নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ট্রাক চালকের পায়ে গুলি করার ঘটনায় অস্ত্রসহ ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি অস্ত্র, ৬টি ম্যাগাজিন ও ৪৯ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা হলেন- রমজান আহম্মেদ নয়ন (৩৪), যুবরাজ (৩৫), মো. ইব্রাহিম হাওলাদার (৩৮), মকবুল হোসেন মুকুল (৪০), সাজ্জাদ হোসেন প্রান্ত (২৭) ও রিফাতুল্লাহ নাঈম (৩৫)। গত ১০ মার্চ ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় খিলগাঁও থানায় একটি মামলা হয়। মামলার পর এ ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। তদন্তের এক পর্যায়ে সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর সবুজবাগ ও বাসাবো এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, গত ১০ মার্চ ভোরে সবুজবাগ থানাধীন বাইকদিয়া এলাকায় কয়েকজন সন্ত্রাসী একটি বালুভর্তি ড্রাম ট্রাকের গতিরোধ করে লাঠিসোঁটা দিয়ে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন পিস্তল বের করলে ট্রাকে অবস্থানরত ট্রাকের মালিক মো. গোলাম ফারুক (৫৫) ও ট্রাকের চালক আলম (৪৫) ভয় পেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা তৎক্ষনাৎ চালক আলমকে মারধর করতে থাকে এবং একজন সন্ত্রাসী তার ডান পায়ে গুলি করে। এ সংক্রান্ত সবুজবাগ থানায় একটি মামলা হলে ডিবি খিলগাঁও জোনাল টিম ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, সবুজবাগ থানাধীন বাইকদিয়া এলাকার জমি ক্রয়-বিক্রয় ও বালু ভরাট ব্যবসা নিয়ে বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিবদমান গ্রুপ দুটির একটির নেতৃত্বে রয়েছে বাবুল এবং আরেকটির নেতৃত্বে রয়েছে নজরুল। ঘটনার কিছুদিন আগে বাবুল গ্রুপ বাইকদিয়া এলাকায় একটি লোহার গেট ও কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে যাতে নজরুল গ্রুপ ওই এলাকায় বালু ভরাট করতে না পারে। ডিবির হাতে গ্রেপ্তাররা হলেন নজরুল গ্রুপের সদস্য। ঘটনার দিন বাইকদিয়াতে বাবুল গ্রুপের লাগানো সিসি ক্যামেরা ও লোহার গেট ভাঙতে একত্রিত হয় নজরুল গ্রুপের সন্ত্রাসীরা। তারা লোহার গেট ভাঙার সময় এই পথ দিয়ে যাওয়া একটি ট্রাক গতিরোধ করে। এ সময় ট্রাকের গতিরোধ করলে দুর্ঘটনাবশত তাদের সহযোগী হীরার গায়ে ট্রাকের আঘাত লাগলে রমজান ক্ষিপ্ত হয়ে ড্রাইভার আলমের পায়ে গুলি করে দেয়। পরে তারা আহত হীরাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে যে যার মতো পালিয়ে যায়। মূল হোতা রমজান আহম্মেদ নয়নের পিসিপিআর পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি, দস্যুতা ও গোলাগুলিসহ প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। সে খিলগাঁও, বাসাবো, সবুজবাগ, মুগদা ও মাদারটেক এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। মূলত ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে অস্ত্রবাজী করাই তার মূল পেশা।