নওগাঁ সংবাদদাতা : নওগাঁর বদলগাছীতে ৩৩৩ নম্বরে ফোনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা নিতে গেলে অসহায়দের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ফোন করে কয়েকবার উপজেলা পরিষদে যেতে বললেও দেওয়া হয়নি খাদ্য সহায়তা। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও খাদ্য না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনেককে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলপনা ইয়াসমিন। তিনি জানান, যাদের ডাকা হয়নি তারাও খাদ্য সহায়তা নিতে পরিষদে চলে আসেন। ফলে তাদের ত্রাণ দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, খাদ্য সহায়তা চেয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেন অসহায়রা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ফোন করে উপজেলা পরিষদে যেতে বলা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে পরিষদের চত্বরে ত্রাণ নিতে যান প্রায় অর্ধশত নারী-পুরুষ। কিন্তু বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাদের কোনো খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়নি। পরে ৫টার দিকে ২৮ জনকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। বাকিরা ত্রাণ না পেয়েই ফিরে যান।
এদিকে, ৩৩৩ নম্বরে ত্রাণের জন্য যারা ফোন করেন তাদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে আবেদনকারীদের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরসহ একটি তালিকা পাঠায় জাতীয় তথ্য বাতায়ন সেন্টার। সেই তালিকাটি যাচাই-বাছাইপূর্বক ত্রাণ সরবরাহ করার কথা। কিন্তু তালিকা আসার পর ইউএনও কোনো যাচাই করেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। দেউলিয়া গ্রামের আলিফ উদ্দীনের স্ত্রী বৃদ্ধা আজেদা (৫৯) অভিযোগ করে বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা থেকে ফোন করে বেলা ১১টার মধ্যে ত্রাণ নিতে উপজেলা পরিষদে যেতে বলা হয়। ফোন পাওয়ার পর সময়মতো পরিষদে যাই। কিন্তু সারাদিন বসে রাখার পর আমাকে বলে ত্রাণ ফুরিয়ে গেছে এবং কয়েকদিন পর আসতে বলা হয়। দু-তিনবার ঘুরতে হয়েছে। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর আবারও আমাকে যেতে বলা হয়। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পরিষদ চত্বরে অপেক্ষা করলেও ত্রাণ না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসি।
ত্রাণ নিতে আসা ফাজেদ, শাপলা, আসলাম ও আঞ্জুআরা বলেন, ইউএনও অফিস থেকে ফোন দিয়ে আমাদের দুপুর ১২টার মধ্যে যেতে বলা হয়। আমরা সময়মতো গেলেও বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়। অফিসের লোকদের কাছে আমরা ত্রাণ কখন পাবো জানতে চাইলে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। ডাঙ্গীসারা গ্রামের লাকী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে ইউএনও অফিস থেকে ফোন করে ১৬ সেপ্টেম্বর ত্রাণ নিতে যেতে বলা হয়। ফোন পেয়ে ওইদিন দুপুরে ত্রাণ নিতে যাই। কিন্তু আমাকে ত্রাণ না দিয়ে ধমক দিয়ে বলেন, পরে আবার জানানো হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাওয়ার ফিরতি তালিকা আসার পর যাচাই-বাছাইপূর্বক তাদের ত্রাণ দিতে হবে। কারণ, যারা ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান তারা যে সবাই ত্রাণ পাবে এমন কথা নয়। কারণ অনেকেই বাড়িতে চাল রেখেও খাদ্য সহায়তা চেয়ে ফোন দেয়। যাদের বাড়িতে ২০ কেজি চাল থাকবে তারা এই খাদ্য সহায়তা পাবে না।
খাদ্য সহায়তায় হয়রানির অভিযোগ
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ