ঢাকা ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়িতে মাল্টার বাম্পার ফলন, দামে হতাশ কৃষকেরা

  • আপডেট সময় : ০৩:৩০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা: খাগড়াছড়িতে এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

খুচরা বাজারে সবুজ মাল্টা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকায়, অথচ পাইকারি বাজারে কৃষকদের তা বিক্রি করতে হচ্ছে ৩০ টাকারও কম দামে। এতে উৎপাদন খরচ মিটিয়েও কাঙ্ক্ষিত লাভ পাচ্ছেন না তারা।

মাল্টা সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। এজন্য অনেকেই জুলাই মাস থেকেই পরিপক্ব হওয়ার আগেই ফল বিক্রি শুরু করেন। অথচ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই মাল্টা স্বাভাবিকভাবে পরিপক্ব হয়। অপরিপক্ব ফল বাজারজাত করায় ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যায়, দামও পড়ে যায়।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সরকারের উদ্যোগে যদি সংরক্ষণাগার, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ও সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যায়, তবে মাল্টা চাষ আরো লাভজনক হবে। পাশাপাশি কৃষি ঋণ ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো গেলে পাহাড়ি অঞ্চলে এ ফলের চাষে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।

মাল্টা চাষি অমর বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, তার এক একর জমিতে মিশরী ও বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও পাইকারি দরে কেজিপ্রতি ৩০ টাকার কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে বসে খুচরা বিক্রি করলে কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু এত পরিমাণ মাল্টা খুচরা বিক্রি করা সম্ভব নয়। দ্রুত বিক্রি না করলে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে।

খাগড়াছড়ি বাজারের মাল্টা ব্যবসায়ী মিলন মিয়া জানান, তিনি এ বছর তিনটি বাগান কিনেছেন। কিন্তু বাজারে দাম কম থাকায় বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতি কেজি মাল্টা গাছ থেকে ছিড়ে আনতেই ৭-৮ টাকা খরচ হয়। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করলে বড় ধরনের লোকসান হয়।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ৬৮০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন। গত বছর ৬২০ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৩৪১ টন মাল্টা উৎপাদন হয়েছিল।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বলেন, খাগড়াছড়িতে বারি-১ সহ বিভিন্ন জাতের মাল্টা চাষ হচ্ছে। তবে পরিচর্যায় ঘাটতি হলে ফলন কমে যায়। তিনি বলেন, পাহাড়ে মাল্টা চাষে সেচসহ পরিচর্যায় খরচ কিছুটা বেশি বাড়ে। আমরা চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি। রোগমুক্ত রাখতে ও ফলের ঝরে পড়া রোধে অনুখাদ্য প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে, হজমে সহায়তা করে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

এসি/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

খাগড়াছড়িতে মাল্টার বাম্পার ফলন, দামে হতাশ কৃষকেরা

আপডেট সময় : ০৩:৩০:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা: খাগড়াছড়িতে এ বছর মাল্টার বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

খুচরা বাজারে সবুজ মাল্টা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকায়, অথচ পাইকারি বাজারে কৃষকদের তা বিক্রি করতে হচ্ছে ৩০ টাকারও কম দামে। এতে উৎপাদন খরচ মিটিয়েও কাঙ্ক্ষিত লাভ পাচ্ছেন না তারা।

মাল্টা সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে লোকসানের মুখে পড়তে হয়। এজন্য অনেকেই জুলাই মাস থেকেই পরিপক্ব হওয়ার আগেই ফল বিক্রি শুরু করেন। অথচ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই মাল্টা স্বাভাবিকভাবে পরিপক্ব হয়। অপরিপক্ব ফল বাজারজাত করায় ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যায়, দামও পড়ে যায়।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, সরকারের উদ্যোগে যদি সংরক্ষণাগার, ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ও সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যায়, তবে মাল্টা চাষ আরো লাভজনক হবে। পাশাপাশি কৃষি ঋণ ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো গেলে পাহাড়ি অঞ্চলে এ ফলের চাষে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।

মাল্টা চাষি অমর বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, তার এক একর জমিতে মিশরী ও বারি-১ জাতের মাল্টা চাষ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও পাইকারি দরে কেজিপ্রতি ৩০ টাকার কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে বসে খুচরা বিক্রি করলে কিছুটা লাভ হয়। কিন্তু এত পরিমাণ মাল্টা খুচরা বিক্রি করা সম্ভব নয়। দ্রুত বিক্রি না করলে ঝরে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে।

খাগড়াছড়ি বাজারের মাল্টা ব্যবসায়ী মিলন মিয়া জানান, তিনি এ বছর তিনটি বাগান কিনেছেন। কিন্তু বাজারে দাম কম থাকায় বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতি কেজি মাল্টা গাছ থেকে ছিড়ে আনতেই ৭-৮ টাকা খরচ হয়। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি করলে বড় ধরনের লোকসান হয়।

খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় ৬৮০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন। গত বছর ৬২০ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৩৪১ টন মাল্টা উৎপাদন হয়েছিল।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ বাছিরুল আলম বলেন, খাগড়াছড়িতে বারি-১ সহ বিভিন্ন জাতের মাল্টা চাষ হচ্ছে। তবে পরিচর্যায় ঘাটতি হলে ফলন কমে যায়। তিনি বলেন, পাহাড়ে মাল্টা চাষে সেচসহ পরিচর্যায় খরচ কিছুটা বেশি বাড়ে। আমরা চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি। রোগমুক্ত রাখতে ও ফলের ঝরে পড়া রোধে অনুখাদ্য প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে, হজমে সহায়তা করে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

এসি/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫