ঢাকা ০১:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

খাবারে কীটনাশক শনাক্তকরণ উদ্ভাবন কিশোর শিরিষের

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: সত্যিটা স্বীকার করে নেওয়াই ভালো- আমরা প্রতিদিন যেসব শাকসবজি খাই, তাতে উৎপাদনের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। ফলে পুষ্টিবিদরা বলেন, রান্না বা কাঁচা খাওয়ার আগে এসব ধুয়ে নেওয়া উচিত। কিন্তু এতে কি কাজ হয়?
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার ১৪ বছর বয়সী বাসিন্দা শিরিষ সুভাষ বলছেন, ধোয়ার পরও কীটনাশকের খানিকটা থেকেই যায় এবং আমরা সেগুলো না জেনেই খেয়ে ফেলি। এ থেকে উদ্ধার করতে ‘পেস্টিস্ক্যান্ড’ নামের নতুন এক এআইভিত্তিক কীটনাশক ডিটেক্টর পদ্ধতি তৈরি করেছেন। এ উদ্ভাবনের কারণেই ‘২০২৪ থ্রিএম ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’ জিতেছেন তিনি।

‘পেস্টিস্ক্যান্ড’-এর মাধ্যমে খাবারের কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ একেবারে নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে।

থ্রিএমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলছে, স্নেলভিলের ‘গুইনেট স্কুল অফ ম্যাথমেটিক্স, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র নবম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী ‘আমেরিকার শীর্ষ তরুণ বিজ্ঞানী’র খেতাব জিতেছেন।
থ্রিএমের ইভিপি ও চিফ জনসংযোগ কর্মকর্তা টোরি ক্লার্ক বলেছেন, এই বছরের ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জের চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের জন্য সৃজনশীল সমাধান বিকাশে বিস্ময়কর এক দক্ষতা দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের বুদ্ধিমত্তা ও বৈজ্ঞানিক মন দেখে আমি মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত।

ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিবেদনে লিখেছে, শুভাষের এই পুরস্কার জেতার যাত্রা শুরু হয়েছে তার মাকে শাকসবজি ও ফল ধোয়া দেখে। এ জন্য তার মা তাকে সমসময় সতর্ক করে বলতেন, খাবারের আগে এসব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে এসব ধোয়া আসলেই কী কোনো কাজে দেয়, এ প্রশ্ন তার মনে বরাবরই ছিল আর এ কারণেই সুভাষ আগ্রহী হয়েছে এ নিয়ে কাজ করতে।

যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ শতাংশ উৎপাদিত পণ্যে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়; যা মানবদেহের ক্যানসার ও আলঝেইমারের মতো রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এসব ফল ও শাকসবজি খাওয়া নিরাপদ কি না তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘পেস্টিস্ক্যান্ড’ ঠিক এই উদ্দেশ্যেই তৈরি করেছে শুভাষ।
উৎপাদিত খাবারের পৃষ্ঠে আলো ফেলার মাধ্যমে কাজ করে ডিভাইসটি। আর এই তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত হয়ে আবার ফিরে এলে ওই তরঙ্গদৈর্ঘ্য মাপে এটি। স্ট্রবেরি, আপেল, টমেটো ও পালং শাক’সহ ১২ হাজারেরও বেশি খাবারের নমুনার উপর ডিভাইসটি পরীক্ষা করেছেন শুভাষ।
৮৫ শতাংশেরও বেশি নির্ভুলভাবে কাজ করতে সেন্সর ও এআইভিত্তিক প্রসেসর ব্যবহার করে পেস্টিস্ক্যান্ড বানিয়েছে শুভাষ। তার লক্ষ্য, এ প্রযুক্তিটি সবার নাগালে পৌঁছে দেওয়া, যাতে নিজেদের পছন্দমতো নিরাপদ খাবার বেছে নিতে পারেন তারা। এরপরও তিনি বলেছেন, উৎপাদিত ফল ও শাকসবজি খাবারের আগে অবশ্যই ধুয়ে নেওয়া উচিত। প্রতিযোগিতা থেকে পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া ২৫ হাজার ডলার এমআইটিতে ভর্তি হওয়ার পর তার শিক্ষাগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন তিনি।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খাবারে কীটনাশক শনাক্তকরণ উদ্ভাবন কিশোর শিরিষের

আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: সত্যিটা স্বীকার করে নেওয়াই ভালো- আমরা প্রতিদিন যেসব শাকসবজি খাই, তাতে উৎপাদনের সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কীটনাশক ব্যবহৃত হয়। ফলে পুষ্টিবিদরা বলেন, রান্না বা কাঁচা খাওয়ার আগে এসব ধুয়ে নেওয়া উচিত। কিন্তু এতে কি কাজ হয়?
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার ১৪ বছর বয়সী বাসিন্দা শিরিষ সুভাষ বলছেন, ধোয়ার পরও কীটনাশকের খানিকটা থেকেই যায় এবং আমরা সেগুলো না জেনেই খেয়ে ফেলি। এ থেকে উদ্ধার করতে ‘পেস্টিস্ক্যান্ড’ নামের নতুন এক এআইভিত্তিক কীটনাশক ডিটেক্টর পদ্ধতি তৈরি করেছেন। এ উদ্ভাবনের কারণেই ‘২০২৪ থ্রিএম ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জ’ জিতেছেন তিনি।

‘পেস্টিস্ক্যান্ড’-এর মাধ্যমে খাবারের কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ একেবারে নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যায় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে।

থ্রিএমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলছে, স্নেলভিলের ‘গুইনেট স্কুল অফ ম্যাথমেটিক্স, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র নবম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী ‘আমেরিকার শীর্ষ তরুণ বিজ্ঞানী’র খেতাব জিতেছেন।
থ্রিএমের ইভিপি ও চিফ জনসংযোগ কর্মকর্তা টোরি ক্লার্ক বলেছেন, এই বছরের ইয়ং সায়েন্টিস্ট চ্যালেঞ্জের চূড়ান্ত প্রতিযোগীরা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের জন্য সৃজনশীল সমাধান বিকাশে বিস্ময়কর এক দক্ষতা দেখিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের বুদ্ধিমত্তা ও বৈজ্ঞানিক মন দেখে আমি মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত।

ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিবেদনে লিখেছে, শুভাষের এই পুরস্কার জেতার যাত্রা শুরু হয়েছে তার মাকে শাকসবজি ও ফল ধোয়া দেখে। এ জন্য তার মা তাকে সমসময় সতর্ক করে বলতেন, খাবারের আগে এসব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তবে এসব ধোয়া আসলেই কী কোনো কাজে দেয়, এ প্রশ্ন তার মনে বরাবরই ছিল আর এ কারণেই সুভাষ আগ্রহী হয়েছে এ নিয়ে কাজ করতে।

যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ শতাংশ উৎপাদিত পণ্যে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়; যা মানবদেহের ক্যানসার ও আলঝেইমারের মতো রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এসব ফল ও শাকসবজি খাওয়া নিরাপদ কি না তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘পেস্টিস্ক্যান্ড’ ঠিক এই উদ্দেশ্যেই তৈরি করেছে শুভাষ।
উৎপাদিত খাবারের পৃষ্ঠে আলো ফেলার মাধ্যমে কাজ করে ডিভাইসটি। আর এই তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত হয়ে আবার ফিরে এলে ওই তরঙ্গদৈর্ঘ্য মাপে এটি। স্ট্রবেরি, আপেল, টমেটো ও পালং শাক’সহ ১২ হাজারেরও বেশি খাবারের নমুনার উপর ডিভাইসটি পরীক্ষা করেছেন শুভাষ।
৮৫ শতাংশেরও বেশি নির্ভুলভাবে কাজ করতে সেন্সর ও এআইভিত্তিক প্রসেসর ব্যবহার করে পেস্টিস্ক্যান্ড বানিয়েছে শুভাষ। তার লক্ষ্য, এ প্রযুক্তিটি সবার নাগালে পৌঁছে দেওয়া, যাতে নিজেদের পছন্দমতো নিরাপদ খাবার বেছে নিতে পারেন তারা। এরপরও তিনি বলেছেন, উৎপাদিত ফল ও শাকসবজি খাবারের আগে অবশ্যই ধুয়ে নেওয়া উচিত। প্রতিযোগিতা থেকে পুরষ্কার হিসেবে পাওয়া ২৫ হাজার ডলার এমআইটিতে ভর্তি হওয়ার পর তার শিক্ষাগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তার জন্য ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন তিনি।