ঢাকা ০১:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

খেলাপি ঋণ নিয়ে আইএমএফের উদ্বেগ

  • আপডেট সময় : ০২:৪৮:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ব্যাংক খাতে ব্যাপকহারে বাড়ছে বেনামি ঋণ। এতে আর্থিক খাতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে খাতটির বিপদগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিকভাবে খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটি প্রায় ৯ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকে এ হার ২০ শতাংশের বেশি। এছাড়া সন্দেহজনক লেনদেন ও অর্থপাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছে আইএমএফ।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, প্রধান অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে এসব বিষয়ে উদ্বেগ জানায় সংস্থাটি। পাশাপাশি প্রতিকারে কি ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) উদ্বেগের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা জানান, আইএমএফের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হচ্ছে। বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষা এবং বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফ থেকে এই ঋণ নিতে চাইছে সরকার। এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ), এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) ও রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) কর্মসূচির আওতায় দেড় বিলিয়ন করে এই ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

গত বুধবার ঋণের বিষয়ে আলোচনা করতে ১৫ দিনের সফরে ঢাকায় আসে আইএমএফের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিনিধি দলটির কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে খেলাপি ঋণ, অর্থপাচার ছাড়াও টাকা ও ডলারের বিনিময় হার, জ্বালানি তেল আমদানিতে খরচ, সঞ্চয়পত্র খাতে সংস্কার, বন্ড বাজারের উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এর ছয় মাস আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। ফলে ছয় মাসের ব্যবধানেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৪২৯ কোটি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খেলাপি ঋণ নিয়ে আইএমএফের উদ্বেগ

আপডেট সময় : ০২:৪৮:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ব্যাংক খাতে ব্যাপকহারে বাড়ছে বেনামি ঋণ। এতে আর্থিক খাতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে খাতটির বিপদগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ)। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিকভাবে খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটি প্রায় ৯ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকে এ হার ২০ শতাংশের বেশি। এছাড়া সন্দেহজনক লেনদেন ও অর্থপাচার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ জানতে চেয়েছে আইএমএফ।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, প্রধান অর্থনীতিবিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে এসব বিষয়ে উদ্বেগ জানায় সংস্থাটি। পাশাপাশি প্রতিকারে কি ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) উদ্বেগের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা জানান, আইএমএফের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হচ্ছে। বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষা এবং বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফ থেকে এই ঋণ নিতে চাইছে সরকার। এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ), এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) ও রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) কর্মসূচির আওতায় দেড় বিলিয়ন করে এই ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

গত বুধবার ঋণের বিষয়ে আলোচনা করতে ১৫ দিনের সফরে ঢাকায় আসে আইএমএফের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিনিধি দলটির কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে খেলাপি ঋণ, অর্থপাচার ছাড়াও টাকা ও ডলারের বিনিময় হার, জ্বালানি তেল আমদানিতে খরচ, সঞ্চয়পত্র খাতে সংস্কার, বন্ড বাজারের উন্নয়নের বিষয়েও আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এর ছয় মাস আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। ফলে ছয় মাসের ব্যবধানেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৪২৯ কোটি।