ঢাকা ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন গ্রহণের সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদনের ওপর মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন গ্রহণ করার সুযোগ নেই। আমরা এ মতামত দিয়ে আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন পেয়েছি। আইন মন্ত্রণালয়ে এটি বিবেচনা করার সুযোগ নেই। এই মতামত দিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। কারণ কিছুদিন আগে ছয় মাসের সাজা স্থগিত করার জন্য তার পরিবারের আবেদন সরকার গ্রহণ করেছে। একই বিষয়ে দ্বিতীয় বারের মতো আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে আবেদন এসেছে তাতে স্থায়ী জামিন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী দুটি শর্তে তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কাজেই আমরা নতুন করে আরেকটি আবেদন গ্রহণ করতে পারি না। আমাদের এ সুযোগ নেই। আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে আইনের বিদ্যমান অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১)-এর ধারার ক্ষমতাবলে শর্ত যুক্তভাবে তার সাজা স্থগিত রেখে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। প্রথমে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। পরে তা আরও আট বার বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আইনের যদি কোনও পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে খালেদা জিয়াকে দেওয়া শর্তযুক্ত মুক্তি আগে বাতিল করতে হবে। বাতিল করে আগের অবস্থায় যাওয়ার পর আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে।
আইনমন্ত্রী জানান, ৪০১ ধারার কোনও আদেশ আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। ৪০১ ধারায় কোনও কিছু নিষ্পত্তি হলে তা আবার নিষ্পত্তির সুযোগ নেই। যদি তিনি আবার জেলে যান এবং আদালত যদি আবার অনুমতি দেয় তখন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা ৪০১ ধারায় দেওয়া সুবিধা বাতিল করবো না। বাতিল করা অমানবিক। এই উপমহাদেশে ৪০১ ধারা আদালতে চ্যালেঞ্জ করার কোনও নজির নাই।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে শর্তসাপেক্ষ মুক্ত আছেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষ মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। প্রতি ছয় মাস পর পর আবেদন করা হলে নতুন করে মুক্তির আদেশ নবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে মূলত দুটি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। একটি হচ্ছে, ঢাকায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, দেশের বাইরে যেতে না পারা। তবে স¤প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বিধিবিধানের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন গ্রহণের সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আবেদনের ওপর মতামত দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন গ্রহণ করার সুযোগ নেই। আমরা এ মতামত দিয়ে আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন পেয়েছি। আইন মন্ত্রণালয়ে এটি বিবেচনা করার সুযোগ নেই। এই মতামত দিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। কারণ কিছুদিন আগে ছয় মাসের সাজা স্থগিত করার জন্য তার পরিবারের আবেদন সরকার গ্রহণ করেছে। একই বিষয়ে দ্বিতীয় বারের মতো আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে আবেদন এসেছে তাতে স্থায়ী জামিন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী দুটি শর্তে তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কাজেই আমরা নতুন করে আরেকটি আবেদন গ্রহণ করতে পারি না। আমাদের এ সুযোগ নেই। আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে আইনের বিদ্যমান অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১)-এর ধারার ক্ষমতাবলে শর্ত যুক্তভাবে তার সাজা স্থগিত রেখে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। প্রথমে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। পরে তা আরও আট বার বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আইনের যদি কোনও পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে খালেদা জিয়াকে দেওয়া শর্তযুক্ত মুক্তি আগে বাতিল করতে হবে। বাতিল করে আগের অবস্থায় যাওয়ার পর আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে।
আইনমন্ত্রী জানান, ৪০১ ধারার কোনও আদেশ আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। ৪০১ ধারায় কোনও কিছু নিষ্পত্তি হলে তা আবার নিষ্পত্তির সুযোগ নেই। যদি তিনি আবার জেলে যান এবং আদালত যদি আবার অনুমতি দেয় তখন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা ৪০১ ধারায় দেওয়া সুবিধা বাতিল করবো না। বাতিল করা অমানবিক। এই উপমহাদেশে ৪০১ ধারা আদালতে চ্যালেঞ্জ করার কোনও নজির নাই।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে শর্তসাপেক্ষ মুক্ত আছেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষ মুক্তি দেওয়া হয় তাকে। প্রতি ছয় মাস পর পর আবেদন করা হলে নতুন করে মুক্তির আদেশ নবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে মূলত দুটি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। একটি হচ্ছে, ঢাকায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, দেশের বাইরে যেতে না পারা। তবে স¤প্রতি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বিধিবিধানের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য।