বিনোদন ডেস্ক: ‘ক্ষমতায় না থাকলে সবাই দেশ প্রেমিক, আর ক্ষমতায় গেলে সবাই…!’- এমনই এক বার্তা দিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের কৌতূহল জাগিয়েছেন অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। ওই পোস্টের সঙ্গে একটি রাগের ইমোজিও ব্যবহার করেছেন তিনি।
বুধবার (২৩ জুলাই) বেলা পৌনে ৩টায় সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ করেছেন অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ক্ষমতায় না থাকলে সবাই দেশ প্রেমিক, আর ক্ষমতায় গেলে সবাই…! দেখি শূন্যস্থানটা আপনারাই পূরণ করেন।’
ওই রহস্যময় পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে ভক্তদের নানা জল্পনা। তবে ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে নিজের স্ট্যাটাসের রহস্য উন্মোচন করেছেন অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। পোস্টে থাকে শূন্যস্থান নিজেই পূরণ করে লিখেছেন, “ক্ষমতায় না থাকলে সবাই দেশ প্রেমিক আর ক্ষমতায় গেলে সব ‘পোস্ট ডিলিট করেন সমস্যা হবে।” পোস্টের সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন একটি হা হা রিয়্যাক্ট।
বলে রাখা ভালো, বিমান দুর্ঘটনার সময় কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ ও আগুনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, কেউ শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। সবশেষ খবর অনুযায়ী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ এবং চিকিৎসাধীন শতাধিক।
পোস্ট শেয়ার করে মুছে ফেললেন তিশা
২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের সংখ্যার সঠিক তথ্য দিচ্ছে না সরকার, এমন অভিযোগে সরগরম নেটদুনিয়া। এরই মধ্যে লাশের সংখ্যা নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা আরও দীর্ঘ করলেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস। দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেছেন লাশের সংখ্যা গোপন করার তথ্যটি ভুল।
মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকার পোস্টটি নিজের ফেসবুকে ভাগ করে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শোবিজ তারকারা। ওই পোস্টটি নিজের ফেসবুকে ভাগ করে নেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। মুহূর্তে তা সমালোচনার জন্ম দেয়। হা-হা রিয়্যাক্ট আর নেটিজেনদের কড়া সমালোচনার আসতে থাকে মন্তব্য ঘরে। নেটাগরিকদের তোপের মুখে পূর্ণিমা দাস পোস্টটি অভিনেত্রীর টাইমলাইনে করার এক ঘণ্টা পর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভুল তথ্য ছড়াবেন না।’ লাশ নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন সেই শিক্ষিকা। সেই পোস্ট শেয়ার করেছেন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও।
মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাসের পোস্ট নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্যের জেরে সামাজিকমাধ্যমে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
পলিটিশিয়ানরা অনেকেই শেয়ার করছে: সাদিয়া আয়মান
সমসাময়িক ইস্যুতে সামাজিক মাধ্যমে সরব থাকেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিয়েও গলা চড়িয়েছিলেন। সোমবার (২১ জুলাই) বিমান বিধ্বস্তের পর থেকে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
কারো কারো দাবি, শিক্ষার্থীদের লাশ গুম করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষক পূর্ণিমা দাস। দীর্ঘ স্ট্যাটাসে দাবি করেছেন লাশের সংখ্যা গোপন করার তথ্যটি ভুল। নেটিজেনদের উদ্দেশে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতেও অনুরোধ করেন। শিক্ষক পূর্ণিমার পোস্ট দেখে অনেকেই যখন আশ্বস্ত তখন প্রশ্ন তুললেন সাদিয়া আয়মান। নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সাফ জানালেন, পূর্ণিমার স্ট্যাটাসে তিনি বিরক্ত।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পূর্ণিমা দাসের পোস্টের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে বুধবার সাদিয়া আয়মান লিখেছেন, উক্ত ‘পূর্ণিমা দাস’-এর স্ট্যাটসটি আমাকে খুব ‘ইড়ঃযবৎ’ করছেৎ। কেন করছে, সেটা নিচে বলছি…।
যেখানে স্কুলের হেড পিয়ন নিজেই বলেছে, স্কুল ছুটি হয় ১.৩০ এ, এমনকি অনেক স্টুডেন্ট ও একই কথা বলেছে। প্লেন ক্র্যাশের সময় ক্লাস চলছিল, ১০ মিনিট পর ছুটি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। স্কুলের এতগুলো শিক্ষার্থী, পিয়ন যেখানে বলেছে ১.৩০ এ স্কুল ছুটি হওয়ার কথা ছিল সেখানে ২ দিন পর এসে আপনি একা ‘১ টা’য় স্কুল ছুটি হয়ে গেছে বললে তো এটা আমাদের নড়ঃযবৎ করবেই ! আপনি লিখেছেন ‘ংশু’ সেকশনে একটা বাচ্চা দাঁড়ানো ছিল! সিরিয়াসলি? জুনায়েত থেকে শুরু করে রাইসা মনিসহ অনেক বাচ্চা মারা গেছে যারা স্কাই সেকশনে ছিল। ক্লাসের মধ্যে এতোগুলো বই-খাতা, স্কুলব্যাগ কোত্থেকে আসলো? নিশ্চয়ই বলবেন না ‘স্টুডেন্টরা ক্লাসে বই খাতা ব্যাগ রেখে বাসায় চলে যায়, এটাই আপনাদের নিয়ম।’
ম্যাডাম, আপনার একার কথার সাথে, এতোগুলো নিরীহ শিক্ষার্থী এবং প্রত্যক্ষ দর্শীদের কথার কোনো মিল নেই। এতগুলো স্বনামধন্য নিউজপেপার- যারা সত্যতা যাচাই-বাছাই না করে নিউজ করে না, তারাও কালকে অব্দি দিয়েছে ২২ জনের নিহতের খবর, কাল রাত থেকে আজ পর্যন্ত চিকিৎসারত আরও কয়েকজন ইন্তেকাল করেছে।
আপনার ভাষ্য মতে, ‘স্কাই সেকশনে থাকা একজন, আর কিছু স্টুডেন্ট ক্লাউড সেকশনে থাকা এবং ৩ জন শিক্ষিকা আগুনে পুড়েছে’- সেই কিছুর সংখ্যা ৩০+? সেটাকে ‘কিছু’ বলে না ।
কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য কিংবা যৌক্তিক কোনোটাই লাগছে না আপনার এই ক্লারিফিকেশনে। আর এখনও অনেক পরিবার তাদের সন্তান কিংবা অভিভাবক (যারা বাচ্চা আনতে গিয়েছিল) তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না, সেগুলোর হদিস কে দেবে? লাশ পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া আপনার বা স্কুলের দায়িত্ব না, এটা যাদের দায়িত্ব তাদের কর্মকাণ্ডই বেশ সন্দিহান। গতকাল ইধহমষধফবংয অরৎ ঋড়ৎপব-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে রাতে যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে তারপর আর সাধারণ জনগণের অথবা ভুক্তভুগীদের আর ভালো কিছু ‘আশা’ না করাই ভালো।
জানি না, আপনি কেন পুরো দুনিয়ার বিরুদ্ধে একটা স্ট্যাটাস লিখলেন; যা পলিটিশিয়ানরা অনেকেই শেয়ার করছে। তাই ব্যাপারটা আরো চোখে লাগল আর কী! ধন্যবাদ।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ