ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
আদালতের পর্যবেক্ষণ

খালেদা জিয়াকে নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছে হয়রানি করতে

  • আপডেট সময় : ০৭:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাইকো দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এদিন পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছিল।’

বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালত নাইকো দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে একথা বলেন।

খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

রায় ঘোষণা করতে সকাল ১১টা ২৪ মিনিটের দিকে এজলাসে ওঠেন বিচারক। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হতে পারে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কীভাবে আসামির আত্মপক্ষ শুনানি করা হচ্ছে। ডিএলআর-এর ১৭ থেকে ২১ পর্যন্ত এই বিষয়ে বলা আছে। কোনো আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরায় থাকলে তার অনুপস্থিতিতে আত্মপক্ষ শুনানি করা যায়। আবার রায়ও দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া হচ্ছে।’

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। সেই মামলা চলেনি, তবুও এ মামলার ফুল ট্রায়াল হয়েছে। আসামি সেলিম ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এরআগে তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেখানেও বলেছেন, তাকে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’

মামলাটি তেজগাঁও থানার হলেও আসামি সেলিম ভূঁইয়াকে গুলশান থানায় রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে বিচারক আরও বলেন, সেখানে নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষকে ডিনাই করছে। তাদের এটা জানাও নাই। রেকর্ডে দেখা গেছে, তাকে যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, বর্হিবিভাগের টিকিটও আছে। তাকে বাইরে থেকে ওষুধও কিনে দেওয়া হয়, এর রশিদও আছে।

তিনি বলেন, সেলিম ভূঁইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। সে কারণে এই ১৬৪-কে (জবানবন্দি) ট্রু বলার সুযোগ নেই। এর উদ্দেশ্য হলো- গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের মামলাটিতে জড়ানোর জন্যই কিন্তু জোর করে এই ১৬৪ গ্রহণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এবং হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করা হয়েছে।’ পরে আদালত তাদের খালাসের রায় দেন।

এদিন মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। জামিনে থাকা অপর আসামিরা আদালতে হাজির হন। এদিকে সব আসামি খালাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আদালতের পর্যবেক্ষণ

খালেদা জিয়াকে নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছে হয়রানি করতে

আপডেট সময় : ০৭:৫৮:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাইকো দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এদিন পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের নাইকো মামলায় জড়ানো হয়েছিল।’

বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালত নাইকো দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে একথা বলেন।

খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

রায় ঘোষণা করতে সকাল ১১টা ২৪ মিনিটের দিকে এজলাসে ওঠেন বিচারক। এসময় তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হতে পারে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কীভাবে আসামির আত্মপক্ষ শুনানি করা হচ্ছে। ডিএলআর-এর ১৭ থেকে ২১ পর্যন্ত এই বিষয়ে বলা আছে। কোনো আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরায় থাকলে তার অনুপস্থিতিতে আত্মপক্ষ শুনানি করা যায়। আবার রায়ও দেওয়া যায়। সেই অনুযায়ী রায় দেওয়া হচ্ছে।’

পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘একই ধরনের মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও ছিল। সেই মামলা চলেনি, তবুও এ মামলার ফুল ট্রায়াল হয়েছে। আসামি সেলিম ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এরআগে তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেখানেও বলেছেন, তাকে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’

মামলাটি তেজগাঁও থানার হলেও আসামি সেলিম ভূঁইয়াকে গুলশান থানায় রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে বিচারক আরও বলেন, সেখানে নির্যাতনের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষকে ডিনাই করছে। তাদের এটা জানাও নাই। রেকর্ডে দেখা গেছে, তাকে যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, বর্হিবিভাগের টিকিটও আছে। তাকে বাইরে থেকে ওষুধও কিনে দেওয়া হয়, এর রশিদও আছে।

তিনি বলেন, সেলিম ভূঁইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া হয়েছে। সে কারণে এই ১৬৪-কে (জবানবন্দি) ট্রু বলার সুযোগ নেই। এর উদ্দেশ্য হলো- গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, কাশেম শরীফসহ অন্যদের মামলাটিতে জড়ানোর জন্যই কিন্তু জোর করে এই ১৬৪ গ্রহণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এবং হয়রানি করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের জড়িত করা হয়েছে।’ পরে আদালত তাদের খালাসের রায় দেন।

এদিন মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। জামিনে থাকা অপর আসামিরা আদালতে হাজির হন। এদিকে সব আসামি খালাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।