ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খাসোগির ঘাতক দলের চারজন প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে

  • আপডেট সময় : ১১:২৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানায়।
খবরে বলা হয়, খাসোগি হত্যায় অংশ নেওয়া সৌদির চার এজেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আর এই চারজনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর অনুমোদন দিয়েছিল।
খাসোগি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক। তিনি একসময় সৌদির রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে কট্টর সমালোচক বনে যান। বিশেষ করে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ দেশটির বর্তমান নেতৃত্বের কট্টর সমালোচনা করছিলেন তিনি।
খাসোগি তাঁর বিয়ের জন্য কাগজপত্র আনতে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে যান। সৌদি আরব থেকে পাঠানো ঘাতক দল সেখানে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে গায়েব করে দেওয়া হয়। তাঁর দেহাবশেষ আর পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের একটি বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসভিত্তিক এই কোম্পানিটি ২০১৭ সালে সৌদির ওই চার এজেন্টকে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ২০১৪ সালে প্রথম সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অনুমোদন দেয়। পরে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের শুরুর দিক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের কোম্পানিটির মূল মালিক সারবেরাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। সারবেরাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লুইস বারমার এক নথিতে নিশ্চিত করেছেন যে সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ‘টায়ার ১ গ্রুপ’। তবে বারমারের ভাষ্য, এই প্রশিক্ষণ ছিল মূলত নিরাপত্তামূলক। পরবর্তী সময়ে সৌদির এজেন্টরা যে জঘন্য কাজ করেছেন, তার সঙ্গে এই প্রশিক্ষণের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। লুইস বারমারের বিবরণ অনুযায়ী, খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টায়ার ১ গ্রুপে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অবশ্য চারজনের মধ্যে দুজন ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পূর্ববর্তী একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। তবে তারা মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বশীল ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরব প্রথমে খাসোগি খুন হওয়ার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। পরে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শুরু থেকেই সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সন্দেহ করা হয়। তবে তিনি এই হত্যায় তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছেন। অবশ্য সৌদির শাসক হিসেবে তিনি এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদ- দিয়েছেন। তিনজনকে দিয়েছেন কারাদ-। পরে খাসোগির পরিবার হত্যাকারীদের মাফ করে দিলে মৃত্যুদ- পাওয়া পাঁচজনের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদ- করা হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

খাসোগির ঘাতক দলের চারজন প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে

আপডেট সময় : ১১:২৪:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানায়।
খবরে বলা হয়, খাসোগি হত্যায় অংশ নেওয়া সৌদির চার এজেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আর এই চারজনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর অনুমোদন দিয়েছিল।
খাসোগি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার কলাম লেখক। তিনি একসময় সৌদির রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে কট্টর সমালোচক বনে যান। বিশেষ করে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ দেশটির বর্তমান নেতৃত্বের কট্টর সমালোচনা করছিলেন তিনি।
খাসোগি তাঁর বিয়ের জন্য কাগজপত্র আনতে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে যান। সৌদি আরব থেকে পাঠানো ঘাতক দল সেখানে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে গায়েব করে দেওয়া হয়। তাঁর দেহাবশেষ আর পাওয়া যায়নি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের একটি বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসভিত্তিক এই কোম্পানিটি ২০১৭ সালে সৌদির ওই চার এজেন্টকে আধা সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ২০১৪ সালে প্রথম সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অনুমোদন দেয়। পরে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের শুরুর দিক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
‘টায়ার ১ গ্রুপ’ নামের কোম্পানিটির মূল মালিক সারবেরাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। সারবেরাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লুইস বারমার এক নথিতে নিশ্চিত করেছেন যে সৌদির এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ‘টায়ার ১ গ্রুপ’। তবে বারমারের ভাষ্য, এই প্রশিক্ষণ ছিল মূলত নিরাপত্তামূলক। পরবর্তী সময়ে সৌদির এজেন্টরা যে জঘন্য কাজ করেছেন, তার সঙ্গে এই প্রশিক্ষণের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। লুইস বারমারের বিবরণ অনুযায়ী, খাসোগির ঘাতক দলের চার সদস্য ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে টায়ার ১ গ্রুপে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অবশ্য চারজনের মধ্যে দুজন ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পূর্ববর্তী একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। তবে তারা মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বশীল ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরব প্রথমে খাসোগি খুন হওয়ার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করে। পরে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। খাসোগিকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শুরু থেকেই সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সন্দেহ করা হয়। তবে তিনি এই হত্যায় তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে আসছেন। অবশ্য সৌদির শাসক হিসেবে তিনি এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না বলে স্বীকার করে নিয়েছেন।
খাসোগি হত্যার দায়ে সৌদির আদালত দেশটির পাঁচজন নাগরিককে মৃত্যুদ- দিয়েছেন। তিনজনকে দিয়েছেন কারাদ-। পরে খাসোগির পরিবার হত্যাকারীদের মাফ করে দিলে মৃত্যুদ- পাওয়া পাঁচজনের সাজা কমিয়ে ২০ বছরের কারাদ- করা হয়।