ঢাকা ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যায় ৪৮ বছর পর মামলা

  • আপডেট সময় : ০২:৩১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় পাঁচ দশক পর। সে সময় হত্যাকা-ের শিকার কর্নেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রমের মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি লিখেছেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ‘সেনাবাহিনীর বিপথগামী, বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে’ নিহত হন তার বাবা কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা, যিনি তখন সেনাবাহিনীর ৭২ ব্রিগেডের কমান্ডার। মুক্তিযুদ্ধের দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তমকেও একই সময়ে হত্যা করা হয়। নাহিদ ইজাহার খান তার মামলায় বলেছেন, সেই সময়ের সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান এবং জাসদ নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু তাহেরের নির্দেশে ২০-২৫ জন সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকের একটি দল নাজমুল হুদাসহ তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কেবল ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক মেজর আব্দুল জলিল জীবিত আছেন জানিয়ে তাকেই মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার আজিমুল হক বলেন, “বুধবার রাতে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।” ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর খোন্দকার মোশতাক আহমেদ ক্ষমতায় বসলেও চলছিল অস্থিরতা। এর মধ্যেই ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকা-ের পর সেনা কর্মকর্তা খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান হয়, গৃহবন্দি করা হয় সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। ৭ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থান হয় সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা আবু তাহেরের নেতৃত্বে। তখন মুক্ত হন জিয়া; নিহত হন খালেদ মোশাররফসহ তার সঙ্গীরা। জিয়ার গড়া দল বিএনপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ওই দিনটি ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে; তাহেরের দল জাসদ পালন করে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে; ‘মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আওয়ামী বলয়ের সংগঠনগুলো। খালেদ মোশাররফ, এ টি এম হায়দার এবং নাজমুল হুদার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই ওই হত্যাকা-ের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর তখনকার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, দেরিতে হলেও এ বিচার সম্ভব। এখন নাজমুল হুদার মেয়ের মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে এত বছর পর সেই বিচার শুরুর পথ তৈরি হল।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যায় ৪৮ বছর পর মামলা

আপডেট সময় : ০২:৩১:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর অভ্যুত্থান পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তমসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে প্রায় পাঁচ দশক পর। সে সময় হত্যাকা-ের শিকার কর্নেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রমের মেয়ে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি লিখেছেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ‘সেনাবাহিনীর বিপথগামী, বিশৃঙ্খল সদস্যদের হাতে’ নিহত হন তার বাবা কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা, যিনি তখন সেনাবাহিনীর ৭২ ব্রিগেডের কমান্ডার। মুক্তিযুদ্ধের দুই সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তমকেও একই সময়ে হত্যা করা হয়। নাহিদ ইজাহার খান তার মামলায় বলেছেন, সেই সময়ের সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান এবং জাসদ নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু তাহেরের নির্দেশে ২০-২৫ জন সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকের একটি দল নাজমুল হুদাসহ তিন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কেবল ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাবেক মেজর আব্দুল জলিল জীবিত আছেন জানিয়ে তাকেই মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার আজিমুল হক বলেন, “বুধবার রাতে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।” ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর খোন্দকার মোশতাক আহমেদ ক্ষমতায় বসলেও চলছিল অস্থিরতা। এর মধ্যেই ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকা-ের পর সেনা কর্মকর্তা খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান হয়, গৃহবন্দি করা হয় সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে। ৭ নভেম্বর পাল্টা অভ্যুত্থান হয় সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা আবু তাহেরের নেতৃত্বে। তখন মুক্ত হন জিয়া; নিহত হন খালেদ মোশাররফসহ তার সঙ্গীরা। জিয়ার গড়া দল বিএনপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ওই দিনটি ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে; তাহেরের দল জাসদ পালন করে ‘সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে; ‘মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আওয়ামী বলয়ের সংগঠনগুলো। খালেদ মোশাররফ, এ টি এম হায়দার এবং নাজমুল হুদার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই ওই হত্যাকা-ের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর তখনকার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, দেরিতে হলেও এ বিচার সম্ভব। এখন নাজমুল হুদার মেয়ের মামলা দায়েরের মধ্য দিয়ে এত বছর পর সেই বিচার শুরুর পথ তৈরি হল।