নিজস্ব প্রতিবেদক : মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার এম খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির হাইকোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার খায়রুজ্জামানের আইনজীবীর করা এক আবেদনের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জাইনি মাজলান এ আদেশ দেন। বার্তাসংস্থা এফএমটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। আদালতের বিচারক জাইনি মাজলান বলেন, ‘আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে খায়রুজ্জামানকে হস্তান্তর করা হয়েছে, এমনটি হাইকোর্ট শুনতে চান না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করবো অভিবাসন (বিভাগ) এ বিষয়টি তাদের নিজের হাতে তুলে নেবে না।’
খায়রুজ্জামানের পক্ষে করা হেবিয়াস কর্পাস আবেদনের শুনানির জন্য মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট আগামী ২০ মে নতুন তারিখ ধার্য করেছেন। মূলত কাউকে ‘বেআইনিভাবে’ আটক করার অভিযোগ উঠলে তাকে আদালতের সামনে হাজির করার জন্য এ ধরনের রিট হয়। হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের আইনজীবী উওং সিউ মুন বলেছেন, ‘অন্তর্ববর্তীকালীন এই স্থগিতাদেশের বিষয়ে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে যোগাযোগ করবেন।’
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের আম্পাং এলাকা থেকে খায়রুজ্জামানকে আটক করে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। খায়রুজ্জামানের স্ত্রী রিটা রহমান দাবি করেন, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আসা রাজনৈতিক চাপের কারণে তার স্বামীকে আটক করে মালয়েশিয়া সরকার। খায়রুজ্জামানের আইনজীবীদের দাবি, খায়রুজ্জামান ইউএনএইচসিআর কার্ড নিয়ে মালয়েশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে বসবাস করছেন। তিনি এখন পর্যন্ত দেশটির অভিবাসন সংক্রান্ত কোনো আইন লঙ্ঘন করেননি। ফলে তাকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে। এম খায়রুজ্জামান সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর। তার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে অবসরে পাঠিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ২০০৩ সালে তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। পরে খায়রুজ্জামানকে সেনাবাহিনী থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৭ সালে তিনি মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তাকে ওই পদ থেকে বাতিল করে দেশে ফিরতে বলা হয় এবং পরবর্তীতে তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। জীবনের ঝুঁকি অনুমান করে তিনি কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) কাছে যান এবং মালয়েশিয়ায় তার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি পরিচয়পত্র পান। এরপর থেকে মালয়েশিয়ায়ই বসবাস করছেন তিনি।
খায়রুজ্জামানের প্রত্যর্পণ স্থগিত করলো মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ