্রতি ডলার সর্বনি¤œ ১০৩ টাকা ১৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা ৫৫ পয়সায় বিক্রি হয়। রবিবার সরকারি খাতের সোনালী ব্যাংক প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ৬৫ পয়সায় বিক্রি করেছে। রূপালী ব্যাংক ১০৬ টাকা ৯৫ পয়সা, অগ্রণী ব্যাংক ১০৮ টাকা এবং জনতা ব্যাংক ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রতি ডলার বিক্রি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যায়, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগে সেপ্টেম্বরে আগের মাসের তুলনায় এলসি খোলা কমেছে ৬৩ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বর মাসে ৫৭০ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়, যা আগস্টে ছিল ৬৩৩ কোটি ডলার। একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তিও কমেছে।