ঢাকা ০৬:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

খসড়া আইন ঠেকাতে সংবাদভিত্তিক কনটেন্ট মোছার হুমকি মেটার

  • আপডেট সময় : ১২:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : কংগ্রেসে উত্থাপিত এক খসড়া প্রস্তাব আইন হিসেবে পাশ হওয়া ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল সংবাদমাধ্যমের কনটেন্ট মুছে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড। খসড়া প্রস্তাবটি আইন হিসেবে পাশ হলে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া সংবাদের কনটেন্ট থেকে আসা আয়ের আরও বড় ভাগ চাইতে পারবে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এ পরিস্থিতিতে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন হুমকি দিয়েছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অংশ হিসেবে কংগ্রেস যদি এ হঠকারী সাংবাদিকতা আইন পাশ করে, তবে আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল সংবাদ মুছে দেওয়ার কথা ভাবতে বাধ্য হব।”
মার্ক জাকারবার্গের কোম্পানি দাবি করছে, পাঠকের অভাবে ধুঁকতে থাকা সংবাদমাধ্যমগুলোকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ফেসবুক। ‘দিন শেষে উপকৃত হচ্ছেন’ বলেই সংবাদ প্রকাশকরা তাদের কনটেন্ট ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার করছেন-দাবি মেটার। মার্কিন কংগ্রেসে ‘জার্নালিজম কম্পিটিশন অ্যান্ড প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট (জেসিপিএ)’ প্রস্তাব তুলেছেন সিনেটর এমি ক্লোবুশার। তবে, এতে ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান- উভয় দলের সমর্থন আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ আইন পাশ হলে সমন্বিতভাবে ফেসবুক তথা মেটার কাছ থেকে আরও বড় আকারে আয়ের ভাগ দাবি করার মতো শক্ত অবস্থানে থাকবেন সংবাদ প্রকাশক ও প্রচারকরা। মিডিয়া কোম্পানিগুলো বলছে, নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে শেয়ার হওয়ার সংবাদের কনটেন্ট থেকে ব্যাপক হারে কামাই করে ফেসবুক তথা মেটা প্ল্যাটফর্মস। মহামারি চলাকালীন টিকে থাকার লড়াই করছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো; কিন্তু, ওই একই সময়ে ব্যাপকহারে মুনাফা কামাই করেছে মেটা। কিন্তু মেটার দাবি, এই বর্ণনা ভুল এবং বাস্তবতা উল্টো। উল্টো পাঠক ও দর্শকদের সংবাদমাধ্যমগুলোর নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের দিকে ঠেলে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করেছে কোম্পানিটি। জাকারবার্গের কোম্পানি আরও দাবি করছে, বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শেয়ার হওয়া সংবাদ কনটেন্ট থেকে তাদের আয় খুবই সীমিত। গত বছরের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়াতেও একই ধরনের একটি আইন পাশ হওয়ার জেরে কিছু সময়ের জন্য ফেসবুক সেবা বন্ধ ছিল দেশটির বাজারে। সমালোচনার মুখে দ্রুত সে অবস্থান থেকে সরে এসে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেছিল মেটা প্ল্যাটফর্মস। অস্ট্রেলিয়ার আইনটি খসড়া প্রস্তাব পর্যায়ে থাকাকালীন মেটার এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিলেন, “সংবাদ থেকে ফেসবুকের আয় আসে খুবই সীমিত। মানুষ নিজের নিউজ ফিডে যতো কনটেন্ট দেখেন তার ৪ শতাংশেরও কম সংবাদ প্রতিবেদনের পোস্ট।”
স্থানীয় বাজারে ‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রভাব-প্রতিপত্তির লাগাম টানতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। জেসিপিএ সেই উদ্যোগেরই অংশ বলে উল্লেখ রয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে। খসড়া প্রস্তাবের সমর্থকরা বলছেন, এটি আইন হিসেবে পাশ না হলে কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্থানীয় খবরের কাগজে’ পরিণত হবে ফেসবুক। মেটা মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে ‘জীবন্ত খেয়ে ফেলছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ‘আমেরিকান ইকোনমিক লিবার্টিজ প্রোজেক্ট’-এর গবেষণা বিভাগের পরিচালক ম্যাট স্টোলার। “মেটার কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা থেকে আবারও প্রমাণিত হল যে কেন এই মনোপলি বৈশ্বিক গণতন্ত্রের জন্য হুমকি,” বিবিসিকে বলেন স্টোলার।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

খসড়া আইন ঠেকাতে সংবাদভিত্তিক কনটেন্ট মোছার হুমকি মেটার

আপডেট সময় : ১২:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

প্রযুক্তি ডেস্ক : কংগ্রেসে উত্থাপিত এক খসড়া প্রস্তাব আইন হিসেবে পাশ হওয়া ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল সংবাদমাধ্যমের কনটেন্ট মুছে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকর্পোরেটেড। খসড়া প্রস্তাবটি আইন হিসেবে পাশ হলে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া সংবাদের কনটেন্ট থেকে আসা আয়ের আরও বড় ভাগ চাইতে পারবে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এ পরিস্থিতিতে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন হুমকি দিয়েছেন, “জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অংশ হিসেবে কংগ্রেস যদি এ হঠকারী সাংবাদিকতা আইন পাশ করে, তবে আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সকল সংবাদ মুছে দেওয়ার কথা ভাবতে বাধ্য হব।”
মার্ক জাকারবার্গের কোম্পানি দাবি করছে, পাঠকের অভাবে ধুঁকতে থাকা সংবাদমাধ্যমগুলোকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ফেসবুক। ‘দিন শেষে উপকৃত হচ্ছেন’ বলেই সংবাদ প্রকাশকরা তাদের কনটেন্ট ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার করছেন-দাবি মেটার। মার্কিন কংগ্রেসে ‘জার্নালিজম কম্পিটিশন অ্যান্ড প্রিজার্ভেশন অ্যাক্ট (জেসিপিএ)’ প্রস্তাব তুলেছেন সিনেটর এমি ক্লোবুশার। তবে, এতে ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান- উভয় দলের সমর্থন আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ আইন পাশ হলে সমন্বিতভাবে ফেসবুক তথা মেটার কাছ থেকে আরও বড় আকারে আয়ের ভাগ দাবি করার মতো শক্ত অবস্থানে থাকবেন সংবাদ প্রকাশক ও প্রচারকরা। মিডিয়া কোম্পানিগুলো বলছে, নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে শেয়ার হওয়ার সংবাদের কনটেন্ট থেকে ব্যাপক হারে কামাই করে ফেসবুক তথা মেটা প্ল্যাটফর্মস। মহামারি চলাকালীন টিকে থাকার লড়াই করছিল যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো; কিন্তু, ওই একই সময়ে ব্যাপকহারে মুনাফা কামাই করেছে মেটা। কিন্তু মেটার দাবি, এই বর্ণনা ভুল এবং বাস্তবতা উল্টো। উল্টো পাঠক ও দর্শকদের সংবাদমাধ্যমগুলোর নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের দিকে ঠেলে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করেছে কোম্পানিটি। জাকারবার্গের কোম্পানি আরও দাবি করছে, বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শেয়ার হওয়া সংবাদ কনটেন্ট থেকে তাদের আয় খুবই সীমিত। গত বছরের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়াতেও একই ধরনের একটি আইন পাশ হওয়ার জেরে কিছু সময়ের জন্য ফেসবুক সেবা বন্ধ ছিল দেশটির বাজারে। সমালোচনার মুখে দ্রুত সে অবস্থান থেকে সরে এসে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেছিল মেটা প্ল্যাটফর্মস। অস্ট্রেলিয়ার আইনটি খসড়া প্রস্তাব পর্যায়ে থাকাকালীন মেটার এক মুখপাত্র বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিলেন, “সংবাদ থেকে ফেসবুকের আয় আসে খুবই সীমিত। মানুষ নিজের নিউজ ফিডে যতো কনটেন্ট দেখেন তার ৪ শতাংশেরও কম সংবাদ প্রতিবেদনের পোস্ট।”
স্থানীয় বাজারে ‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রভাব-প্রতিপত্তির লাগাম টানতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। জেসিপিএ সেই উদ্যোগেরই অংশ বলে উল্লেখ রয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে। খসড়া প্রস্তাবের সমর্থকরা বলছেন, এটি আইন হিসেবে পাশ না হলে কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্থানীয় খবরের কাগজে’ পরিণত হবে ফেসবুক। মেটা মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে ‘জীবন্ত খেয়ে ফেলছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ‘আমেরিকান ইকোনমিক লিবার্টিজ প্রোজেক্ট’-এর গবেষণা বিভাগের পরিচালক ম্যাট স্টোলার। “মেটার কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা থেকে আবারও প্রমাণিত হল যে কেন এই মনোপলি বৈশ্বিক গণতন্ত্রের জন্য হুমকি,” বিবিসিকে বলেন স্টোলার।